কুমিল্লার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দের প্রত্যাশা

জাহিদুর রহমান, কুমিল্লা

আগামী (২০২১-২০২২) অর্থবছরের বাজেটে কুমিল্লার উন্নয়নে বিশেষ অর্থ বরাদ্দ চান কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নিজ জেলা হওয়ায় এখানকার সাধারণ মানুষের প্রত্যাশাও অনেক। জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবীসহ সুশীল সমাজের নেতারা শিক্ষা-সংস্কৃতির পীঠখ্যাত প্রাচীন এ জেলাকে আগামী বাজেটে একটি মডেল জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার মতো অর্থ বরাদ্দ চেয়েছেন। তাদের দাবি, কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন, কুসিক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা, লালমাই-ময়নামতি পাহাড় ও পুরাতন গোমতী নদী ঘিরে দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ, বিমানবন্দর চালু করা এবং রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা।

এসব প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের জন্য আসন্ন বাজেটে বরাদ্দ রাখার দাবি উঠেছে কুমিল্লার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্য থেকে।

কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যা- ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হতে চলেছে। এর মধ্যে কুমিল্লা অনেক এগুনোর কথা ছিল। কিন্তু বিগত সরকারগুলোর সময়ে নানা কারণে কুমিল্লা পিছিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে জেলার এমপিরা ও মন্ত্রীদ্বয় কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দর চালু, কুসিক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন হলে কুমিল্লা হবে দেশের মধ্যে মডেল জেলা। অর্থমন্ত্রী মহোদয় আমাদের কুমিল্লার কৃতীসন্তান। তাই আগামী বাজেটে কুমিল্লার উন্নয়নে জেলাবাসী বিশেষ বরাদ্দের আশা করতেই পারেন। জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, কুমিল্লায় ইপিজেড আছে। এছাড়া ইপিজেডের বাইরেও অনেক শিল্প কারখানা রয়েছে। ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও অগ্রসর জেলা কুমিল্লা। সার্বিক দিক থেকে সমৃদ্ধ এ জেলায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহজ যাতায়াতের জন্য বিমানবন্দর চালুর দাবি জানান তিনি।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) জেলা শাখার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, দেশের মধ্যে কুমিল্লায় প্রবাসীর সংখ্যা বেশি। তারা উল্লেখযোগ্য রেমিটেন্স প্রেরণ করে থাকেন। এদিক থেকে কুমিল্লার অবস্থান শীর্ষে। কিন্তু তাদের এ রেমিটেন্স কুমিল্লার উন্নয়নে শতভাগ কাজে আসে না। প্রবাসীদের অর্থে তারা যেন ছোটখাটো বিভিন্ন পর্যায়ের শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগ পায় তাহলে কুমিল্লা আরও সমৃদ্ধ হবে। তিনি কুমিল্লার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রাখার জন্য দাবি জানান।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলী আহসান টিটু বলেন, এবারের বাজেটে লালমাই-ময়নামতি পাহাড় ঘিরে পর্যটন স্থাপনা করার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া কুমিল্লার ঐতিহ্যের খাদি শিল্প, মৃৎশিল্প ও কুটির শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখারও দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী আলী আকবর মাসুম বলেন, বাজেটে গ্রামের মানুষ, শহরের মানুষ, নগরের মানুষের মধ্যে যে ব্যবধান থাকে, তা কাটানোর কখনই প্রচেষ্টা থাকে না। বিশেষ করে আমাদের প্রাচীন এ জেলার মৌলিক প্রয়োজনগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গ্যাস, আবাসিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ থাকে না। এসব ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনা প্রয়োজন।

শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১ , ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৫ শাওয়াল ১৪৪২

কুমিল্লার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দের প্রত্যাশা

জাহিদুর রহমান, কুমিল্লা

image

আগামী (২০২১-২০২২) অর্থবছরের বাজেটে কুমিল্লার উন্নয়নে বিশেষ অর্থ বরাদ্দ চান কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নিজ জেলা হওয়ায় এখানকার সাধারণ মানুষের প্রত্যাশাও অনেক। জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবীসহ সুশীল সমাজের নেতারা শিক্ষা-সংস্কৃতির পীঠখ্যাত প্রাচীন এ জেলাকে আগামী বাজেটে একটি মডেল জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার মতো অর্থ বরাদ্দ চেয়েছেন। তাদের দাবি, কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন, কুসিক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা, লালমাই-ময়নামতি পাহাড় ও পুরাতন গোমতী নদী ঘিরে দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ, বিমানবন্দর চালু করা এবং রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা।

এসব প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের জন্য আসন্ন বাজেটে বরাদ্দ রাখার দাবি উঠেছে কুমিল্লার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্য থেকে।

কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যা- ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হতে চলেছে। এর মধ্যে কুমিল্লা অনেক এগুনোর কথা ছিল। কিন্তু বিগত সরকারগুলোর সময়ে নানা কারণে কুমিল্লা পিছিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে জেলার এমপিরা ও মন্ত্রীদ্বয় কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দর চালু, কুসিক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন হলে কুমিল্লা হবে দেশের মধ্যে মডেল জেলা। অর্থমন্ত্রী মহোদয় আমাদের কুমিল্লার কৃতীসন্তান। তাই আগামী বাজেটে কুমিল্লার উন্নয়নে জেলাবাসী বিশেষ বরাদ্দের আশা করতেই পারেন। জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, কুমিল্লায় ইপিজেড আছে। এছাড়া ইপিজেডের বাইরেও অনেক শিল্প কারখানা রয়েছে। ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও অগ্রসর জেলা কুমিল্লা। সার্বিক দিক থেকে সমৃদ্ধ এ জেলায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহজ যাতায়াতের জন্য বিমানবন্দর চালুর দাবি জানান তিনি।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) জেলা শাখার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, দেশের মধ্যে কুমিল্লায় প্রবাসীর সংখ্যা বেশি। তারা উল্লেখযোগ্য রেমিটেন্স প্রেরণ করে থাকেন। এদিক থেকে কুমিল্লার অবস্থান শীর্ষে। কিন্তু তাদের এ রেমিটেন্স কুমিল্লার উন্নয়নে শতভাগ কাজে আসে না। প্রবাসীদের অর্থে তারা যেন ছোটখাটো বিভিন্ন পর্যায়ের শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগ পায় তাহলে কুমিল্লা আরও সমৃদ্ধ হবে। তিনি কুমিল্লার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রাখার জন্য দাবি জানান।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলী আহসান টিটু বলেন, এবারের বাজেটে লালমাই-ময়নামতি পাহাড় ঘিরে পর্যটন স্থাপনা করার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া কুমিল্লার ঐতিহ্যের খাদি শিল্প, মৃৎশিল্প ও কুটির শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখারও দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী আলী আকবর মাসুম বলেন, বাজেটে গ্রামের মানুষ, শহরের মানুষ, নগরের মানুষের মধ্যে যে ব্যবধান থাকে, তা কাটানোর কখনই প্রচেষ্টা থাকে না। বিশেষ করে আমাদের প্রাচীন এ জেলার মৌলিক প্রয়োজনগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গ্যাস, আবাসিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ থাকে না। এসব ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনা প্রয়োজন।