মাদারীপুরে ত্রিভুজ প্রেমে খুন হয় প্রেমিক ইমন

মাদারীপুরে ত্রিভুজ প্রেমের কারণেই বিসিএস পরীক্ষার্থী ইমনকে গলাকেটে হত্যা করা হয় বলে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। ঈদের দিন নদের পাড়ে ডেকে নিয়ে চেতনানাশক খাইয়ে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয় ইমনকে। এই ঘটনায় কথিত প্রেমিকা লাবনী আক্তারসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শীঘ্রই আদালতে অভিযোগপত্র দেয়ার কথাও জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, গত ১৫ মে সকালে শিবচর উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের আড়িয়াল খাঁ মরা নদের পাশে পানির মধ্যে থেকে অজ্ঞাতনামা (২৭) এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে অজ্ঞাতনামা লাশটি উপজেলার চরকামার কান্দ গ্রামের সেকান্দার কাজীর ছেলে ইসমাইল হোসেন ইমনের।

এরপর মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল তদন্তে জানতে পারেন, নিহত ইসমাইল হোসেন ইমনের সঙ্গে শিবচরের উত্তর চর তাজপুর গ্রামের আলমগীর চৌধুরীর মেয়ে লাবনী আক্তারের সঙ্গে গত এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে লাবনীর সঙ্গে ইমনের একাধিকবার ঘনিষ্ঠতা হয় এবং সেসব ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ইমনের মোবাইলে ধারণ করা থাকে। মাঝে মধ্যেই ইমন এসব ঘনিষ্ঠ ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে লাবনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়। এসব নিয়ে ইমনের সঙ্গে লাবনীর সম্পর্ক অবনতি হলে লাবনী নতুন করে তার পুরনো প্রেমিক কামরুজ্জামানের সঙ্গে আবারও প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় এবং ইমনের সঙ্গে ব্রেকআপ করে। কিন্তু ইমন তার মোবাইল থেকে আপত্তিকর ছবি লাবনীকে দিতে রাজি না হওয়ায় গত ১৪ মে লাবনীর পুরনো প্রেমিক কামরুজ্জামান, লাবনী ও সহযোগী মেহেদী ফরাজী মিলে ইমনকে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে এনে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে। পরে নিহতের বড় ভাই রেজাউল করিম বাদী হয়ে কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান পুলিশ সুপার।

সংবাদ সম্মেলন শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আল মামুন বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ পুলিশের পাশাপাশি মাদারীপুর গোয়েন্দা বিভাগও ঘটনা তদন্ত করে ইমন হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত প্রেমিকা লাবনী আক্তার ও সহযোগী ইমন ফরাজীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তারা ইসমাইল হোসেন ইমনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ পরিদর্শক আল মামুন বলেন, ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে আপত্তিকর ছবি নিয়ে বিরোধের জেরেই ইমনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেব। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানিয়েছেন, আড়িয়াল খাঁ মরা নদের পাড়ে ইসমাইলকে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরি ও ইমনের হাতঘড়ি, মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

বুধবার, ২৬ মে ২০২১ , ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৩ শাওয়াল ১৪৪২

মাদারীপুরে ত্রিভুজ প্রেমে খুন হয় প্রেমিক ইমন

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুরে ত্রিভুজ প্রেমের কারণেই বিসিএস পরীক্ষার্থী ইমনকে গলাকেটে হত্যা করা হয় বলে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। ঈদের দিন নদের পাড়ে ডেকে নিয়ে চেতনানাশক খাইয়ে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয় ইমনকে। এই ঘটনায় কথিত প্রেমিকা লাবনী আক্তারসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শীঘ্রই আদালতে অভিযোগপত্র দেয়ার কথাও জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, গত ১৫ মে সকালে শিবচর উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের আড়িয়াল খাঁ মরা নদের পাশে পানির মধ্যে থেকে অজ্ঞাতনামা (২৭) এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে অজ্ঞাতনামা লাশটি উপজেলার চরকামার কান্দ গ্রামের সেকান্দার কাজীর ছেলে ইসমাইল হোসেন ইমনের।

এরপর মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল তদন্তে জানতে পারেন, নিহত ইসমাইল হোসেন ইমনের সঙ্গে শিবচরের উত্তর চর তাজপুর গ্রামের আলমগীর চৌধুরীর মেয়ে লাবনী আক্তারের সঙ্গে গত এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে লাবনীর সঙ্গে ইমনের একাধিকবার ঘনিষ্ঠতা হয় এবং সেসব ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ইমনের মোবাইলে ধারণ করা থাকে। মাঝে মধ্যেই ইমন এসব ঘনিষ্ঠ ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে লাবনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়। এসব নিয়ে ইমনের সঙ্গে লাবনীর সম্পর্ক অবনতি হলে লাবনী নতুন করে তার পুরনো প্রেমিক কামরুজ্জামানের সঙ্গে আবারও প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় এবং ইমনের সঙ্গে ব্রেকআপ করে। কিন্তু ইমন তার মোবাইল থেকে আপত্তিকর ছবি লাবনীকে দিতে রাজি না হওয়ায় গত ১৪ মে লাবনীর পুরনো প্রেমিক কামরুজ্জামান, লাবনী ও সহযোগী মেহেদী ফরাজী মিলে ইমনকে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে এনে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে। পরে নিহতের বড় ভাই রেজাউল করিম বাদী হয়ে কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান পুলিশ সুপার।

সংবাদ সম্মেলন শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আল মামুন বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ পুলিশের পাশাপাশি মাদারীপুর গোয়েন্দা বিভাগও ঘটনা তদন্ত করে ইমন হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত প্রেমিকা লাবনী আক্তার ও সহযোগী ইমন ফরাজীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তারা ইসমাইল হোসেন ইমনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ পরিদর্শক আল মামুন বলেন, ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে আপত্তিকর ছবি নিয়ে বিরোধের জেরেই ইমনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেব। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানিয়েছেন, আড়িয়াল খাঁ মরা নদের পাড়ে ইসমাইলকে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরি ও ইমনের হাতঘড়ি, মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।