খাগড়াছড়ি কারাগারে বন্দীর মৃত্যু : নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

আসক-এর উদ্বেগ, বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

পার্বত্যাঞ্চলের খাগড়াছড়ি কারাগারে মিলন বিকাশ ত্রিপুরা নামে এক বন্দীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে গুরুতর অবস্থায় ওই বন্দীকে কারাগার থেকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানোর পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। নিহতের সুরতহালের সময় মাথায় আঘাত এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে রাখার চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, কারা হেফাজতে মিলন বিকাশ ত্রিপুরাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আর নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কারা কর্তৃপক্ষের দাবি ওই বন্দী নিজেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। পরে তাকে উদ্ধার করা হলেও তার মৃত্যু হয়। এদিকে কারাগারে বন্দীর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিস কেন্দ্র (আসক)। তারা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (এডিশনাল আইজি প্রিজন্স) কর্নেল আবরার হোসেন সংবাদকে জানান, খাগড়াছড়ি কারাগারে একজন বন্দীর মৃত্যুর খবর তারা জেনেছেন। বিষয়টি কারা অধিদপ্তর থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। কি কারণে কোন পরিস্থিতিতে ওই বন্দীর মৃত্যু হলো।

কারা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, খাগড়াছড়ি কারাগারে বন্দীর মৃত্যুর বিষয়টি তারা তদন্ত শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে কারা গোয়েন্দা ইউনিট বিষয়টি তদন্ত শুরু করছে। তদন্ত রিপার্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা কি ছিল তা বেরিয়ে আসবে। তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে, মাদক মামলায় কারাগারে থাকা মিলন ত্রিপুরা নামের ওই বন্দী নিজেই গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপর তাকে উদ্ধার করে কারাগার থেকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। কারা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, ওই বন্দী মাদক মামলায় কারাগারে যায়। এরপর থেকে সে ওই কারাগারে বন্দী ছিল।

আসক থেকে জানানো হয়েছে, তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, গত শুক্রবার সকালে মিলন বিকাশ ত্রিপুরা নামে এক বন্দী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মাথায় আঘাত ও গলায় গামছা পেঁচানোর দাগ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গভীর উদ্বেগ প্রকাশসহ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মনে করে, কারাগারের মতো একটি নিরাপদ হেফাজতে এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা অনভিপ্রেত। পাশাপাশি আসক কারা হেফাজতে মিলন বিকাশ ত্রিপুরার মৃত্যু সংক্রান্ত তার পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। পরিবারের বরাদ দিয়ে আসক জানিয়েছে, কারা হেফাজতে মিলন বিকাশ ত্রিপুরার মৃত্যুতে তার পরিবার অভিযোগ করেছে কারা হেফাজতে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আর সেই নির্যাতনের কারণেই বিকাশ ত্রিপুরার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচার দাবি করেছে পরিবার। পরিবারের এ দাবির সঙ্গে আমরাও একমত।

রবিবার, ৩০ মে ২০২১ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৭ শাওয়াল ১৪৪২

খাগড়াছড়ি কারাগারে বন্দীর মৃত্যু : নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

আসক-এর উদ্বেগ, বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক/ প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি

পার্বত্যাঞ্চলের খাগড়াছড়ি কারাগারে মিলন বিকাশ ত্রিপুরা নামে এক বন্দীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে গুরুতর অবস্থায় ওই বন্দীকে কারাগার থেকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানোর পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। নিহতের সুরতহালের সময় মাথায় আঘাত এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে রাখার চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, কারা হেফাজতে মিলন বিকাশ ত্রিপুরাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আর নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কারা কর্তৃপক্ষের দাবি ওই বন্দী নিজেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। পরে তাকে উদ্ধার করা হলেও তার মৃত্যু হয়। এদিকে কারাগারে বন্দীর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিস কেন্দ্র (আসক)। তারা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (এডিশনাল আইজি প্রিজন্স) কর্নেল আবরার হোসেন সংবাদকে জানান, খাগড়াছড়ি কারাগারে একজন বন্দীর মৃত্যুর খবর তারা জেনেছেন। বিষয়টি কারা অধিদপ্তর থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। কি কারণে কোন পরিস্থিতিতে ওই বন্দীর মৃত্যু হলো।

কারা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, খাগড়াছড়ি কারাগারে বন্দীর মৃত্যুর বিষয়টি তারা তদন্ত শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে কারা গোয়েন্দা ইউনিট বিষয়টি তদন্ত শুরু করছে। তদন্ত রিপার্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা কি ছিল তা বেরিয়ে আসবে। তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে, মাদক মামলায় কারাগারে থাকা মিলন ত্রিপুরা নামের ওই বন্দী নিজেই গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপর তাকে উদ্ধার করে কারাগার থেকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। কারা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, ওই বন্দী মাদক মামলায় কারাগারে যায়। এরপর থেকে সে ওই কারাগারে বন্দী ছিল।

আসক থেকে জানানো হয়েছে, তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, গত শুক্রবার সকালে মিলন বিকাশ ত্রিপুরা নামে এক বন্দী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মাথায় আঘাত ও গলায় গামছা পেঁচানোর দাগ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গভীর উদ্বেগ প্রকাশসহ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মনে করে, কারাগারের মতো একটি নিরাপদ হেফাজতে এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা অনভিপ্রেত। পাশাপাশি আসক কারা হেফাজতে মিলন বিকাশ ত্রিপুরার মৃত্যু সংক্রান্ত তার পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। পরিবারের বরাদ দিয়ে আসক জানিয়েছে, কারা হেফাজতে মিলন বিকাশ ত্রিপুরার মৃত্যুতে তার পরিবার অভিযোগ করেছে কারা হেফাজতে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আর সেই নির্যাতনের কারণেই বিকাশ ত্রিপুরার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচার দাবি করেছে পরিবার। পরিবারের এ দাবির সঙ্গে আমরাও একমত।