কম সুদে ঋণের ব্যবস্থাসহ সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহার ঘোষণা

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ও শিল্প পুনরুদ্ধারে প্রণোদনার অর্থ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো হবে। পোশাকশিল্পে ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ১৮ মাস থেকে বৃদ্ধি ও কিস্তির আকার ছোট করার জন্য সরকারকে প্রস্তাব করা হবে। সংকট প্রতিকারে স্বল্পমেয়াদি মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। শিল্পের ক্ষতিগুলো চিহ্নিত করে তা সামলে উঠা এবং শিল্পের পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকারের কাছে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি-সহায়তা প্রস্তাব করা হবে। এছাড়াও কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হবে। সম্প্রতি বিজিএমই নির্বাচন উপলক্ষে সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহারে এসব ঘোষণা করা হয়। ইস্তেহারে এসব বলা হয়। ইস্তেহার ঘোষণা করেন পরিষদের প্যানেল লিডার ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, ‘নতুন বাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হবে। নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানি জন্যে প্রণোদনা ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ উন্নীত করা হবে। বিভিন্ন রোড দেশ যেমন- দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, রাশিয়া ল্যাটিন আমেরিকা, ভারতসহ সম্ভাবনাময় নতুন বাজারগুলোতে রোড শো আয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ মেলাগুলোতে বিজিএমই সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় আমাদের পোশাকের শুল্কমুক্ত রপ্তানি নিশ্চয়তার জন্য কাজ করবে সম্মিলিত পরিষদ।’

ইশতেহারে বলা হয়, ‘বিজিএমইএ ও কাস্টমস বন্ডের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠন করে পোশাক খাতের নিয়মিত সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি কাস্টম সংক্রান্ত সব হয়রানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে সেল গঠন করা হবে। কাস্টমসের মান উন্নয়নে বিজিএমইএ’র একজন সহ-সভাপতি ও একজন পরিচালককে এই সেলের তত্ত্বাবধায়নে রাখা হবে। আমদানিকৃত পণ্য খালাসকালীন ও পরবর্তী অডিট কার্যক্রম চলাকালীন সৃষ্ট বিলম্বিত রপ্তানি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য কাস্টম সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আমদানি ও রপ্তানির অডিট কার্যক্রমে অটোমেশন চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে। স্যাম্পল ক্লিয়ারিং এর জটিলতা নিরসন পদ্ধতির ব্যবহার, এক্সপোর্ট প্রক্রিয়া সহজীকরণ, আমদানি ও রপ্তানির অটোমেশনসহ এইস এস কোর্ড হালনাগাদ উন্নতিকরণ করা হবে।’

এছাড়া সরকার অনুমোদিত লিকুইডেটর এজেন্ট নিয়োগের ব্যবস্থাকরণ। অর্থঋণ আদালতে মামলা নিষ্পত্তির সময়সীমা তিন মাসের মধ্যে নির্ধারণের ব্যবস্থাগ্রহণের উদ্যোগ নেয়া। সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআই, বিকেএমইএসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের সমন্বয়ে সফল আলোচনার মাধ্যমে একটি বাস্তবসম্মত কমিটি করে কাজ করা, মালিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয় ইশতেহারে।

ইশতেহারে ফারুক হাসান বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন কাজ করা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাৎসরিক রপ্তানির পরিমাণ সর্বনি¤œ পাঁচ মিলিয়ন ডলার থেকে উন্নীত করে ১০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা, যার মাধ্যমে অধিক প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। সরকারি ফাইন্যান্সিং স্কিমের আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাকশিল্পের উপযুক্ত সংজ্ঞায়ন ও অন্তর্ভুক্তকরণ যার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাকশিল্প ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদ হারে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।’ সুষ্ঠু ব্যাংকিং নীতিমালার মাধ্যমে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি পোশাকশিল্পের জন্য সুদের হার ও ব্যাংকিং চার্জ কমানোর ব্যাপারে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সহায়তা চাওয়া হবে।

ফারুক হাসান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে পোশাকের ইমেজ সংকট রয়েছে। ইমেজ বৃদ্ধি করাই হবে আসল কাজ। এছাড়া রপ্তানি কীভাবে বাড়ানো যায় অর্থাৎ মার্কেট শেয়ার বাড়ানোর বিষয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।’ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিষয়ে ফারুক হাসান বলেন, আমাদের রপ্তানি বাড়ানো গেলে এবং সরকারের সহায়তা বাড়ানো হলে ইনশাআল্লাহ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা কমে যাবে।

বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ ২০২১ , ৪ চৈত্র ১৪২৭ ৩ শাবান ১৪৪২

কম সুদে ঋণের ব্যবস্থাসহ সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহার ঘোষণা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ও শিল্প পুনরুদ্ধারে প্রণোদনার অর্থ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো হবে। পোশাকশিল্পে ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ১৮ মাস থেকে বৃদ্ধি ও কিস্তির আকার ছোট করার জন্য সরকারকে প্রস্তাব করা হবে। সংকট প্রতিকারে স্বল্পমেয়াদি মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। শিল্পের ক্ষতিগুলো চিহ্নিত করে তা সামলে উঠা এবং শিল্পের পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকারের কাছে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি-সহায়তা প্রস্তাব করা হবে। এছাড়াও কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হবে। সম্প্রতি বিজিএমই নির্বাচন উপলক্ষে সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহারে এসব ঘোষণা করা হয়। ইস্তেহারে এসব বলা হয়। ইস্তেহার ঘোষণা করেন পরিষদের প্যানেল লিডার ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, ‘নতুন বাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হবে। নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানি জন্যে প্রণোদনা ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ উন্নীত করা হবে। বিভিন্ন রোড দেশ যেমন- দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, রাশিয়া ল্যাটিন আমেরিকা, ভারতসহ সম্ভাবনাময় নতুন বাজারগুলোতে রোড শো আয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ মেলাগুলোতে বিজিএমই সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় আমাদের পোশাকের শুল্কমুক্ত রপ্তানি নিশ্চয়তার জন্য কাজ করবে সম্মিলিত পরিষদ।’

ইশতেহারে বলা হয়, ‘বিজিএমইএ ও কাস্টমস বন্ডের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠন করে পোশাক খাতের নিয়মিত সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি কাস্টম সংক্রান্ত সব হয়রানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে সেল গঠন করা হবে। কাস্টমসের মান উন্নয়নে বিজিএমইএ’র একজন সহ-সভাপতি ও একজন পরিচালককে এই সেলের তত্ত্বাবধায়নে রাখা হবে। আমদানিকৃত পণ্য খালাসকালীন ও পরবর্তী অডিট কার্যক্রম চলাকালীন সৃষ্ট বিলম্বিত রপ্তানি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য কাস্টম সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আমদানি ও রপ্তানির অডিট কার্যক্রমে অটোমেশন চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে। স্যাম্পল ক্লিয়ারিং এর জটিলতা নিরসন পদ্ধতির ব্যবহার, এক্সপোর্ট প্রক্রিয়া সহজীকরণ, আমদানি ও রপ্তানির অটোমেশনসহ এইস এস কোর্ড হালনাগাদ উন্নতিকরণ করা হবে।’

এছাড়া সরকার অনুমোদিত লিকুইডেটর এজেন্ট নিয়োগের ব্যবস্থাকরণ। অর্থঋণ আদালতে মামলা নিষ্পত্তির সময়সীমা তিন মাসের মধ্যে নির্ধারণের ব্যবস্থাগ্রহণের উদ্যোগ নেয়া। সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআই, বিকেএমইএসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের সমন্বয়ে সফল আলোচনার মাধ্যমে একটি বাস্তবসম্মত কমিটি করে কাজ করা, মালিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয় ইশতেহারে।

ইশতেহারে ফারুক হাসান বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন কাজ করা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাৎসরিক রপ্তানির পরিমাণ সর্বনি¤œ পাঁচ মিলিয়ন ডলার থেকে উন্নীত করে ১০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা, যার মাধ্যমে অধিক প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। সরকারি ফাইন্যান্সিং স্কিমের আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাকশিল্পের উপযুক্ত সংজ্ঞায়ন ও অন্তর্ভুক্তকরণ যার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাকশিল্প ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদ হারে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।’ সুষ্ঠু ব্যাংকিং নীতিমালার মাধ্যমে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি পোশাকশিল্পের জন্য সুদের হার ও ব্যাংকিং চার্জ কমানোর ব্যাপারে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সহায়তা চাওয়া হবে।

ফারুক হাসান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে পোশাকের ইমেজ সংকট রয়েছে। ইমেজ বৃদ্ধি করাই হবে আসল কাজ। এছাড়া রপ্তানি কীভাবে বাড়ানো যায় অর্থাৎ মার্কেট শেয়ার বাড়ানোর বিষয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।’ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিষয়ে ফারুক হাসান বলেন, আমাদের রপ্তানি বাড়ানো গেলে এবং সরকারের সহায়তা বাড়ানো হলে ইনশাআল্লাহ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা কমে যাবে।