পল্লবীতে বুড়িরটেকের ডেভেলপার কোম্পানি হ্যাভেলী প্রোপার্টির জমি দখলে জমির মালিক সাহিনুদ্দীন বড় ধরনের বাধা হওয়ায় তাকে হত্যার পর নির্দেশদাতা আওয়াল মনে করিছিল তার কিছুই হবে না। কিন্তু এ ঘটনায় মামলায় তাকে প্রধান আসামি করায় তিনি পরিবার নিয়ে ভৈরবে চলে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি জামিন নিবেন কিন্তু তাকে জেলে যেতে হবে এটি তিনি কল্পনাও করেননি। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্য হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা ছিল বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।
সাহিনুদ্দীন হত্যা মামলায় গতকাল আওয়ালকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। রিমান্ড শেষ হওয়ার পর তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এদিকে আলোচিত এ হত্যায় হাসান নামের আরেক আসামি গতকাল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকেই সাবেক এমপি আওয়াল এ হত্যকাণ্ড ঘটিয়ে বুড়িরটেক (আলীনগর) এলাকায় তার ডেভেলপার কোম্পানির প্রজেক্ট পরিপূর্ণ করতে চেয়েছিলেন। সাহিনুদ্দীন হত্যায় আওয়াল গ্রেপ্তার হতে পারে এমন কল্পনাও করেনি সাহিনুদ্দীনের পরিবার। আওয়ালকে প্রধান আসামি করে মামলা করার পর সাহিনুদ্দীনের পরিবার ও স্বজনরা চরম আতঙ্কে ছিল। ঘটনার দুদিন পর র্যাব আওয়ালসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করার খবরে স্বস্তি ফিরে পায় বুড়িরটেক এলাকার বাসিন্দারা। সাহিনুদ্দীন হত্যায় নেতৃত্ব দেয়া সুমন ব্যাপারিসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের খবরে হত্যার বিচার পাওয়ার আশা বড় হতে থাকে সাহিনুদ্দীনের পরিবারের মনে।
র্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার আল মঈন টেলিফোনে জানান, নৃশংস এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার আগে তাদের কাছে যায়। কোন মানুষকে ৫ মিনিটে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য এভাবে কোপানো হচ্ছে তা দেখে তারাও থমকে যায়। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে পুলিশের পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে র্যাবও নামে। র্যাব ৪-এর পরিচালক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হকের নির্দেশনায় র্যাব ৪-এর একাধিক টিম কাজ করে। এছাড়া র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা ইউনিটও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে নানা তথ্য-উপাত্ত নিতে থাকে।
কমান্ডার আল মঈন জানান, তারা যখন নিশ্চিত হন এ হত্যার মূল নির্দেশদাতা সাবেক এমপি আওয়াল তখন তাকে গ্রেপ্তার করার বিষয়ে তাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ঘটনার পরপরই আওয়াল তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ধানমন্ডির বাসায় রেখে পরিবার পরিজন নিয়ে ভৈরবে শ্বশুরবাড়ি এলাকায় চলে যান। ভৈরবে একটি মাজার আছে। ওই মাজারের পাশে তার শ্বশুরের একটি বাড়ি ছিল। সেই বাড়িতে আত্মগোপন করে আওয়াল। আওয়াল ভেবেছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি আদালতে গিয়ে জামিন নিবেন। তাকে কেউ গ্রেপ্তার করবে না। কিন্তু আওয়ালের সম্পৃক্তার বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাবের একাধিক টিম তার গতিবিধি আগ থেকেই নজরদারিতে রেখেছিল। ভৈরবে তার অবস্থা নিশ্চিত হওয়ার পর আওয়ালকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালান হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেলেও আওয়াল শেষ পর্যন্ত ধরা দেয়।
সাহিনুদ্দীনের একাধিক স্বজন জানান, আওয়াল মোহাম্মদ আলীর পুরো বংশধরদের ভিটেমাটি কেড়ে নিয়েছে। হ্যাভেলী প্রোপার্টির নামে বেশি মূল্যে জমি ক্রয় এবং যারা তার কাছে জমি বিক্রি করবে তাদের একটি করে প্লট দিয়ে ঘর তৈরি করে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। ওইখানকার কেউ কর্মক্ষম ছিল না। তারা ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে আওয়ালের কাছে জমি বিক্রি করলেও পুরো টাকা পাননি বরং ভিটেমাটি খুইয়ে এখন পথে পথে ঘুরছেন অনেকেই।
এলাকাবাসী জানান, গত ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরেই আওয়াল ধরাকে সরাজ্ঞান করে মানুষের জমি দখল করে আসছিল। জমি দখলে একেক সময় একেক বাহিনীকে কাজে লাগিয়েছে। জমি দখল নিয়ে এ পর্যন্ত একাধিক ব্যক্তি খুন হয়েছে। সর্বশেষ খুন হওয়া সাহিনুদ্দীনের এক ফুফুও কয়েক বছর আগে গুম হয়েছে। তাকেও আওয়ালের লোকজন গুম করেছে বলে অভিযোগ আছে। প্রতিদিনই আওয়াল লোকজন দিয়ে জমি দখল করতেন। যখন যে বাধা দিত তার ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুরের জন্য সন্ত্রাসী পাঠিয়ে দিতেন। সাহিনুদ্দীনের ওপর একাধিক হামলা করেছিল। অর্থের জোরে আওয়াল টাকা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে নিতেন। এবারও হয়তো তাই করতে চেয়েছেন।
রিমান্ড শেষে কারাগারে আওয়াল
এদিকে সাহিনুদ্দীন হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আওয়ালকে গতকাল আদালতে তোলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পল্লবী জোনাল টিমের ইন্সúেক্টর ইফতেখার। গতকাল নতুন করে তার দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড আবেদন করেননি। রিমান্ড হেফাজতে আওয়াল সাহিনুদ্দীন হত্যায় নিজের সম্পৃক্তার কথা বললেও আদালতে দ্বায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়নি। ফলে গতকাল আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেল, সাহিনুদ্দীন হত্যায় এ পর্যন্ত ৪ জন জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সর্বশেষ হাসান নামের এক আসামি জবানবন্দি দিয়েছে। এর আগে হত্যার মূল নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন ব্যাপারি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। প্রত্যেকের জবানবন্দিতে সাহিনুদ্দীন হত্যায় আওয়াল নির্দেশাতা এবং অর্থদাতা ছিল বলে উঠে এসেছে। এছাড়া সাহিনুদ্দীনের জমি দখল এবং তার সঙ্গে বিরোধের জেরেই যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এর তথ্য-প্রমাণ এখন পর্যন্ত পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আওয়াল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলেও তার বিরুদ্ধে অপরাধের তথ্য-প্রমাণ ডিবির কাছে আছে। রিমান্ড হেফাজতে আওয়াল যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এরপর দ্বিতীয় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হবে কিনা সেটি পরে সিদ্ধান্ত হবে। যেহেতু আওয়াল এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা এবং অর্থদাতা সে অভিযোগের প্রমাণ ডিবির কাছে আছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে জমি দখলের বিরোধকে কেন্দ্র করে পল্লবীর বুড়িরটেক এলাকায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন জমির মালিক সাহিনুদ্দীন। এ ঘটনায় সাবেক এমপি আওয়ালকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন সাহিনুদ্দীনের মা। পরে র্যাব সাবেক এমপি আওয়ালসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। হত্যার নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন ব্যাপারিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবির পল্লবী জোনাল টিম। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজন ভাড়াটিয়া কিলার মানিক এবং মনির র্যাব এবং ডিবির সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। এখনও এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহারভুক্ত ১০ আসামিকে খুঁজছে পুলিশ। এছাড়া ঘটনায় জড়িত ৩ জন ভাড়াটে কিলারকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার, ২৭ মে ২০২১ , ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৪ শাওয়াল ১৪৪২
সাইফ বাবলু
পল্লবীতে বুড়িরটেকের ডেভেলপার কোম্পানি হ্যাভেলী প্রোপার্টির জমি দখলে জমির মালিক সাহিনুদ্দীন বড় ধরনের বাধা হওয়ায় তাকে হত্যার পর নির্দেশদাতা আওয়াল মনে করিছিল তার কিছুই হবে না। কিন্তু এ ঘটনায় মামলায় তাকে প্রধান আসামি করায় তিনি পরিবার নিয়ে ভৈরবে চলে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি জামিন নিবেন কিন্তু তাকে জেলে যেতে হবে এটি তিনি কল্পনাও করেননি। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্য হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা ছিল বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।
সাহিনুদ্দীন হত্যা মামলায় গতকাল আওয়ালকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। রিমান্ড শেষ হওয়ার পর তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এদিকে আলোচিত এ হত্যায় হাসান নামের আরেক আসামি গতকাল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকেই সাবেক এমপি আওয়াল এ হত্যকাণ্ড ঘটিয়ে বুড়িরটেক (আলীনগর) এলাকায় তার ডেভেলপার কোম্পানির প্রজেক্ট পরিপূর্ণ করতে চেয়েছিলেন। সাহিনুদ্দীন হত্যায় আওয়াল গ্রেপ্তার হতে পারে এমন কল্পনাও করেনি সাহিনুদ্দীনের পরিবার। আওয়ালকে প্রধান আসামি করে মামলা করার পর সাহিনুদ্দীনের পরিবার ও স্বজনরা চরম আতঙ্কে ছিল। ঘটনার দুদিন পর র্যাব আওয়ালসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করার খবরে স্বস্তি ফিরে পায় বুড়িরটেক এলাকার বাসিন্দারা। সাহিনুদ্দীন হত্যায় নেতৃত্ব দেয়া সুমন ব্যাপারিসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের খবরে হত্যার বিচার পাওয়ার আশা বড় হতে থাকে সাহিনুদ্দীনের পরিবারের মনে।
র্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার আল মঈন টেলিফোনে জানান, নৃশংস এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার আগে তাদের কাছে যায়। কোন মানুষকে ৫ মিনিটে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য এভাবে কোপানো হচ্ছে তা দেখে তারাও থমকে যায়। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে পুলিশের পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে র্যাবও নামে। র্যাব ৪-এর পরিচালক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হকের নির্দেশনায় র্যাব ৪-এর একাধিক টিম কাজ করে। এছাড়া র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা ইউনিটও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে নানা তথ্য-উপাত্ত নিতে থাকে।
কমান্ডার আল মঈন জানান, তারা যখন নিশ্চিত হন এ হত্যার মূল নির্দেশদাতা সাবেক এমপি আওয়াল তখন তাকে গ্রেপ্তার করার বিষয়ে তাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ঘটনার পরপরই আওয়াল তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ধানমন্ডির বাসায় রেখে পরিবার পরিজন নিয়ে ভৈরবে শ্বশুরবাড়ি এলাকায় চলে যান। ভৈরবে একটি মাজার আছে। ওই মাজারের পাশে তার শ্বশুরের একটি বাড়ি ছিল। সেই বাড়িতে আত্মগোপন করে আওয়াল। আওয়াল ভেবেছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি আদালতে গিয়ে জামিন নিবেন। তাকে কেউ গ্রেপ্তার করবে না। কিন্তু আওয়ালের সম্পৃক্তার বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাবের একাধিক টিম তার গতিবিধি আগ থেকেই নজরদারিতে রেখেছিল। ভৈরবে তার অবস্থা নিশ্চিত হওয়ার পর আওয়ালকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালান হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেলেও আওয়াল শেষ পর্যন্ত ধরা দেয়।
সাহিনুদ্দীনের একাধিক স্বজন জানান, আওয়াল মোহাম্মদ আলীর পুরো বংশধরদের ভিটেমাটি কেড়ে নিয়েছে। হ্যাভেলী প্রোপার্টির নামে বেশি মূল্যে জমি ক্রয় এবং যারা তার কাছে জমি বিক্রি করবে তাদের একটি করে প্লট দিয়ে ঘর তৈরি করে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। ওইখানকার কেউ কর্মক্ষম ছিল না। তারা ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে আওয়ালের কাছে জমি বিক্রি করলেও পুরো টাকা পাননি বরং ভিটেমাটি খুইয়ে এখন পথে পথে ঘুরছেন অনেকেই।
এলাকাবাসী জানান, গত ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরেই আওয়াল ধরাকে সরাজ্ঞান করে মানুষের জমি দখল করে আসছিল। জমি দখলে একেক সময় একেক বাহিনীকে কাজে লাগিয়েছে। জমি দখল নিয়ে এ পর্যন্ত একাধিক ব্যক্তি খুন হয়েছে। সর্বশেষ খুন হওয়া সাহিনুদ্দীনের এক ফুফুও কয়েক বছর আগে গুম হয়েছে। তাকেও আওয়ালের লোকজন গুম করেছে বলে অভিযোগ আছে। প্রতিদিনই আওয়াল লোকজন দিয়ে জমি দখল করতেন। যখন যে বাধা দিত তার ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুরের জন্য সন্ত্রাসী পাঠিয়ে দিতেন। সাহিনুদ্দীনের ওপর একাধিক হামলা করেছিল। অর্থের জোরে আওয়াল টাকা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে নিতেন। এবারও হয়তো তাই করতে চেয়েছেন।
রিমান্ড শেষে কারাগারে আওয়াল
এদিকে সাহিনুদ্দীন হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আওয়ালকে গতকাল আদালতে তোলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পল্লবী জোনাল টিমের ইন্সúেক্টর ইফতেখার। গতকাল নতুন করে তার দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড আবেদন করেননি। রিমান্ড হেফাজতে আওয়াল সাহিনুদ্দীন হত্যায় নিজের সম্পৃক্তার কথা বললেও আদালতে দ্বায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়নি। ফলে গতকাল আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেল, সাহিনুদ্দীন হত্যায় এ পর্যন্ত ৪ জন জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সর্বশেষ হাসান নামের এক আসামি জবানবন্দি দিয়েছে। এর আগে হত্যার মূল নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন ব্যাপারি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। প্রত্যেকের জবানবন্দিতে সাহিনুদ্দীন হত্যায় আওয়াল নির্দেশাতা এবং অর্থদাতা ছিল বলে উঠে এসেছে। এছাড়া সাহিনুদ্দীনের জমি দখল এবং তার সঙ্গে বিরোধের জেরেই যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এর তথ্য-প্রমাণ এখন পর্যন্ত পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আওয়াল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলেও তার বিরুদ্ধে অপরাধের তথ্য-প্রমাণ ডিবির কাছে আছে। রিমান্ড হেফাজতে আওয়াল যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এরপর দ্বিতীয় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হবে কিনা সেটি পরে সিদ্ধান্ত হবে। যেহেতু আওয়াল এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা এবং অর্থদাতা সে অভিযোগের প্রমাণ ডিবির কাছে আছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে জমি দখলের বিরোধকে কেন্দ্র করে পল্লবীর বুড়িরটেক এলাকায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন জমির মালিক সাহিনুদ্দীন। এ ঘটনায় সাবেক এমপি আওয়ালকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন সাহিনুদ্দীনের মা। পরে র্যাব সাবেক এমপি আওয়ালসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। হত্যার নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন ব্যাপারিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবির পল্লবী জোনাল টিম। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজন ভাড়াটিয়া কিলার মানিক এবং মনির র্যাব এবং ডিবির সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। এখনও এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহারভুক্ত ১০ আসামিকে খুঁজছে পুলিশ। এছাড়া ঘটনায় জড়িত ৩ জন ভাড়াটে কিলারকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।