উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হোক

দেশের উপকূলীয় এলাকায় সাড়ে ৮ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ষাটের দশকে এসব বাঁধ তৈরি হয়েছিল। বছর বছর ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু কখনই বাঁধগুলো সঠিকভাবে মেরামত করা হয়নি। ফলে প্রতি বছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে লবণ-পানি প্রবেশ করে।

উপকূলে টেকসই ও উঁচু বেড়িবাঁধের দাবি অনেক পুরনো। ঘূর্ণিঝড় সামনে এলেই এ দাবি ওঠে। আর দুর্যোগে বাঁধের ক্ষতি হলে দাবি আরও জোরালো হয়। কিন্তু এসব দাবি সংশ্লিষ্টরা শোনে কিনা তা নিয়েই সংশয়। বাঁধ ভেঙে গেলে জোড়াতালি দিয়ে সেটা মেরামত করা আর আশ্বাসের বাণী শোনানো ছাড়া তাদের যেন আর করার কিছুই নেই।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে যতটা না ক্ষতি হয়েছে, বাঁধ ভেঙে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় মানুষের। একটি ঝড়ের রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আঘাত হানে আরেকটি ঝড় বা জলোচ্ছ্বাস। ফলে বারবার তারা নিঃস্ব হয়। অভিযোগ রয়েছে, অতীতে বেড়িবাঁধ সংস্কার, নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সবকিছুতেই স্থানীয় জনগণের মতামত উপেক্ষিত হয়েছে। প্রতি বছর বেড়িবাঁধ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও টেকসই বেড়িবাঁধ হয়নি। অথচ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বেড়িবাঁধের ওপর। বাঁধের ক্ষতি হলে সবকিছু ভেসে যায়। তাই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর তারা ত্রাণ চাননি বরং টেকসই বাঁধ নির্মাণের কথা বলেছেন। আমরাও চাই, এবার অন্তত তাদের কথা শোনা হোক, তাদের দাবি বিবেচনা করা হোক। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের কর্মযজ্ঞ শুরু হোক।

উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের পানি থেকে রক্ষার জন্য আগের বেড়িবাঁধগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। এসব বাঁধ মাটি দিয়ে তৈরি। তাই তুলনামূলকভাবে দুর্বল ও নিচু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলোচ্ছ্বাস ও সুনামি ঠেকানোর জন্য জাপানসহ বিভিন্ন দেশে সমুদ্রের তীরে ৩০-৪০ ফুট লম্বা দেয়াল তৈরি করা হয়। এ কারণে এসব বাঁধ ঘূর্ণিঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। আমাদের দেশেও সে ধরনের টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা যায়। এর জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। বাঁধ নির্মাণে যেন কোন অনিয়ম না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

রবিবার, ৩০ মে ২০২১ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৭ শাওয়াল ১৪৪২

উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হোক

দেশের উপকূলীয় এলাকায় সাড়ে ৮ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ষাটের দশকে এসব বাঁধ তৈরি হয়েছিল। বছর বছর ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু কখনই বাঁধগুলো সঠিকভাবে মেরামত করা হয়নি। ফলে প্রতি বছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে লবণ-পানি প্রবেশ করে।

উপকূলে টেকসই ও উঁচু বেড়িবাঁধের দাবি অনেক পুরনো। ঘূর্ণিঝড় সামনে এলেই এ দাবি ওঠে। আর দুর্যোগে বাঁধের ক্ষতি হলে দাবি আরও জোরালো হয়। কিন্তু এসব দাবি সংশ্লিষ্টরা শোনে কিনা তা নিয়েই সংশয়। বাঁধ ভেঙে গেলে জোড়াতালি দিয়ে সেটা মেরামত করা আর আশ্বাসের বাণী শোনানো ছাড়া তাদের যেন আর করার কিছুই নেই।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে যতটা না ক্ষতি হয়েছে, বাঁধ ভেঙে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় মানুষের। একটি ঝড়ের রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আঘাত হানে আরেকটি ঝড় বা জলোচ্ছ্বাস। ফলে বারবার তারা নিঃস্ব হয়। অভিযোগ রয়েছে, অতীতে বেড়িবাঁধ সংস্কার, নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সবকিছুতেই স্থানীয় জনগণের মতামত উপেক্ষিত হয়েছে। প্রতি বছর বেড়িবাঁধ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও টেকসই বেড়িবাঁধ হয়নি। অথচ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বেড়িবাঁধের ওপর। বাঁধের ক্ষতি হলে সবকিছু ভেসে যায়। তাই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর তারা ত্রাণ চাননি বরং টেকসই বাঁধ নির্মাণের কথা বলেছেন। আমরাও চাই, এবার অন্তত তাদের কথা শোনা হোক, তাদের দাবি বিবেচনা করা হোক। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের কর্মযজ্ঞ শুরু হোক।

উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের পানি থেকে রক্ষার জন্য আগের বেড়িবাঁধগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। এসব বাঁধ মাটি দিয়ে তৈরি। তাই তুলনামূলকভাবে দুর্বল ও নিচু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলোচ্ছ্বাস ও সুনামি ঠেকানোর জন্য জাপানসহ বিভিন্ন দেশে সমুদ্রের তীরে ৩০-৪০ ফুট লম্বা দেয়াল তৈরি করা হয়। এ কারণে এসব বাঁধ ঘূর্ণিঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। আমাদের দেশেও সে ধরনের টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা যায়। এর জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। বাঁধ নির্মাণে যেন কোন অনিয়ম না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।