জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনেই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগে দেয়ার বিষয়ে গত ১৮ মে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক চিঠি নির্বাচন কমিশনে পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এ বিষয়ে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এনআইডি কার্যক্রম সুরক্ষাসেবা বিভাগে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এটি নিয়ে কিছুদিন আগে তারা চিঠি পেয়েছেন। তবে এর আগে এটি নিয়ে ইসির সঙ্গে কোন আলোচনা বা পরামর্শ হয়নি। চিঠি পাওয়ার পর কমিশন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। এইনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে একটি প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য। ইসির কী কী যুক্তি আছে, সেগুলো তাতে তুলে ধরা হবে। প্রতিবেদনটি ইসি সচিব মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে দেবেন।

২০০৭ সাল থেকে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন কাজের অংশ হিসেবে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আসছে ইসি। তারাই এখন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইসিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে এই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ইসিতে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের উদাহরণের আলোকে সুরক্ষাসেবা বিভাগ এই দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিবেচিত বিধায় সুরক্ষাসেবা বিভাগের দায়িত্বগুলোর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনসংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

এদিকে চলতি মাসে এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রমের কাজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগে স্থানান্তর করা যায়, মত দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে ইসির পরিবর্তে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তবে এ নিয়ে ইতোমধ্যে আপত্তি জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন সিইসিকে স্মারকলিপি দিয়েছে। গতকাল ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সিইসির সঙ্গে দেখা করে এ নিয়ে কথা বলেন।

সিইসি বলেন, স্থানান্তরের বিষয়টি এখন পর্যন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে, আলোচনার পর্যায়ে আছে। চিঠি দিলেই সঙ্গে সঙ্গে স্থানান্তর করা যায় না। এটি জটিল কাজ। তিনি বলেন, আমরা মনে করি এনআইডি কার্যক্রম ইসির কাছেই থাকা উচিত। কারণ ইসি এটি তৈরি করেছে ভোটার তালিকা তৈরির ভিত্তিতে। সরকারের যে উৎকণ্ঠা বা পরামর্শ সেটা হলো কোন দেশে নির্বাচন কমিশন এনআইডি কার্ড করে না। এটা ঠিকই, কোন দেশে এটা নির্বাচন কমিশন করে না।

সিইসি আরও বলেন, তবে অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলনা করলে হবে না। ইসির কাছে এটি থাকলে কোন অসুবিধা নেই। ইসি সেবা দিতে পারছে। তারপরও সরকারের কী চিন্তাভাবনা আছে, তা ইসি সচিব মন্ত্রিপরিষদ পর্যায়ে বা অন্যান্য পর্যায়ে আলোচনা করে বোঝানোর চেষ্টা করবেন।