ডিজিটালাইজেশনের জন্য ১৩৯০ কোটি টাকা চায় আইন বিভাগ

বিচারিক কার্যক্রমকে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে আদালতগুলোর ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচার বিভাগকে ডিজিটালাইজেশনের জন্য অনুমোদিত এবং অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য আগামী অর্থবছরে ১ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে আইন ও বিচার বিভাগ। সম্প্রতি আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এই অর্থ বরাদ্দ চেয়ে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদারকে চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা জাতিসংঘের উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় ভিশন ২০২১, লক্ষ্যমাত্রা ২০৪১, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এবং সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্দেশ্যের সামঞ্জস্য রয়েছে। বিচারিক কার্যক্রমকে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে আলাদলতগুলোর ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশনকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। এসব উন্নয়ন কর্মকা-ে বিভিন্ন সময়ে আপনার সহযোগিতা প্রাপ্তি আমাদের অগ্রগতিকে ইতিবাচক মূল্য সংযোজন করেছে।’

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আইন ও বিচার বিভাগের অধীনে বর্তমানে পাঁচটি বিনিয়োগ, একটি কারিগরি সহায়তা, একটি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প এ অর্থবছরে শেষ হবে। অন্য ছয়টি প্রকল্প সমাপ্তির সময় সীমা শেষ হলেও তা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এজন্য আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ (প্রথম পর্যায়) (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের জন্য ২৫০ কোটি টাকা, দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের জন্য ৭৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা, অধস্তন আদালত ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণে আইন ও বিচার বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের জন্য ৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ নতুন ১২তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২৪ কোটি টাকা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বর্তমান জায়গায় ১৫তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ‘স্ট্রেংদেনিং ক্যাপাসিটি অব জুডিশিয়াল সিস্টেম ফর চাইল্ড প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের জন্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন।

এছাড়া আইন ও বিচার বিভাগের আওতায় দ্রুত অনুমোদন হবে এমন অননুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা সাতটি। এগুলোর মধ্যে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পের জন্য ২৫০ কোটি টাকা, বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশনের আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়ন (সিআরভিএস) প্রকল্পে ৬ কোটি টাকা, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের অবকাঠামো নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের আওতায় আগামী অর্থবছরে ২৫০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট একাডেমি স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় আগামী অর্থ বছরে ১৫০ কোটি টাকা, ‘স্ট্রেংদেনিং এক্সেস টু জাস্টিস অ্যান্ড লিগ্যাল রিফর্ম’ প্রকল্পের জন্য ২৫ কোটি টাকা, নিবন্ধন দপ্তরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এসব প্রকল্প আগামী ৬ মাসের মধ্যে অনুমোদিত হবে।

আইন ও বিচার বিভাগের অনুমোদিত চলমান এবং অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৩৯৭ কোটি ৭ লাখ টাকা প্রয়োজন। আইন ও বিচার বিভাগের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম যুক্তিসঙ্গতভাবে এগিয়ে নেয়া এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে ১ হাজার ৩৯৭ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিতে অর্থ সচিবকে অনুরোধ জানান আইন সচিব।

শনিবার, ২৭ মার্চ ২০২১ , ১৩ চৈত্র ১৪২৭ ১২ শাবান ১৪৪২

ডিজিটালাইজেশনের জন্য ১৩৯০ কোটি টাকা চায় আইন বিভাগ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বিচারিক কার্যক্রমকে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে আদালতগুলোর ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচার বিভাগকে ডিজিটালাইজেশনের জন্য অনুমোদিত এবং অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য আগামী অর্থবছরে ১ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে আইন ও বিচার বিভাগ। সম্প্রতি আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এই অর্থ বরাদ্দ চেয়ে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদারকে চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা জাতিসংঘের উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় ভিশন ২০২১, লক্ষ্যমাত্রা ২০৪১, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এবং সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্দেশ্যের সামঞ্জস্য রয়েছে। বিচারিক কার্যক্রমকে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে আলাদলতগুলোর ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশনকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। এসব উন্নয়ন কর্মকা-ে বিভিন্ন সময়ে আপনার সহযোগিতা প্রাপ্তি আমাদের অগ্রগতিকে ইতিবাচক মূল্য সংযোজন করেছে।’

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আইন ও বিচার বিভাগের অধীনে বর্তমানে পাঁচটি বিনিয়োগ, একটি কারিগরি সহায়তা, একটি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প এ অর্থবছরে শেষ হবে। অন্য ছয়টি প্রকল্প সমাপ্তির সময় সীমা শেষ হলেও তা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এজন্য আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ (প্রথম পর্যায়) (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের জন্য ২৫০ কোটি টাকা, দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের জন্য ৭৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা, অধস্তন আদালত ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণে আইন ও বিচার বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের জন্য ৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ নতুন ১২তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২৪ কোটি টাকা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বর্তমান জায়গায় ১৫তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ‘স্ট্রেংদেনিং ক্যাপাসিটি অব জুডিশিয়াল সিস্টেম ফর চাইল্ড প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের জন্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন।

এছাড়া আইন ও বিচার বিভাগের আওতায় দ্রুত অনুমোদন হবে এমন অননুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা সাতটি। এগুলোর মধ্যে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পের জন্য ২৫০ কোটি টাকা, বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশনের আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়ন (সিআরভিএস) প্রকল্পে ৬ কোটি টাকা, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের অবকাঠামো নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের আওতায় আগামী অর্থবছরে ২৫০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট একাডেমি স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় আগামী অর্থ বছরে ১৫০ কোটি টাকা, ‘স্ট্রেংদেনিং এক্সেস টু জাস্টিস অ্যান্ড লিগ্যাল রিফর্ম’ প্রকল্পের জন্য ২৫ কোটি টাকা, নিবন্ধন দপ্তরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এসব প্রকল্প আগামী ৬ মাসের মধ্যে অনুমোদিত হবে।

আইন ও বিচার বিভাগের অনুমোদিত চলমান এবং অননুমোদিত প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৩৯৭ কোটি ৭ লাখ টাকা প্রয়োজন। আইন ও বিচার বিভাগের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম যুক্তিসঙ্গতভাবে এগিয়ে নেয়া এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে ১ হাজার ৩৯৭ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিতে অর্থ সচিবকে অনুরোধ জানান আইন সচিব।