সীমান্তে করোনা সংক্রমণ এখনও উচ্চ ঝুঁকিতে

দুই কারণে বাড়ছে

সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় একদিনে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। গত একদিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ। এদিন রাজশাহীতে সংক্রমণের হার ছিল ২০ শতাংশের বেশি। আর সারাদেশে গতকাল সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এ হিসেবে ওইসব জেলা এখনও করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাফেরা এবং ভারত ফেরত লোকজনের কারণেই সংক্রমণ বেড়েছে বলে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এখন আমের মৌসুম। প্রতিবছর এই সময়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বড় বড় পাইকারি বাজার বসত। কিন্তু এবার বড় ধরনের পাইকারি বাজার বসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এলাকা ভেদে আমের বাজার ভাগ করে দেয়া হয়েছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় কমেছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গত ১৭ থেকে ২৩ মে- এই এক সপ্তাহে বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে ২৬ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ১০ থেকে ১৬ মে- এই এক সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ২২টি জেলায় নতুন রোগী বৃদ্ধির হার শতভাগ বা তার বেশি ছিল। ২২টির মধ্যে ১৫টিই সীমান্তবর্তী জেলা।

সীমান্তবর্তী জেলার মধ্যে- চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, দিনাজপুর, যশোর, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঝালকাঠি, নাটোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া। সংক্রমণ বৃদ্ধির তালিকায় থাকা অন্য জেলার মধ্যে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, নোয়াখালী ও গাজীপুর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার গতকাল সংবাদকে বলেছেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৫ শতাংশ। এই সময়ে রাজশাহীতে ৭৪ জনের করোনা পাওয়া গেছে, সেখানে শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি।’

সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব কমে আসছে জানিয়ে ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘আমের মৌসুমকে ঘিরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় লেগে যেত। কয়েকটি বড় বাজারে এই ভিড় বেশি ছিল, সেজন্য বড় বাজারগুলো ভেঙে দিয়ে ছোট ছোট বাজার বসার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মানুষ কমেছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আগের সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছিল ৭৩ জন। ২৩ মে পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার ৬৩ শতাংশ এবং রাজশাহীতে এই হার ৪১ শতাংশ। এ হিসেবে গত একদিনে দুই জেলায় সংক্রমণ কমেছে।

কুষ্টিয়ায় গত ১৮ মে থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এই জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার ১৪-১৫ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। সাতক্ষীরায় এতদিন শনাক্তের হার ১৩ শতাংশ থাকলে গত সোমবার তা ৪০ শতাংশের উপরে উঠে।

দুই কারণে সীমান্ত এলাকায় সংক্রমণ বেড়েছে

মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে মূলত দুটি কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। প্রথমত, ভারতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে ফেরা। দ্বিতীয়ত, প্রত্যন্ত এলাকার লোকজনের ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও মাস্ক না পরা।

এই দুই সমস্যা নিরসনে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার। তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে একটি কু-সংস্কার রয়েছে, সেটি হলো-তাদের করোনা সংক্রমণ হবে না। এজন্য কেউ মাস্ক পরতে চাইত না, ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলত না। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

আর ভারত থেকে যারা ফিরছেন তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে জানিয়ে ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘কোয়ারেন্টিন শেষে সবার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, যাদের করোনা পভেটিভ আসছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। একইসঙ্গে শনাক্ত রোগীদের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে কীনা সেটি পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।’

২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ

দেশে গত এক দিনে এক হাজার ২৯২ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত এবং আক্রান্তদের মধ্যে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া রোগীদের নিয়ে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল সাত লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৫ জনে। আর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল মোট ১২ হাজার ৪৮০ জন। গত একদিনে এক হাজার ২৯১ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৩৫ হাজার ১৫৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

গত একদিনে সারাদেশে ৪৮৬টি ল্যাবে (পরীক্ষাগার) ১৫ হাজার ৭১০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৬৮টি। গতকাল নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী করোনা শনাক্তের হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন এবং নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১২ হাজার ৪৮০ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ১৯ জন এবং নারী তিন হাজার ৪৬১ জন। গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের ১৮ জন সরকারি হাসপাতালে এবং চার জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃত্যু হওয়া ২২ জনের মধ্যে ১১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, তিন জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, এক জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং এক জনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা গেছে, একদিনে মৃত্যু হওয়া ২২ জনের মধ্যে পাঁচ জন ঢাকা বিভাগের, পাঁচ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, পাঁচ জন রাজশাহী বিভাগের, দুই জন বরিশাল বিভাগের, তিন জন সিলেট বিভাগের এবং দুই জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১ , ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৫ শাওয়াল ১৪৪২

সীমান্তে করোনা সংক্রমণ এখনও উচ্চ ঝুঁকিতে

দুই কারণে বাড়ছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় একদিনে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। গত একদিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ। এদিন রাজশাহীতে সংক্রমণের হার ছিল ২০ শতাংশের বেশি। আর সারাদেশে গতকাল সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এ হিসেবে ওইসব জেলা এখনও করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাফেরা এবং ভারত ফেরত লোকজনের কারণেই সংক্রমণ বেড়েছে বলে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এখন আমের মৌসুম। প্রতিবছর এই সময়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বড় বড় পাইকারি বাজার বসত। কিন্তু এবার বড় ধরনের পাইকারি বাজার বসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এলাকা ভেদে আমের বাজার ভাগ করে দেয়া হয়েছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় কমেছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গত ১৭ থেকে ২৩ মে- এই এক সপ্তাহে বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে ২৬ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ১০ থেকে ১৬ মে- এই এক সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ২২টি জেলায় নতুন রোগী বৃদ্ধির হার শতভাগ বা তার বেশি ছিল। ২২টির মধ্যে ১৫টিই সীমান্তবর্তী জেলা।

সীমান্তবর্তী জেলার মধ্যে- চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, দিনাজপুর, যশোর, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঝালকাঠি, নাটোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া। সংক্রমণ বৃদ্ধির তালিকায় থাকা অন্য জেলার মধ্যে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, নোয়াখালী ও গাজীপুর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার গতকাল সংবাদকে বলেছেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৫ শতাংশ। এই সময়ে রাজশাহীতে ৭৪ জনের করোনা পাওয়া গেছে, সেখানে শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি।’

সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব কমে আসছে জানিয়ে ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘আমের মৌসুমকে ঘিরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় লেগে যেত। কয়েকটি বড় বাজারে এই ভিড় বেশি ছিল, সেজন্য বড় বাজারগুলো ভেঙে দিয়ে ছোট ছোট বাজার বসার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মানুষ কমেছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আগের সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছিল ৭৩ জন। ২৩ মে পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার ৬৩ শতাংশ এবং রাজশাহীতে এই হার ৪১ শতাংশ। এ হিসেবে গত একদিনে দুই জেলায় সংক্রমণ কমেছে।

কুষ্টিয়ায় গত ১৮ মে থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এই জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার ১৪-১৫ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। সাতক্ষীরায় এতদিন শনাক্তের হার ১৩ শতাংশ থাকলে গত সোমবার তা ৪০ শতাংশের উপরে উঠে।

দুই কারণে সীমান্ত এলাকায় সংক্রমণ বেড়েছে

মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে মূলত দুটি কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। প্রথমত, ভারতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে ফেরা। দ্বিতীয়ত, প্রত্যন্ত এলাকার লোকজনের ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও মাস্ক না পরা।

এই দুই সমস্যা নিরসনে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার। তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে একটি কু-সংস্কার রয়েছে, সেটি হলো-তাদের করোনা সংক্রমণ হবে না। এজন্য কেউ মাস্ক পরতে চাইত না, ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলত না। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

আর ভারত থেকে যারা ফিরছেন তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে জানিয়ে ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘কোয়ারেন্টিন শেষে সবার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, যাদের করোনা পভেটিভ আসছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। একইসঙ্গে শনাক্ত রোগীদের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে কীনা সেটি পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।’

২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ

দেশে গত এক দিনে এক হাজার ২৯২ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত এবং আক্রান্তদের মধ্যে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া রোগীদের নিয়ে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল সাত লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৫ জনে। আর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল মোট ১২ হাজার ৪৮০ জন। গত একদিনে এক হাজার ২৯১ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৩৫ হাজার ১৫৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

গত একদিনে সারাদেশে ৪৮৬টি ল্যাবে (পরীক্ষাগার) ১৫ হাজার ৭১০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৬৮টি। গতকাল নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী করোনা শনাক্তের হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন এবং নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১২ হাজার ৪৮০ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ১৯ জন এবং নারী তিন হাজার ৪৬১ জন। গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের ১৮ জন সরকারি হাসপাতালে এবং চার জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃত্যু হওয়া ২২ জনের মধ্যে ১১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, তিন জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, এক জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং এক জনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা গেছে, একদিনে মৃত্যু হওয়া ২২ জনের মধ্যে পাঁচ জন ঢাকা বিভাগের, পাঁচ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, পাঁচ জন রাজশাহী বিভাগের, দুই জন বরিশাল বিভাগের, তিন জন সিলেট বিভাগের এবং দুই জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।