৮৪০ বাংলাদেশির প্রবেশ

করোনা সংক্রমণ শঙ্কা বাড়ছে, ৩ জনের মৃত্যু

গত ১২ দিনে চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুরে ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ৮৪০ জন দেশে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে দশনা চেকপোস্ট দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ঢুকেছে ৭০৬ জন এবং হিলি চেকপোস্ট দিয়ে ১১ দিনে ১৩৪ জন দিনাজপুরে। চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে করোনা রোগী। সেখানে ইতোমধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে করোনা রোগী। ভারত থেকে পাসপোর্টধারী বাংলাদেশিরা এসে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকায় জেলাবাসীর মনেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল আরও ১৩ জন ভারতে আটকেপড়া নারী-পুরুষ দর্শনা স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। এই নিয়ে ১২ দিনে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ৭০৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। এরমধ্যে ১২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। আর মৃত্যু হয়েছে ভারত ফেরত ৩ জনের। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা যানা মোহচেনা বেগম (৪২)। তিনি দিনাজপুর জেলার মহাব্বতপুরের মৃত মকসেদ আলীর স্ত্রী। ২১ মে মোহচেনা বেগম ও তার ছেলে দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে আসেন। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বর নাসিং ইনস্টিটিউটে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। সেখানে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ২৫ মে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসাধীন আবস্থার তার মৃত্যু হয়। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। এর আগে ২০ মে রোকেয়া বেগম (৪৫) নামে কোয়ারেন্টিনে থাকা আরও এক ক্যান্সার রোগী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মারা যান। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। একই দিন করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ভারতফেরত কিশোর শাকিব (১৭) মৃত্যু হয়। সে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কলেজ পাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ জানান, গত ১৩ থেকে ২০ মে পর্যন্ত সাত দিনে জেলায় ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে ২১ হতে ২৮ মে পর্যন্ত সাত দিনে ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আওলিয়ার রহমান নয়ন জানান, ভারত থেকে দেশে ফেরা নাগরিকদের মধ্যে ১২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত মিলেছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থাকতে পারে সন্দেহে তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। এ জেলার সঙ্গে ভারতের ৮০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। যার কারণে বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে। ঈদের পর আক্রান্ত কিছুটা বেশি হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় করোনা পরিস্থিতি ভালো। ২৮ মে পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন ৭০৬ জন পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি।

হিলি : কলকাতার বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) ও করোনা টেস্টের নেগেটিভ সনদপত্র নিয়ে ১১ দিনে ভারতে আটকেপড়া ১৩৪ জন যাত্রী হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন। গত ১৯ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত ভারতের হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন তারা।

হিলি ইমিগ্রেশনের ওসি সেকেন্দার আলী বলেন, সব প্রকার স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশি যাত্রীরা দেশে ফিরেছেন। তিনি জানান, ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশি যাত্রী যারা আটকা পড়ে আছে তাদের পর্যায়ক্রমে নেয়া হচ্ছে।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৌহিদ আল হাসান জানান, হিলি চেকপোস্ট দিয়ে ১১ দিনে আটকেপড়া ১৩৪ জনের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে।

তাদের মধ্যে ১ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছে।

রবিবার, ৩০ মে ২০২১ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৭ শাওয়াল ১৪৪২

চূয়াডাঙ্গা-দিনাজপুর সীমান্তে

৮৪০ বাংলাদেশির প্রবেশ

করোনা সংক্রমণ শঙ্কা বাড়ছে, ৩ জনের মৃত্যু

সংবাদ ডেস্ক

গত ১২ দিনে চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুরে ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ৮৪০ জন দেশে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে দশনা চেকপোস্ট দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ঢুকেছে ৭০৬ জন এবং হিলি চেকপোস্ট দিয়ে ১১ দিনে ১৩৪ জন দিনাজপুরে। চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে করোনা রোগী। সেখানে ইতোমধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে করোনা রোগী। ভারত থেকে পাসপোর্টধারী বাংলাদেশিরা এসে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকায় জেলাবাসীর মনেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল আরও ১৩ জন ভারতে আটকেপড়া নারী-পুরুষ দর্শনা স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। এই নিয়ে ১২ দিনে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ৭০৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। এরমধ্যে ১২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। আর মৃত্যু হয়েছে ভারত ফেরত ৩ জনের। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা যানা মোহচেনা বেগম (৪২)। তিনি দিনাজপুর জেলার মহাব্বতপুরের মৃত মকসেদ আলীর স্ত্রী। ২১ মে মোহচেনা বেগম ও তার ছেলে দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে আসেন। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বর নাসিং ইনস্টিটিউটে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। সেখানে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ২৫ মে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসাধীন আবস্থার তার মৃত্যু হয়। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। এর আগে ২০ মে রোকেয়া বেগম (৪৫) নামে কোয়ারেন্টিনে থাকা আরও এক ক্যান্সার রোগী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মারা যান। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। একই দিন করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ভারতফেরত কিশোর শাকিব (১৭) মৃত্যু হয়। সে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কলেজ পাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ জানান, গত ১৩ থেকে ২০ মে পর্যন্ত সাত দিনে জেলায় ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে ২১ হতে ২৮ মে পর্যন্ত সাত দিনে ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আওলিয়ার রহমান নয়ন জানান, ভারত থেকে দেশে ফেরা নাগরিকদের মধ্যে ১২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত মিলেছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থাকতে পারে সন্দেহে তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। এ জেলার সঙ্গে ভারতের ৮০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। যার কারণে বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে। ঈদের পর আক্রান্ত কিছুটা বেশি হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় করোনা পরিস্থিতি ভালো। ২৮ মে পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন ৭০৬ জন পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি।

হিলি : কলকাতার বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) ও করোনা টেস্টের নেগেটিভ সনদপত্র নিয়ে ১১ দিনে ভারতে আটকেপড়া ১৩৪ জন যাত্রী হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন। গত ১৯ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত ভারতের হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন তারা।

হিলি ইমিগ্রেশনের ওসি সেকেন্দার আলী বলেন, সব প্রকার স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশি যাত্রীরা দেশে ফিরেছেন। তিনি জানান, ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশি যাত্রী যারা আটকা পড়ে আছে তাদের পর্যায়ক্রমে নেয়া হচ্ছে।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৌহিদ আল হাসান জানান, হিলি চেকপোস্ট দিয়ে ১১ দিনে আটকেপড়া ১৩৪ জনের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে।

তাদের মধ্যে ১ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছে।