দেশে প্রথম ‘ডিজিটাল বুথ’ চালু করছে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ

দুবাইয়ের পর এবার দেশে আগামী ৩১ মার্চ ব্রোকারেজ হাউজের শাখা হিসেবে প্রথমবারের মতো খোলা হয়েছে ‘ডিজিটাল বুথ’। দেশের অভ্যন্তরে ডিজিটাল বুথ খুলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলায় চলতি বছরের ৩১ মার্চ এবং চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলায় ৮ এপ্রিল ডিজিটাল বুথ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন সাপেক্ষে দুইটি জেলায় পৃথক ডিজিটাল বুথ চালু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের উল্লাহপাড়া, নীলফামারীর সৈয়দপুর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিএসই যাচাই-বাছাই শেষে বিএসইসি অনুমোদন দিলে ওইসব জেলায় বুথ খোলা হবে।

জানা গেছে, ভোলা জেলায় ৩১ মার্চ ডিজিটাল বুথ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে। ওই দিনই ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরুর নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ সকাল ১০টায় বুথ থেকে লেনদেন কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে লেনদেন শুরুর আগের দিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় প্রশিক্ষণমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে ডিজিটাল বুথ উদ্বোধনের কার্যক্রম শুরু হবে। আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভোলা জেলার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির।

এদিকে রাঙ্গামাটি জেলায় ৮ এপ্রিল ডিজিটাল বুথ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে। নির্ধারিত সময়ে বুথটি থেকে লেনদেন কার্যক্রম শুরু করা হবে। ওইদিন সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ডিজিটাল বুথের উদ্বোধন করবেন।

আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিজিটাল বুথ চালু করার আগে ভবন ভাড়া নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ডিজিটাল বুথ পরিচালনার জন্য কর্মীও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে ভবন ভাড়া ও কর্মী নিয়োগ দেয়ার পর ডিজিটাল বুথ চালু করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। বুথ অনুমোদন দেয়ার সময় কমিয়ে আনলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বাড়তি খরচ কম লাগতো।

আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, ফটিকছড়ি ও ভোলা জেলায় ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য আবেদন করা হয়েছে। ওই চারটি জায়গায় বুথ স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। তবে আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে দুটি জেলায় বুথ খোলার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। ইতোমধ্যে ধারাবাহিকতায় আমরা চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি ও বরিশালের ভোলায় ডিজিটাল বুথ চালু করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ দুটি বুথের পারফরমেন্স দেখে পরবর্তীতে কক্সবাজার ও ফটিকছড়িতে ডিজিটাল বুথ চালু করার অনুমোদন দেবে বিএসইসি।’

উল্লেখ্য, দেশের শেয়ারবাজারকে এবার বিদেশে ও দেশের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। ব্রোকারেজ হাউসগুলো চাইলে এখন দেশের মধ্যে ইউনিয়ন, সিটি করপোরেশন ও পৌর সদর এলাকায় ব্রোকারেজ হাউসের ডিজিটাল বুথ খুলতে পারবে। একইভাবে বিদেশেও বুথ খুলতে পারবে ব্রোকারেজ হাউসগুলো। বিএসইসি বলছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও শেয়ারবাজারের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এ ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের সম্মতি সাপেক্ষে বিএসইসি এ বুথ খোলার অনুমোদন দেবে। এর ধারাবাহিকতায় দেশে ডিজিটাল বুথ চালু হতে যাচ্ছে।

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধস নামার পর থেকে বিএসইসি ব্রোকারেজ হাউসের শাখা খোলার অনুমোদন বন্ধ করে দেয়। তবে নতুন ব্রোকারেজ হাউসকে শাখা খোলার অনুমোদন দিয়েছে।

এর আগে ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে দেশজুড়ে ব্রোকারেজ হাউসের শাখা খোলার তুমুল হিড়িক পড়ে যায়। তাতে শেয়ারবাজার সম্পর্কে না জেনে, না বুঝে দলে দলে লোক বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খুলে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করে। এতে একপর্যায়ে হু হু করে বাড়তে থাকে শেয়ারের দাম। তারই একপর্যায়ে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাজারে ধস নামে।

রবিবার, ২৮ মার্চ ২০২১ , ১৪ চৈত্র ১৪২৭ ১৩ শাবান ১৪৪২

দেশে প্রথম ‘ডিজিটাল বুথ’ চালু করছে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

দুবাইয়ের পর এবার দেশে আগামী ৩১ মার্চ ব্রোকারেজ হাউজের শাখা হিসেবে প্রথমবারের মতো খোলা হয়েছে ‘ডিজিটাল বুথ’। দেশের অভ্যন্তরে ডিজিটাল বুথ খুলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলায় চলতি বছরের ৩১ মার্চ এবং চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলায় ৮ এপ্রিল ডিজিটাল বুথ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন সাপেক্ষে দুইটি জেলায় পৃথক ডিজিটাল বুথ চালু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের উল্লাহপাড়া, নীলফামারীর সৈয়দপুর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিএসই যাচাই-বাছাই শেষে বিএসইসি অনুমোদন দিলে ওইসব জেলায় বুথ খোলা হবে।

জানা গেছে, ভোলা জেলায় ৩১ মার্চ ডিজিটাল বুথ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে। ওই দিনই ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরুর নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ সকাল ১০টায় বুথ থেকে লেনদেন কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে লেনদেন শুরুর আগের দিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় প্রশিক্ষণমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে ডিজিটাল বুথ উদ্বোধনের কার্যক্রম শুরু হবে। আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভোলা জেলার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির।

এদিকে রাঙ্গামাটি জেলায় ৮ এপ্রিল ডিজিটাল বুথ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে। নির্ধারিত সময়ে বুথটি থেকে লেনদেন কার্যক্রম শুরু করা হবে। ওইদিন সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ডিজিটাল বুথের উদ্বোধন করবেন।

আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিজিটাল বুথ চালু করার আগে ভবন ভাড়া নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ডিজিটাল বুথ পরিচালনার জন্য কর্মীও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে ভবন ভাড়া ও কর্মী নিয়োগ দেয়ার পর ডিজিটাল বুথ চালু করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। বুথ অনুমোদন দেয়ার সময় কমিয়ে আনলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বাড়তি খরচ কম লাগতো।

আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, ফটিকছড়ি ও ভোলা জেলায় ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য আবেদন করা হয়েছে। ওই চারটি জায়গায় বুথ স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। তবে আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে দুটি জেলায় বুথ খোলার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। ইতোমধ্যে ধারাবাহিকতায় আমরা চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি ও বরিশালের ভোলায় ডিজিটাল বুথ চালু করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ দুটি বুথের পারফরমেন্স দেখে পরবর্তীতে কক্সবাজার ও ফটিকছড়িতে ডিজিটাল বুথ চালু করার অনুমোদন দেবে বিএসইসি।’

উল্লেখ্য, দেশের শেয়ারবাজারকে এবার বিদেশে ও দেশের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। ব্রোকারেজ হাউসগুলো চাইলে এখন দেশের মধ্যে ইউনিয়ন, সিটি করপোরেশন ও পৌর সদর এলাকায় ব্রোকারেজ হাউসের ডিজিটাল বুথ খুলতে পারবে। একইভাবে বিদেশেও বুথ খুলতে পারবে ব্রোকারেজ হাউসগুলো। বিএসইসি বলছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও শেয়ারবাজারের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এ ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের সম্মতি সাপেক্ষে বিএসইসি এ বুথ খোলার অনুমোদন দেবে। এর ধারাবাহিকতায় দেশে ডিজিটাল বুথ চালু হতে যাচ্ছে।

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধস নামার পর থেকে বিএসইসি ব্রোকারেজ হাউসের শাখা খোলার অনুমোদন বন্ধ করে দেয়। তবে নতুন ব্রোকারেজ হাউসকে শাখা খোলার অনুমোদন দিয়েছে।

এর আগে ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে দেশজুড়ে ব্রোকারেজ হাউসের শাখা খোলার তুমুল হিড়িক পড়ে যায়। তাতে শেয়ারবাজার সম্পর্কে না জেনে, না বুঝে দলে দলে লোক বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খুলে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করে। এতে একপর্যায়ে হু হু করে বাড়তে থাকে শেয়ারের দাম। তারই একপর্যায়ে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাজারে ধস নামে।