‘শেফরা প্রশিক্ষিত হলে পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হবে’

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ শেফ তৈরি হলে তা একদিকে যেমন পর্যটন শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রাখবে তেমনি বৈদেশিক আয় ও জিডিপি’তেও অবদান রাখবে বলে মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বানসিধর মিশরা। গতকাল নেপাল দূতাবাসে অনুষ্ঠিত ‘ডিপ্লোমা ইন গ্লোবাল কালিনারি আর্টস’ সম্পন্নকারী শেফদের সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘স্কটিশ কোয়ালিফিকেশনস অথোরিটি (এসকিউএ)’ এবং এলসিসিআই জিকিউ নেপাল-এর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ‘ইন্টারন্যাশনাল কালিনারি ইনস্টিটিউট’ এক বছর মেয়াদি এ কোর্সটির আয়োজন করে।

ড. মিশরা বলেন, ‘বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যটনের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পর্যটনের পরিধিও দিন দিন বাড়ছে। পর্যটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ হচ্ছে খাদ্য। একেক দেশের মানুষের রুচি ও চাহিদা একেক রকম। বিদেশে বেড়াতে এসে পর্যটকরা ভিন্ন স্বাদের খাবার যেমন খোঁজেন, তেমনি নিজ দেশের খাবারও পেতে চান। সে চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের ইনস্টিটিউট, যারা বৈশ্বিক পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিকসম্পন্ন রন্ধনশিল্পী তৈরি করছেন।’

এলসিসিআই-নেপাল এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ড. রোশন রাথি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনিতির অন্যতম উৎস হচ্ছে রেমিট্যান্স। দেশের বাইরে বিভিন্ন স্বনামধন্য হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কাজ করে এই রেমিট্যান্সের একটা বড় অংশে অবদান রাখছেন বাংলাদেশের শেফরা। বাংলাদেশের প্রথম মাস্টারশেফ এবং আইসিআই-এর প্রতিষ্ঠাতা ড্যানিয়েল সি গমেজ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের কালিনারি ইন্ডাস্ট্রিকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করছেন তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে বড় বড় হোটেল-রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। ইন্টারন্যাশনাল পাঁচতারকা চেইন হোটেলের অনেকগুলোই এখন বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করেছে। ফলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শেফদের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কোভিড মহামারীর প্রকোপ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ চাহিদা বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান এ চাহিদা মেটাতেই স্টকল্যান্ড ও নেপালের দুটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কালিনারি ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স চালু করেছে আইসিআই। ঢাকার পর সম্প্রতি চট্টগ্রামেও একটি শাখা উদ্বোধন করা হয়েছে।’

আইসিআই এর ‘ট্রেইনিং ডিরেক্টর’ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদনে কোর্সটি পরিচালিত হচ্ছে। প্রতি বছর ২টি ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এখানে ইংলিশ ফর কালিনারি আর্টস, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন অ্যান্ড প্রিপারেশন, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিস, বেকারি ও পেস্ট্রি, ফুড কার্ভিং ও আইস কার্ভিং, ইত্যাদি বিষয়ে পাঠদান ও হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া হয়।’

এ বছর কোর্স সম্পন্নকারী মোট ১৭ জন গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বানসিধর মিশরা। ২২ জন নতুন শিক্ষার্থীকে ওয়েলকাম লেটার প্রদান করা হয়। অতিথি ও কোর্স টিচারদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১ , ৩০ ফাল্গুন ১৪২৭ ৩০ রজব ১৪৪২

‘শেফরা প্রশিক্ষিত হলে পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হবে’

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ শেফ তৈরি হলে তা একদিকে যেমন পর্যটন শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রাখবে তেমনি বৈদেশিক আয় ও জিডিপি’তেও অবদান রাখবে বলে মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বানসিধর মিশরা। গতকাল নেপাল দূতাবাসে অনুষ্ঠিত ‘ডিপ্লোমা ইন গ্লোবাল কালিনারি আর্টস’ সম্পন্নকারী শেফদের সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘স্কটিশ কোয়ালিফিকেশনস অথোরিটি (এসকিউএ)’ এবং এলসিসিআই জিকিউ নেপাল-এর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ‘ইন্টারন্যাশনাল কালিনারি ইনস্টিটিউট’ এক বছর মেয়াদি এ কোর্সটির আয়োজন করে।

ড. মিশরা বলেন, ‘বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যটনের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পর্যটনের পরিধিও দিন দিন বাড়ছে। পর্যটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ হচ্ছে খাদ্য। একেক দেশের মানুষের রুচি ও চাহিদা একেক রকম। বিদেশে বেড়াতে এসে পর্যটকরা ভিন্ন স্বাদের খাবার যেমন খোঁজেন, তেমনি নিজ দেশের খাবারও পেতে চান। সে চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের ইনস্টিটিউট, যারা বৈশ্বিক পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিকসম্পন্ন রন্ধনশিল্পী তৈরি করছেন।’

এলসিসিআই-নেপাল এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ড. রোশন রাথি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনিতির অন্যতম উৎস হচ্ছে রেমিট্যান্স। দেশের বাইরে বিভিন্ন স্বনামধন্য হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কাজ করে এই রেমিট্যান্সের একটা বড় অংশে অবদান রাখছেন বাংলাদেশের শেফরা। বাংলাদেশের প্রথম মাস্টারশেফ এবং আইসিআই-এর প্রতিষ্ঠাতা ড্যানিয়েল সি গমেজ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের কালিনারি ইন্ডাস্ট্রিকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করছেন তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে বড় বড় হোটেল-রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। ইন্টারন্যাশনাল পাঁচতারকা চেইন হোটেলের অনেকগুলোই এখন বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করেছে। ফলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শেফদের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কোভিড মহামারীর প্রকোপ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ চাহিদা বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান এ চাহিদা মেটাতেই স্টকল্যান্ড ও নেপালের দুটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কালিনারি ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স চালু করেছে আইসিআই। ঢাকার পর সম্প্রতি চট্টগ্রামেও একটি শাখা উদ্বোধন করা হয়েছে।’

আইসিআই এর ‘ট্রেইনিং ডিরেক্টর’ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদনে কোর্সটি পরিচালিত হচ্ছে। প্রতি বছর ২টি ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এখানে ইংলিশ ফর কালিনারি আর্টস, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন অ্যান্ড প্রিপারেশন, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিস, বেকারি ও পেস্ট্রি, ফুড কার্ভিং ও আইস কার্ভিং, ইত্যাদি বিষয়ে পাঠদান ও হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া হয়।’

এ বছর কোর্স সম্পন্নকারী মোট ১৭ জন গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বানসিধর মিশরা। ২২ জন নতুন শিক্ষার্থীকে ওয়েলকাম লেটার প্রদান করা হয়। অতিথি ও কোর্স টিচারদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।