করোনায় বেড়েছে মৃত্যু, কমেছে সংক্রমণ

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৮ জন। আগের দিন মৃত্যু হয়েছিল ৩১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু বাড়লেও কমেছে শনাক্তের হার, নমুনা পরীক্ষা ও সংক্রমণ। সরকারি হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১২ হাজার ৫৪৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৪৩ জন। আর আগের দিন সংক্রমিত হয়েছিল ১ হাজার ৩৫৮ জন। দেশে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হলেন সাত লাখ ৯৭ হাজার ৩৮৬ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১৮৭ জন, এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৩৭ হাজার গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর আগের দিন নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৫৭ শতাংশ।

এক সপ্তাহের সঙ্গে আগের সপ্তাহের তুলনা করলে দেখা যায়, এই সাত দিনে নমুনা পরীক্ষা ৬ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়ার সঙ্গে রোগীর সংখ্যাও প্রায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। বিপরীতে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে, আবার সুস্থতার হারও ৯ শতাংশ কমে গেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ১২ হাজার ৬১১টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে ১৩ হাজার ১৮৪টি। যা আগের দিনের চেয়ে এই সংখ্যা প্রায় ২ হাজার কম। আগের দিন এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয় ১৫ হাজার ৩৮৮টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ৬০৬টি।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৯ লাখ ১৫ হাজার ৫৮টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৩ লাখ ২০ হাজার ১৮৮টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩০টি।

দেশে বর্তমানে ৫০২টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১২৯টি পরীক্ষাগারে, জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৪৩টি পরীক্ষাগারে এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৩৩০টি পরীক্ষাগারে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন, আর নারী ১০ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেলেন ৯ হাজার ৬৫ জন এবং নারী তিন হাজার ৪৮৪ জন।

বয়স বিবেচনায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৯ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে চারজন রয়েছেন। মৃত্যুবরণকারী ৩১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮ জন ও চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে ৪ জন করে, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ৭ জন করে, সিলেট বিভাগে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন এবং বরিশাল বিভাগে আছেন একজন।

এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৩৫ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ২ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন একজন। দেশে এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ৫৪৯ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৬৫ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৪৮৪ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া এক হাজার ১৮৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৩৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৩৫৫ জন, রংপুর বিভাগের ১১০ জন, খুলনা বিভাগের ১১৬ জন, বরিশাল বিভাগের ১৩৪ জন, রাজশাহী বিভাগের ৮২ জন, সিলেট বিভাগের ৩৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৪২৫ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৯৪ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন এক লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৬ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৬৫৫ জন। এর আগে গত ৭ এপ্রিল দেশে একদিনে করোনা শনাক্ত হয় সাত হাজার ৬২৬ জন। যা দেশে একদিনে করোনা শনাক্তে সর্বোচ্চ রেকর্ড।

দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েপড়া ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। শিথিল হলেও সে ‘লকডাউন’ এখনো চলছে। ‘লকডাউনের’ প্রভাবে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এখনো সেভাবে সংক্রমণ না বাড়লেও ঈদের পর থেকে ঊর্ধ্বগতি প্রবণতা রয়েছে। ভারতের সঙ্গে সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এখনই সতর্ক হয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া হলে পরিস্থিতি আবার খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রবিবার, ৩০ মে ২০২১ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৭ শাওয়াল ১৪৪২

করোনায় বেড়েছে মৃত্যু, কমেছে সংক্রমণ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৮ জন। আগের দিন মৃত্যু হয়েছিল ৩১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু বাড়লেও কমেছে শনাক্তের হার, নমুনা পরীক্ষা ও সংক্রমণ। সরকারি হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১২ হাজার ৫৪৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৪৩ জন। আর আগের দিন সংক্রমিত হয়েছিল ১ হাজার ৩৫৮ জন। দেশে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হলেন সাত লাখ ৯৭ হাজার ৩৮৬ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১৮৭ জন, এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৩৭ হাজার গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর আগের দিন নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৫৭ শতাংশ।

এক সপ্তাহের সঙ্গে আগের সপ্তাহের তুলনা করলে দেখা যায়, এই সাত দিনে নমুনা পরীক্ষা ৬ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়ার সঙ্গে রোগীর সংখ্যাও প্রায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। বিপরীতে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে, আবার সুস্থতার হারও ৯ শতাংশ কমে গেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ১২ হাজার ৬১১টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে ১৩ হাজার ১৮৪টি। যা আগের দিনের চেয়ে এই সংখ্যা প্রায় ২ হাজার কম। আগের দিন এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয় ১৫ হাজার ৩৮৮টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ৬০৬টি।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৯ লাখ ১৫ হাজার ৫৮টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৩ লাখ ২০ হাজার ১৮৮টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩০টি।

দেশে বর্তমানে ৫০২টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১২৯টি পরীক্ষাগারে, জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৪৩টি পরীক্ষাগারে এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৩৩০টি পরীক্ষাগারে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন, আর নারী ১০ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেলেন ৯ হাজার ৬৫ জন এবং নারী তিন হাজার ৪৮৪ জন।

বয়স বিবেচনায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৯ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে চারজন রয়েছেন। মৃত্যুবরণকারী ৩১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮ জন ও চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে ৪ জন করে, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ৭ জন করে, সিলেট বিভাগে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন এবং বরিশাল বিভাগে আছেন একজন।

এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৩৫ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ২ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন একজন। দেশে এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ৫৪৯ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৬৫ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৪৮৪ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া এক হাজার ১৮৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৩৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৩৫৫ জন, রংপুর বিভাগের ১১০ জন, খুলনা বিভাগের ১১৬ জন, বরিশাল বিভাগের ১৩৪ জন, রাজশাহী বিভাগের ৮২ জন, সিলেট বিভাগের ৩৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৪২৫ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৯৪ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন এক লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৬ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৬৫৫ জন। এর আগে গত ৭ এপ্রিল দেশে একদিনে করোনা শনাক্ত হয় সাত হাজার ৬২৬ জন। যা দেশে একদিনে করোনা শনাক্তে সর্বোচ্চ রেকর্ড।

দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েপড়া ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। শিথিল হলেও সে ‘লকডাউন’ এখনো চলছে। ‘লকডাউনের’ প্রভাবে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এখনো সেভাবে সংক্রমণ না বাড়লেও ঈদের পর থেকে ঊর্ধ্বগতি প্রবণতা রয়েছে। ভারতের সঙ্গে সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এখনই সতর্ক হয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া হলে পরিস্থিতি আবার খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।