তরঙ্গ নিলামে জিপি-রবির যুদ্ধ

বেলা দুইটার দিকে সরে আসে টেলিটক ও বাংলালিংক

তরঙ্গ নিলামে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে গ্রামীনফোন ও রবি। ১৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের সব ব্লক এবং ২১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের তিনটি ব্লক বিক্রি হয়ে গেলেও একই মেগাহার্টজে শেষ একটি ব্লকের নিলাম নিয়ে মাঠে রয়েছে গ্রামীণফোন ও রবি। ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ৫ মেগাহার্টজ ব্লকের নিলামে দর উঠছেই। গতকাল দুপুরে দেড়টা থেকে এ ব্লকের নিলামে দর বাড়ছিল। হাল ছাড়ছে না রবি ও গ্রামীণফোন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিলাম চলছিল।

ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গতকাল বেলা ১১টায় নিলামের শুরুতে ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ৭ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ মোট পাঁচটি ব্লকে নিলাম প্রক্রিয়া হয়। এরমধ্যে দুটি ব্লক দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গের এবং দুটি ব্লক ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজ তরঙ্গের। প্রতিটি ব্লকের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩১ মিলিয়ন ডলার। এ ব্লকের নিলাম প্রক্রিয়ার শুরুতেই ডাক থেকে সরে আসে বাংলালিংক, পরে বেলা ৪টার দিকে টেলিটকও সরে আসে। নিলামে অংশ নিলেও কোন তরঙ্গ নেয়নি রাষ্ট্রায়াত্ত অপারেটর টেলিটক। এর মধ্যে ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজ তরঙ্গের দুটি ব্লক নিয়ে মোট ৪ দশমিক ৪ মেহাহার্টজ তরঙ্গ নেয় বাংলালিংক। রবি ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজের একটি এবং দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ এর একটি নিয়ে মোট ২ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নেয়। আর গ্রামীণফোন নেয় একটি ব্লকে দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ।

নিলামে ভিত্তিমূল্যর ওপর কোন দাম না ওঠায় সেই দামেই অপারেটররা তরঙ্গ পেয়ে যায়। মোটামুটি এক ঘণ্টার মধ্যে প্রথম ধাপের নিলাম শেষ হয়। তাতে ৭ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি করে সরকারের আয় হয় ২২৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। এরপর ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ২০ মেগাহার্টজ ব্যবহারযোগ্য তরঙ্গ ৫ মেগাহার্টজ করে মোট চারটি ব্লকে বিক্রির জন্য নিলাম শুরু হয় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে।

প্রতিটি ব্লকের ভিত্তিমূল্য ছিল ২৭ মিলিয়ন ডলার। বেলা দেড়টার দিকে প্রথম ব্লকে টেলিটক বাদে বাকি তিন অপারেটর ২৭ মিলিয়ন ডলার থেকে ডাক শুরু করে।

টেলিটক সরে যাওয়ার পর ২৯ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত দরে থাকে তিন কোম্পানি। এরপর কেউ আর ডাক না বাড়ালে নিয়ম অনুসারে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক ৫ মেগাগার্টজ করে তরঙ্গ পায়। ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ সেখানে বিক্রি হয়ে যায়। ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বাকি একটি ব্লকের নিলামে ২৭ মিলিয়ন ডলার থেকে ডাক শুরু হলে প্রথমেই বাংলালিংক নিলাম থেকে সরে আসে। এর পর প্রতি ডাকে দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার করে দর বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে ৩০ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে থামার পর পৌনে ৩টায় দুপুরের খাবারের বিরতি দেয়া হয়।

পৌনে ৪টার দিকে আবার নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হলে ৩০ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার থেকে দাম হাঁকা শুরু হয়। ৩০ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলারে দাম উঠলে ১৬তম রাউন্ডে সরে দাঁড়ায় টেলিটক। বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই ব্লকের ফয়সালা হয়নি, দেশের দুই শীর্ষ অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি তখনও ডাক চালিয়ে যাচ্ছিল। তখন ৩০ নম্বর রাউন্ডে ৩৪ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলারের ডাক চলে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ নিলামে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারসহ অপারেটরদের নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিলামে চারটি টেবিলের মধ্যে ১ নম্বর টেবিলে রাষ্ট্রায়াত্ত অপারেটর টেলিটক, ২ নম্বর টেবিলে বাংলালিংক, ৩ নম্বরে গ্রামীণফোন এবং ৪ নম্বর টেবিলে অপারেটর রবি রয়েছে। বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম নিলাম পরিচালনা করেছেন।

মঙ্গলবার, ০৯ মার্চ ২০২১ , ২৪ ফাল্গুন ১৪২৭ ২৪ রজব ১৪৪২

তরঙ্গ নিলামে জিপি-রবির যুদ্ধ

বেলা দুইটার দিকে সরে আসে টেলিটক ও বাংলালিংক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

তরঙ্গ নিলামে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে গ্রামীনফোন ও রবি। ১৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের সব ব্লক এবং ২১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের তিনটি ব্লক বিক্রি হয়ে গেলেও একই মেগাহার্টজে শেষ একটি ব্লকের নিলাম নিয়ে মাঠে রয়েছে গ্রামীণফোন ও রবি। ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ৫ মেগাহার্টজ ব্লকের নিলামে দর উঠছেই। গতকাল দুপুরে দেড়টা থেকে এ ব্লকের নিলামে দর বাড়ছিল। হাল ছাড়ছে না রবি ও গ্রামীণফোন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিলাম চলছিল।

ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গতকাল বেলা ১১টায় নিলামের শুরুতে ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের ৭ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ মোট পাঁচটি ব্লকে নিলাম প্রক্রিয়া হয়। এরমধ্যে দুটি ব্লক দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গের এবং দুটি ব্লক ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজ তরঙ্গের। প্রতিটি ব্লকের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩১ মিলিয়ন ডলার। এ ব্লকের নিলাম প্রক্রিয়ার শুরুতেই ডাক থেকে সরে আসে বাংলালিংক, পরে বেলা ৪টার দিকে টেলিটকও সরে আসে। নিলামে অংশ নিলেও কোন তরঙ্গ নেয়নি রাষ্ট্রায়াত্ত অপারেটর টেলিটক। এর মধ্যে ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজ তরঙ্গের দুটি ব্লক নিয়ে মোট ৪ দশমিক ৪ মেহাহার্টজ তরঙ্গ নেয় বাংলালিংক। রবি ২ দশমিক ২ মেগাহার্টজের একটি এবং দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ এর একটি নিয়ে মোট ২ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নেয়। আর গ্রামীণফোন নেয় একটি ব্লকে দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ।

নিলামে ভিত্তিমূল্যর ওপর কোন দাম না ওঠায় সেই দামেই অপারেটররা তরঙ্গ পেয়ে যায়। মোটামুটি এক ঘণ্টার মধ্যে প্রথম ধাপের নিলাম শেষ হয়। তাতে ৭ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি করে সরকারের আয় হয় ২২৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। এরপর ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ২০ মেগাহার্টজ ব্যবহারযোগ্য তরঙ্গ ৫ মেগাহার্টজ করে মোট চারটি ব্লকে বিক্রির জন্য নিলাম শুরু হয় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে।

প্রতিটি ব্লকের ভিত্তিমূল্য ছিল ২৭ মিলিয়ন ডলার। বেলা দেড়টার দিকে প্রথম ব্লকে টেলিটক বাদে বাকি তিন অপারেটর ২৭ মিলিয়ন ডলার থেকে ডাক শুরু করে।

টেলিটক সরে যাওয়ার পর ২৯ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত দরে থাকে তিন কোম্পানি। এরপর কেউ আর ডাক না বাড়ালে নিয়ম অনুসারে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক ৫ মেগাগার্টজ করে তরঙ্গ পায়। ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ সেখানে বিক্রি হয়ে যায়। ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বাকি একটি ব্লকের নিলামে ২৭ মিলিয়ন ডলার থেকে ডাক শুরু হলে প্রথমেই বাংলালিংক নিলাম থেকে সরে আসে। এর পর প্রতি ডাকে দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার করে দর বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে ৩০ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে থামার পর পৌনে ৩টায় দুপুরের খাবারের বিরতি দেয়া হয়।

পৌনে ৪টার দিকে আবার নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হলে ৩০ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার থেকে দাম হাঁকা শুরু হয়। ৩০ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলারে দাম উঠলে ১৬তম রাউন্ডে সরে দাঁড়ায় টেলিটক। বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই ব্লকের ফয়সালা হয়নি, দেশের দুই শীর্ষ অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি তখনও ডাক চালিয়ে যাচ্ছিল। তখন ৩০ নম্বর রাউন্ডে ৩৪ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলারের ডাক চলে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ নিলামে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারসহ অপারেটরদের নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিলামে চারটি টেবিলের মধ্যে ১ নম্বর টেবিলে রাষ্ট্রায়াত্ত অপারেটর টেলিটক, ২ নম্বর টেবিলে বাংলালিংক, ৩ নম্বরে গ্রামীণফোন এবং ৪ নম্বর টেবিলে অপারেটর রবি রয়েছে। বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম নিলাম পরিচালনা করেছেন।