কমবে আগাম কর, ভ্যাট আইনের কাঠামোগত পরিবর্তন

ভ্যাট আইন ব্যবসাবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজেটে আইনটির কাঠামোগত বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাটের আগাম কর (এটি) হার কমানো হবে আগামী অর্থবছরে। পাশাপাশি রিফান্ড জটিলতার কারণে কয়েকটি শিল্পকে আগাম কর থেকে অব্যাহতিও দেয়া হতে পারে।

এছাড়াও ভ্যাট ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ দুটোতেই ছাড় দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশীয় ইলেট্রনিক্স শিল্পের স্বার্থে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে কার্যকর হওয়া নতুন ভ্যাট আইন আগাম কর হার ছিল ৫ শতাংশ। চলতি বাজেটে স্থানীয় শিল্পকে সুবিধা দিতে আমদানি পর্যায়ে কাঁচামালের ওপর আগাম কর কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়।

পুরাতন আইনে আগাম করকে অগ্রিম ট্রেড ভ্যাট বা এটিভি বলা হতো। তখন মোটা দাগে, শুধু বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের এটিভি দিতে হতো। উৎপাদনমুখী শিল্প এটিভির আওতার বাইরে ছিল। কিন্তু নতুন আইনে কয়েকটি ছাড়া সবধরনের শিল্পকে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর দিতে হচ্ছে। এ কর ফেরত (রিফান্ড) দেয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় উদ্যোক্তারা সময়মতো সেটি পাচ্ছে না। এ নিয়ে শিল্প মালিকরা দীর্ঘদিন যাবৎ আপত্তি জানিয়ে আসছেন।

সম্প্রতি কর ব্যবস্থার ব্যাপক সমালোচনা করেন অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের করব্যবস্থা চূড়ান্ত রকমের ব্যবসা অবান্ধব। এ কারণে ব্যবসা বন্ধ করেই দেয়া উচিত। ‘আমরা যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করি, আমরা কাল থেকে কান ধরে ছেড়ে দিতে চাই। লাভ হোক আর লোকসান, যা-ই হবে, কর দিয়েই যাবেন। যারা কর দেয় না, তারাই ভালো থাকবে। তারা আরও বড় বড় ব্যবসা করবে আর আমরা মরব। এই ধরনের ব্যবসার মধ্যে আর আমরা নেই। করব্যবস্থা ঠিক করেন। অন্যথায় বর্তমান ব্যবসাই থাকবে না, নতুন বিনিয়োগের তো প্রশ্নই ওঠে না।’

এদিকে ভ্যাটের কমপ্লায়েন্স বাড়াতে আগাম কর প্রথা চালু করা হয়। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে জড়িত সব প্রতিষ্ঠান যেন ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করে সেজন্য সব শিল্পকে আগাম করের আওতায় আনা হয়। কিন্তু যথাসময়ে রিফান্ড দিতে না পারায় পদ্ধতিটি সমালোচনার মুখে পড়েছে। এসব বিবেচনায় আগামী বাজেটে আগাম কর হার ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হচ্ছে।

পাশাপাশি অনেক খাতকে বাজেটে আগাম করের আওতার বাইরে রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যেমন- ব্যবসায়ী পর্যায়ে মোবাইল ফোন সেট ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশকে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আগাম কর অব্যাহতি না দেয়ায় রিফান্ড সৃষ্টি হচ্ছে।

একইভাবে স্টিল স্ক্যাপ, শিপ স্ক্যাপ, রডের ওপর টনপ্রতি এক থেকে ২ হাজার টাকা সুনির্দিষ্ট ভ্যাট আরোপিত আছে। অথচ আমদানি পর্যায়ে আগাম কর রয়েছে এবং যথারীতি রিফান্ড সৃষ্টি হচ্ছে।

এছাড়া সিমেন্ট, বেভারেজ ও সিরামিক খাতের মতো উৎপাদন পর্যায়ে যেসব শিল্পে মূল্য সংযোজনের হার ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশের কম সেসব ক্ষেত্রে রিফান্ড সৃষ্টি হচ্ছে এবং প্রদেয় ভ্যাট থাকে না। তাই আগামী বাজেটে কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, মোবাইল ফোন, সিমেন্ট ও স্টিল শিল্পকে আগাম কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে।

অন্যদিকে ভ্যাট আইনে ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ হার দুটোই কমানো হচ্ছে। বর্তমানে ভ্যাট ফাঁকির ক্ষেত্রে ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের দ্বিগুণ জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। আগামী বাজেটে এটি কমিয়ে ফাঁকির সমপরিমাণ জরিমানার বিধান করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া সময়মতো ভ্যাট না দেয়ায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সরল সুদের বিধান রয়েছে। এটি বাজেটে এক শতাংশ করা হতে পারে। দেশীয় ইলেকট্রনিক্স শিল্পের (এসি-ফ্রিজ) ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বাজেটে শর্তসাপেক্ষে এ সুবিধার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত করা হতে পারে। ২০১০ সাল থেকে রেফ্রিজারেটর ও মোটরসাইকেল উৎপাদন শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে আসছে সরকার। চলতি বাজেটে মোটরসাইকেলকে এ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। বর্তমানে শুধু এসি-ফ্রিজ এবং কম্প্রেসার উৎপাদন শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে।

এছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন নেই। রাজধানী ঢাকার গুলশান, বারিধারা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও ডেমরার বিভিন্ন মার্কেটে অভিমান চালিয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট নিবন্ধন না নেয়ার তথ্য পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। গত সোমবার জরিপ টিম কার্যক্রম চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। তিনি জানান, ভ্যাট গোয়েন্দার জরিপ টিম নিবন্ধন না নেয়া প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নিবন্ধন নেয়ার পরও ভ্যাট না দেয়া প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছে। ভ্যাট আইন অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি জানান, ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারের হোসেন মার্কেটে মোট ২২১টি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১২টির। বিপরীতে ২০৯টির নিবন্ধন নেই। আর কেন্দ্রীয় নিবন্ধন ২টি। মার্কেটটির দুটি দোকান ৫০০০ টাকার উপরে ভ্যাট দেয়।

ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারের হাজী হোসেন প্লাজায় জরিপ চালিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ১৮৮টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১০টির। বিপরীতে ১৭৮টির নিবন্ধন নেই। এখান থেকে মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় ১টি।

ধানমন্ডি সানরাইজ প্লাজায় ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ৫৭টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ৩০টির। বিপরীতে ২৭টির নিবন্ধন নেই। এখান থেকে মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় ৪টি এবং ২৬টি প্রতিষ্ঠান ৫০০০ টাকার কম ভ্যাট দেয়।

মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ার জরিপ চালিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ২৪০টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১৯৮টির। বিপরীতে নিবন্ধন নেই ৪২টির। এখান থেকে মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় ২টি এবং ৪০টি প্রতিষ্ঠান ৫০০০ টাকার কম ভ্যাট দেয়।

বারিধারা ডিওএইচএস অনন্যা শপিং সেন্টার ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ৫২টি। যার মধ্যে নিবন্ধন আছে ৩১টির। বিপরীতে ২১টির নিবন্ধন নেই। এখান থেকে নিয়মিত ভ্যাট দেয় ১১টি। একটিও মাসে ৫০০০ টাকার উপরে ভ্যাট দেয় না। আবার নিবন্ধিত হওয়ার পরও ২০টি ভ্যাট দেয়া না। গুলশান-১-এর নাভানা শপিং কমপ্লেক্স জরিপ চালিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা মোট প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ২৮টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ২৬টির। বাকি দুটির নিবন্ধন নেই।

বুধবার, ২৬ মে ২০২১ , ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৩ শাওয়াল ১৪৪২

কমবে আগাম কর, ভ্যাট আইনের কাঠামোগত পরিবর্তন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

ভ্যাট আইন ব্যবসাবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজেটে আইনটির কাঠামোগত বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাটের আগাম কর (এটি) হার কমানো হবে আগামী অর্থবছরে। পাশাপাশি রিফান্ড জটিলতার কারণে কয়েকটি শিল্পকে আগাম কর থেকে অব্যাহতিও দেয়া হতে পারে।

এছাড়াও ভ্যাট ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ দুটোতেই ছাড় দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশীয় ইলেট্রনিক্স শিল্পের স্বার্থে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে কার্যকর হওয়া নতুন ভ্যাট আইন আগাম কর হার ছিল ৫ শতাংশ। চলতি বাজেটে স্থানীয় শিল্পকে সুবিধা দিতে আমদানি পর্যায়ে কাঁচামালের ওপর আগাম কর কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়।

পুরাতন আইনে আগাম করকে অগ্রিম ট্রেড ভ্যাট বা এটিভি বলা হতো। তখন মোটা দাগে, শুধু বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের এটিভি দিতে হতো। উৎপাদনমুখী শিল্প এটিভির আওতার বাইরে ছিল। কিন্তু নতুন আইনে কয়েকটি ছাড়া সবধরনের শিল্পকে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর দিতে হচ্ছে। এ কর ফেরত (রিফান্ড) দেয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় উদ্যোক্তারা সময়মতো সেটি পাচ্ছে না। এ নিয়ে শিল্প মালিকরা দীর্ঘদিন যাবৎ আপত্তি জানিয়ে আসছেন।

সম্প্রতি কর ব্যবস্থার ব্যাপক সমালোচনা করেন অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের করব্যবস্থা চূড়ান্ত রকমের ব্যবসা অবান্ধব। এ কারণে ব্যবসা বন্ধ করেই দেয়া উচিত। ‘আমরা যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করি, আমরা কাল থেকে কান ধরে ছেড়ে দিতে চাই। লাভ হোক আর লোকসান, যা-ই হবে, কর দিয়েই যাবেন। যারা কর দেয় না, তারাই ভালো থাকবে। তারা আরও বড় বড় ব্যবসা করবে আর আমরা মরব। এই ধরনের ব্যবসার মধ্যে আর আমরা নেই। করব্যবস্থা ঠিক করেন। অন্যথায় বর্তমান ব্যবসাই থাকবে না, নতুন বিনিয়োগের তো প্রশ্নই ওঠে না।’

এদিকে ভ্যাটের কমপ্লায়েন্স বাড়াতে আগাম কর প্রথা চালু করা হয়। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে জড়িত সব প্রতিষ্ঠান যেন ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করে সেজন্য সব শিল্পকে আগাম করের আওতায় আনা হয়। কিন্তু যথাসময়ে রিফান্ড দিতে না পারায় পদ্ধতিটি সমালোচনার মুখে পড়েছে। এসব বিবেচনায় আগামী বাজেটে আগাম কর হার ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হচ্ছে।

পাশাপাশি অনেক খাতকে বাজেটে আগাম করের আওতার বাইরে রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যেমন- ব্যবসায়ী পর্যায়ে মোবাইল ফোন সেট ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশকে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আগাম কর অব্যাহতি না দেয়ায় রিফান্ড সৃষ্টি হচ্ছে।

একইভাবে স্টিল স্ক্যাপ, শিপ স্ক্যাপ, রডের ওপর টনপ্রতি এক থেকে ২ হাজার টাকা সুনির্দিষ্ট ভ্যাট আরোপিত আছে। অথচ আমদানি পর্যায়ে আগাম কর রয়েছে এবং যথারীতি রিফান্ড সৃষ্টি হচ্ছে।

এছাড়া সিমেন্ট, বেভারেজ ও সিরামিক খাতের মতো উৎপাদন পর্যায়ে যেসব শিল্পে মূল্য সংযোজনের হার ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশের কম সেসব ক্ষেত্রে রিফান্ড সৃষ্টি হচ্ছে এবং প্রদেয় ভ্যাট থাকে না। তাই আগামী বাজেটে কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, মোবাইল ফোন, সিমেন্ট ও স্টিল শিল্পকে আগাম কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে।

অন্যদিকে ভ্যাট আইনে ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ হার দুটোই কমানো হচ্ছে। বর্তমানে ভ্যাট ফাঁকির ক্ষেত্রে ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের দ্বিগুণ জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। আগামী বাজেটে এটি কমিয়ে ফাঁকির সমপরিমাণ জরিমানার বিধান করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া সময়মতো ভ্যাট না দেয়ায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সরল সুদের বিধান রয়েছে। এটি বাজেটে এক শতাংশ করা হতে পারে। দেশীয় ইলেকট্রনিক্স শিল্পের (এসি-ফ্রিজ) ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বাজেটে শর্তসাপেক্ষে এ সুবিধার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত করা হতে পারে। ২০১০ সাল থেকে রেফ্রিজারেটর ও মোটরসাইকেল উৎপাদন শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে আসছে সরকার। চলতি বাজেটে মোটরসাইকেলকে এ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। বর্তমানে শুধু এসি-ফ্রিজ এবং কম্প্রেসার উৎপাদন শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে।

এছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন নেই। রাজধানী ঢাকার গুলশান, বারিধারা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও ডেমরার বিভিন্ন মার্কেটে অভিমান চালিয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট নিবন্ধন না নেয়ার তথ্য পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। গত সোমবার জরিপ টিম কার্যক্রম চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। তিনি জানান, ভ্যাট গোয়েন্দার জরিপ টিম নিবন্ধন না নেয়া প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নিবন্ধন নেয়ার পরও ভ্যাট না দেয়া প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছে। ভ্যাট আইন অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি জানান, ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারের হোসেন মার্কেটে মোট ২২১টি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১২টির। বিপরীতে ২০৯টির নিবন্ধন নেই। আর কেন্দ্রীয় নিবন্ধন ২টি। মার্কেটটির দুটি দোকান ৫০০০ টাকার উপরে ভ্যাট দেয়।

ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারের হাজী হোসেন প্লাজায় জরিপ চালিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ১৮৮টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১০টির। বিপরীতে ১৭৮টির নিবন্ধন নেই। এখান থেকে মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় ১টি।

ধানমন্ডি সানরাইজ প্লাজায় ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ৫৭টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ৩০টির। বিপরীতে ২৭টির নিবন্ধন নেই। এখান থেকে মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় ৪টি এবং ২৬টি প্রতিষ্ঠান ৫০০০ টাকার কম ভ্যাট দেয়।

মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ার জরিপ চালিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ২৪০টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১৯৮টির। বিপরীতে নিবন্ধন নেই ৪২টির। এখান থেকে মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় ২টি এবং ৪০টি প্রতিষ্ঠান ৫০০০ টাকার কম ভ্যাট দেয়।

বারিধারা ডিওএইচএস অনন্যা শপিং সেন্টার ভ্যাট গোয়েন্দা মোট দোকান পেয়েছে ৫২টি। যার মধ্যে নিবন্ধন আছে ৩১টির। বিপরীতে ২১টির নিবন্ধন নেই। এখান থেকে নিয়মিত ভ্যাট দেয় ১১টি। একটিও মাসে ৫০০০ টাকার উপরে ভ্যাট দেয় না। আবার নিবন্ধিত হওয়ার পরও ২০টি ভ্যাট দেয়া না। গুলশান-১-এর নাভানা শপিং কমপ্লেক্স জরিপ চালিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা মোট প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ২৮টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ২৬টির। বাকি দুটির নিবন্ধন নেই।