চীনের কয়লার বাজার ধরতে মরিয়া রাশিয়া

অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অঙ্কের কয়লা আমদানি করে চীন। কিন্তু সম্প্রতি এই দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক খুব খারাপ যাচ্ছে। তাই চীন সরকার অস্ট্রেলিয়ার কয়লা আমদানিতে শুল্কারোপ করেছে। আর আর যেহেতু চীন সরকার অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানিতে আগ্রহী নয় তাই এই সুযোগে রাশিয়া সেখানে ঢুকে পড়তে চাচ্ছে। গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন জানান, আগামী তিন বছরে এশিয়ায় কয়লা রপ্তানি অন্তত ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তার সরকারের। এজন্য রাশিয়ার প্রধান খনি সম্পদপূর্ণ অঞ্চল কুজবাসে রেলপথ সম্প্রসারণে অর্থায়ন অনুমোদন করেছেন পুতিন। তাই চীনের বাজারে কয়লা রপ্তানি করে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই রুশ সরকার। আরটি।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চীনের ভূমিকার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবির পক্ষে গত বছরের শেষের দিকে সমর্থন ব্যক্ত করে অস্ট্রেলিয়া। ক্যানবেরার এ সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেয়নি তাদের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার চীন। ম্যানুফ্যাকচারিং ও শিল্পোৎপাদন চাঙ্গায় চীনের বাজারে কয়লার চাহিদা বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কয়লার প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ায় সেখানে সুযোগের সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করছে রাশিয়া ও অন্যান্য কয়লা রপ্তানিকারক দেশ। হংকংভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে মাদিনা খ্রুস্টালেভা নামে এক বিশ্লেষক বলেন, চীনে অস্ট্রেলিয়ার কয়লা আমদানি সংকুচিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে অন্তত আংশিক চাহিদা পূরণ করতে পারে রাশিয়ার কয়লা।

২০১৪ সালের পর থেকেই রাশিয়া ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ছে রাশিয়া ও চীনের। বর্তমানে রাশিয়ার প্রধান বাণিজ্য অংশীদার হয়ে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার শীর্ষ অর্থনীতিটি। ন্যাটিক্সিসের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় মুখ্য অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো জানান, কয়লার বাজারে অস্ট্রেলিয়ার জায়গা দখলে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। তেলের দাম বৃদ্ধিও এক্ষেত্রে মস্কোর পক্ষে যাচ্ছে। গত বছরজুড়ে অস্ট্রেলিয়া-চীনের রাজনৈতিক বিরোধ অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। অস্ট্রেলিয়ার বেশকিছু পণ্যে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে চীন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়াইন, চিংড়ি, মাংস, যব, কাঠ ও কয়লা। চীনের অ্যালুমিনিয়াম, কাগড় ও ইস্পাতে শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে পাল্টা জবাব দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

খ্রুস্টালেভা জানান, দেশটির প্রধান রেলপথ বৈকাল-আমুর ও ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে রাশিয়া। কয়লা বাণিজ্য চাঙ্গায় বেশ কয়েকটি চীনা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে রাশিয়ার কয়লা কোম্পানিগুলো। গত ডিসেম্বরে এলগা কয়লা প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয় চীনের ফুজিয়ান গিউহাং ওশান শিপিং গ্রুপ ও রাশিয়ান ফার ইস্ট। এলগা প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সাল নাগাদ চীনে তিন কোটি টন কয়লা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে। এতে চীনে রাশিয়ার কয়লা রপ্তানি দ্বিগুণ বাড়বে।

রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১ , ২৯ ফাল্গুন ১৪২৭ ২৯ রজব ১৪৪২

চীনের কয়লার বাজার ধরতে মরিয়া রাশিয়া

সংবাদ ডেস্ক

image

অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অঙ্কের কয়লা আমদানি করে চীন। কিন্তু সম্প্রতি এই দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক খুব খারাপ যাচ্ছে। তাই চীন সরকার অস্ট্রেলিয়ার কয়লা আমদানিতে শুল্কারোপ করেছে। আর আর যেহেতু চীন সরকার অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানিতে আগ্রহী নয় তাই এই সুযোগে রাশিয়া সেখানে ঢুকে পড়তে চাচ্ছে। গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন জানান, আগামী তিন বছরে এশিয়ায় কয়লা রপ্তানি অন্তত ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তার সরকারের। এজন্য রাশিয়ার প্রধান খনি সম্পদপূর্ণ অঞ্চল কুজবাসে রেলপথ সম্প্রসারণে অর্থায়ন অনুমোদন করেছেন পুতিন। তাই চীনের বাজারে কয়লা রপ্তানি করে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই রুশ সরকার। আরটি।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চীনের ভূমিকার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবির পক্ষে গত বছরের শেষের দিকে সমর্থন ব্যক্ত করে অস্ট্রেলিয়া। ক্যানবেরার এ সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেয়নি তাদের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার চীন। ম্যানুফ্যাকচারিং ও শিল্পোৎপাদন চাঙ্গায় চীনের বাজারে কয়লার চাহিদা বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কয়লার প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ায় সেখানে সুযোগের সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করছে রাশিয়া ও অন্যান্য কয়লা রপ্তানিকারক দেশ। হংকংভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে মাদিনা খ্রুস্টালেভা নামে এক বিশ্লেষক বলেন, চীনে অস্ট্রেলিয়ার কয়লা আমদানি সংকুচিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে অন্তত আংশিক চাহিদা পূরণ করতে পারে রাশিয়ার কয়লা।

২০১৪ সালের পর থেকেই রাশিয়া ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ছে রাশিয়া ও চীনের। বর্তমানে রাশিয়ার প্রধান বাণিজ্য অংশীদার হয়ে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার শীর্ষ অর্থনীতিটি। ন্যাটিক্সিসের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় মুখ্য অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো জানান, কয়লার বাজারে অস্ট্রেলিয়ার জায়গা দখলে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। তেলের দাম বৃদ্ধিও এক্ষেত্রে মস্কোর পক্ষে যাচ্ছে। গত বছরজুড়ে অস্ট্রেলিয়া-চীনের রাজনৈতিক বিরোধ অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। অস্ট্রেলিয়ার বেশকিছু পণ্যে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে চীন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়াইন, চিংড়ি, মাংস, যব, কাঠ ও কয়লা। চীনের অ্যালুমিনিয়াম, কাগড় ও ইস্পাতে শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে পাল্টা জবাব দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

খ্রুস্টালেভা জানান, দেশটির প্রধান রেলপথ বৈকাল-আমুর ও ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে রাশিয়া। কয়লা বাণিজ্য চাঙ্গায় বেশ কয়েকটি চীনা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে রাশিয়ার কয়লা কোম্পানিগুলো। গত ডিসেম্বরে এলগা কয়লা প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয় চীনের ফুজিয়ান গিউহাং ওশান শিপিং গ্রুপ ও রাশিয়ান ফার ইস্ট। এলগা প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সাল নাগাদ চীনে তিন কোটি টন কয়লা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে। এতে চীনে রাশিয়ার কয়লা রপ্তানি দ্বিগুণ বাড়বে।