শেয়ারবাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগ আনতে চায় বিএসইসি

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রবাসীরা অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠায়। তাদের কারণে বাংলাদেশে এখন রেকর্ড রিজার্ভ জমা হয়েছে। এই ভূমিকার কারণে তাদের সম্মান অনেক উপরে। আমরা চাই তাদের পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ যেনো দেশে বসে না থাকে। সেটাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই এবং সেখান থেকে তাদেরকে মুনাফা অর্জনে সহযোগিতা করতে চাই।’

গতকাল বিকেলে প্রবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) বিনিয়োগকারীদের নিয়ে ডিজিটাল প্ল্যার্টফর্মে বিএসইসি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গণশুনানিতে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এনআরবিদের আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যে এই গণশুনানি আয়োজন করা হয়।

শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারবাজারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সকে কিভাবে সংযুক্তি করা যায়, তা নিয়ে কমিশন কাজ করছে। এজন্য কমিশন প্রবাসীদের বিনিয়োগকে সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ে কাজ করছে। এরইমধ্যে প্রবাসীদের জন্য নিটার মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে আগের ২৩০০ টাকার ব্যয় ৫৭৫ টাকায় নেমে এসেছে।’

এছাড়া প্রবাসীদেরকে সহযোগিতার জন্য কমিশন অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান বিএসইসির এই কমিশনার। তিনি বলেন, ‘বিও হিসাব খোলা সহজীকরণ করার লক্ষ্যে ডিজিটাল বিও চালু করা হয়েছে। এখন পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে বিও হিসাব খোলা যাবে। এছাড়া বিদেশে লেনদেন করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল বুথ চালু করা হয়েছে। গতমাসে দুবাইয়ে একটি ডিজিটাল বুথ খোলার মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু হয়েছে। ক্রমান্বয়ে অনেক দেশেই এই বুথ চালু করা হবে। শেয়ারবাজার এখন অনেক উন্নত। এটাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কমিশন কাজ করছে।’ এই বাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগকে সাধুবাদ ও আমন্ত্রণ জানান তিনি।

গণশুনানিতে সমাপনী বক্তব্যে বিএসইসির আরেক কমিশনার মো. আবদুল হালিম বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা তৃতীয়বার গণশুনানির আয়োজন করলাম। আপনারা দেখেছেন এর আগের শুনানির পরামর্শ কমিশন বিবেচনায় নিয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। আমরা বিনিয়োগকারীদের সমস্যা জানতে চাই এবং সে লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। যে কারণে বর্তমান কমিশন গণশুনানি চালু করেছে। আগে আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া জটিল ছিল। এটা সহজ করার জন্যই আজ বসেছি। আমরা বিনিয়োগকারীদেরকে একটি ভালো পরিবেশ দিতে চাই। যাতে করে বিনিয়োগকারীরা যে যেখানেই থাকুক না কেন, সে যেন নিজের মতো করে লেনদেন করতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘কমিশন শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে আইপিও আবেদন থেকে লেনদেন শুরু হওয়া পর্যন্ত সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য কাজ করা হচ্ছে। প্রতিটি আইপিওতে প্রবাসীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট কোটা রাখা হয়েছে। এটা জন্য প্রবাসীরাই পায়, কমিশন সে লক্ষ্যে কাজ করছে। আর তাদের এই কোটার শেয়ার পাওয়া সহজীকরণ করার লক্ষ্যে আজ গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে। এখান থেকে সহজীকরণের পরামর্শগুলো নিয়ে পরবর্তীতে কমিশনে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এখন আইপিও আবেদনে প্রবাসীদের অনেক খরচ করতে হয় বলে জানান রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘আইপিওতে প্রায় ৮০ হাজার প্রবাসী আবেদন করে থাকেন যা লটারির মাধ্যমে শেয়ার বরাদ্দ ও রিফান্ড করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে বর্তমান পদ্ধতিতে প্রায় ২ মাস সময় লেগে যায়। আগামীতে দেশি বিনিয়োগকারীদের রিফান্ড প্রাপ্তির দিনেই প্রবাসীরাও যেন পায়, তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’

এ গণশুনানিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মতিন পাটোয়ারি, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন এবং ডিএসইর লিস্টিং অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলাম।

মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ ২০২১ , ১ ফাল্গুন ১৪২৭ ১ রজব ১৪৪২

শেয়ারবাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগ আনতে চায় বিএসইসি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রবাসীরা অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠায়। তাদের কারণে বাংলাদেশে এখন রেকর্ড রিজার্ভ জমা হয়েছে। এই ভূমিকার কারণে তাদের সম্মান অনেক উপরে। আমরা চাই তাদের পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ যেনো দেশে বসে না থাকে। সেটাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই এবং সেখান থেকে তাদেরকে মুনাফা অর্জনে সহযোগিতা করতে চাই।’

গতকাল বিকেলে প্রবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) বিনিয়োগকারীদের নিয়ে ডিজিটাল প্ল্যার্টফর্মে বিএসইসি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গণশুনানিতে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এনআরবিদের আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যে এই গণশুনানি আয়োজন করা হয়।

শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারবাজারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সকে কিভাবে সংযুক্তি করা যায়, তা নিয়ে কমিশন কাজ করছে। এজন্য কমিশন প্রবাসীদের বিনিয়োগকে সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ে কাজ করছে। এরইমধ্যে প্রবাসীদের জন্য নিটার মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে আগের ২৩০০ টাকার ব্যয় ৫৭৫ টাকায় নেমে এসেছে।’

এছাড়া প্রবাসীদেরকে সহযোগিতার জন্য কমিশন অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান বিএসইসির এই কমিশনার। তিনি বলেন, ‘বিও হিসাব খোলা সহজীকরণ করার লক্ষ্যে ডিজিটাল বিও চালু করা হয়েছে। এখন পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে বিও হিসাব খোলা যাবে। এছাড়া বিদেশে লেনদেন করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল বুথ চালু করা হয়েছে। গতমাসে দুবাইয়ে একটি ডিজিটাল বুথ খোলার মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু হয়েছে। ক্রমান্বয়ে অনেক দেশেই এই বুথ চালু করা হবে। শেয়ারবাজার এখন অনেক উন্নত। এটাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কমিশন কাজ করছে।’ এই বাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগকে সাধুবাদ ও আমন্ত্রণ জানান তিনি।

গণশুনানিতে সমাপনী বক্তব্যে বিএসইসির আরেক কমিশনার মো. আবদুল হালিম বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা তৃতীয়বার গণশুনানির আয়োজন করলাম। আপনারা দেখেছেন এর আগের শুনানির পরামর্শ কমিশন বিবেচনায় নিয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। আমরা বিনিয়োগকারীদের সমস্যা জানতে চাই এবং সে লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। যে কারণে বর্তমান কমিশন গণশুনানি চালু করেছে। আগে আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া জটিল ছিল। এটা সহজ করার জন্যই আজ বসেছি। আমরা বিনিয়োগকারীদেরকে একটি ভালো পরিবেশ দিতে চাই। যাতে করে বিনিয়োগকারীরা যে যেখানেই থাকুক না কেন, সে যেন নিজের মতো করে লেনদেন করতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘কমিশন শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে আইপিও আবেদন থেকে লেনদেন শুরু হওয়া পর্যন্ত সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য কাজ করা হচ্ছে। প্রতিটি আইপিওতে প্রবাসীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট কোটা রাখা হয়েছে। এটা জন্য প্রবাসীরাই পায়, কমিশন সে লক্ষ্যে কাজ করছে। আর তাদের এই কোটার শেয়ার পাওয়া সহজীকরণ করার লক্ষ্যে আজ গণশুনানির আয়োজন করা হয়েছে। এখান থেকে সহজীকরণের পরামর্শগুলো নিয়ে পরবর্তীতে কমিশনে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এখন আইপিও আবেদনে প্রবাসীদের অনেক খরচ করতে হয় বলে জানান রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘আইপিওতে প্রায় ৮০ হাজার প্রবাসী আবেদন করে থাকেন যা লটারির মাধ্যমে শেয়ার বরাদ্দ ও রিফান্ড করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে বর্তমান পদ্ধতিতে প্রায় ২ মাস সময় লেগে যায়। আগামীতে দেশি বিনিয়োগকারীদের রিফান্ড প্রাপ্তির দিনেই প্রবাসীরাও যেন পায়, তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’

এ গণশুনানিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মতিন পাটোয়ারি, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন এবং ডিএসইর লিস্টিং অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলাম।