পরীক্ষা স্বল্পতায় সীমান্তে বাড়ছে সংক্রমণ

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, পরীক্ষার আওতা না বাড়ালে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে

শুধু ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ও অনুপ্রবেশ নয়, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাফেরার কারণেও সীমান্ত এলাকাগুলোতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এছাড়া নমুনা পরীক্ষার স্বল্পতা ও ‘ফলস নেগেটিভ’ রিপোর্টও সীমান্ত এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে ২৩ জনের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এদের প্রায় সবাই সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দা। তবে জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন, এই সংখ্যা আরও বেশি। এ পর্যন্ত কতজনের দেহে করোনার ভারতীয় ধরন সংক্রমিত হয়েছে সে সর্ম্পকে সঠিক চিত্র কারও কাছেই নেই।

জনস্বাস্থ্যবিদদের আশঙ্কা ওই এলাকাগুলোতে নমুনা পরীক্ষার আওতা না বাড়ালে সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন ৩০ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল প্রেস বিফ্রিংয়ে জানান, দেশে এ পর্যন্ত ২৬৩টি ‘সিকোয়েন্স’ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৬১৭.২) পাওয়া গেছে। এটি ভারতফেরত এবং তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে পাওয়া গেছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের সবার সম্প্রতি ভারত ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এতে ধরে নেয়া যায়, দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন এই ২৩ জনের মধ্যে কতজনের সাম্প্রতিক ভারত ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে, জানতে চাইলে ডা. তাহমিনা শিরীন গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘২৩ জনের মধ্যে ৭ জনের ভারত ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে।’ ওই সাতজনই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

কোভিড-১৯ বিষয়ক ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র সদস্য ডা. আবু জামিল ফয়সাল সংবাদকে বলেছেন, ‘সীমান্ত জেলাগুলোতে সংক্রমণ বাড়ার মূল কারণ হলো মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই চলছে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করার দায়িত্ব স্থানীয় সিভিল প্রশাসনের। এক্ষেত্রে সিভিল প্রশাসনের ব্যর্থতা থাকতে পারে।’

সীমান্তবর্তী এলাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর পেছনে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টেরও প্রভাব রয়েছে জানিয়ে এই জনস্বাস্থ্যবিদ বলেন, ‘স্যাম্পল টেস্টিং ঠিকমত হচ্ছে না, স্যাম্পল টেস্টের ফলস নেগেটিভ রিপোর্টও হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, সংক্রমণ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পরছে।’

সংক্রমণের লাগাম টানতে ডা. আবু জামিল ফয়সাল নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘পরীক্ষার রিপোর্টও সঠিক হতে হবে, তা না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে।’

দেশের ৩০টি জেলার সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি জেলায় সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে। এসব জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ এবং ভারতীয় ধরনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের প্রমাণ পাওয়ায় গত ২৪ মে থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘লকডাউন’র বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। গতকাল এই জেলায় ‘লকডাউন’র মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়েছে প্রশাসন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়া আরও কয়েকটি জেলায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র এক সভায় গত ২৯ মে সীমান্তবর্তী সাত জেলায় ‘লকডাউন’ আরোপের পরামর্শ দেয়া হয়। সর্বশেষ ৩০ মে পরামর্শক কমিটি সীমান্তবর্তী উচ্চ সংক্রমণশীল জেলাগুলোতে ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপের পরামর্শ দিয়েছে।

সীমান্তবর্তী সাত জেলা হলো খুলনা, নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী ও কুষ্টিয়া। এই সাত জেলা ছাড়াও আশপাশের আরও কয়েকটি জেলায় বর্তমানে বাড়তির দিকে রয়েছে করোনা সংক্রমণ।

সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার সংবাদকে বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও আশপাশের এলাকার মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানতে চান না। তাদের ধারণা-তাদের করোনা সংক্রমণ হবে না। এজন্য কেউই মাস্ক পরতে চাইত না, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে চান না।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ‘লকডাউন কার্যকরের’র পর মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

সংক্রমণ বাড়ছে জেলায় জেলায়

সংবাদের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি গতকাল জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সাতক্ষীরা জেলা করোনা রেড এলার্টের আওতায় রয়েছে। সীমান্ত গলিয়ে লোকজনের বৈধ পারাপার রোধ করতে বিজিবি মাঠে রয়েছে।’

সাতক্ষীরায় গত ২৯ মে’র চেয়ে ৩০ মে করোনা সংক্রমণ ৪ শতাংশ বেড়েছে। ২৩ মে জেলায় সংক্রমণের হার ছিল ৩৮ শতাংশ, ২৪ মে ৪১ শতাংশ, ২৫ মে ৪০ শতাংশ, ২৬ মে ৪৬ শতাংশ, ২৭ মে শূন্য থাকার পর ২৮ মে ৪৩ শতাংশ, ২৯ মে ৩৬ শতাংশ এবং ৩০ মে ৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, জেলায় গত ১০ দিনে করোনা শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত পাঁচদিনে ১১৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, ৩০ মে জেলায় ২২০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

এদিকে সংবাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে জেলায় ১৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এক সপ্তাহে দিনাজপুরে করোনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল জেলায় ১৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৯ শতাংশ।

বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, গত এক সপ্তাহে বাগেরহাটে করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ মে’র তথ্য অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ, রাজশাহীতে সংক্রমণের হার ৩৫ দশমিক শতাংশ, খুলনায় ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

মঙ্গলবার, ০১ জুন ২০২১ , ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৯ শাওয়াল ১৪৪২

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা

পরীক্ষা স্বল্পতায় সীমান্তে বাড়ছে সংক্রমণ

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, পরীক্ষার আওতা না বাড়ালে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে

শুধু ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ও অনুপ্রবেশ নয়, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাফেরার কারণেও সীমান্ত এলাকাগুলোতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এছাড়া নমুনা পরীক্ষার স্বল্পতা ও ‘ফলস নেগেটিভ’ রিপোর্টও সীমান্ত এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে ২৩ জনের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এদের প্রায় সবাই সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দা। তবে জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন, এই সংখ্যা আরও বেশি। এ পর্যন্ত কতজনের দেহে করোনার ভারতীয় ধরন সংক্রমিত হয়েছে সে সর্ম্পকে সঠিক চিত্র কারও কাছেই নেই।

জনস্বাস্থ্যবিদদের আশঙ্কা ওই এলাকাগুলোতে নমুনা পরীক্ষার আওতা না বাড়ালে সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন ৩০ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল প্রেস বিফ্রিংয়ে জানান, দেশে এ পর্যন্ত ২৬৩টি ‘সিকোয়েন্স’ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৬১৭.২) পাওয়া গেছে। এটি ভারতফেরত এবং তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে পাওয়া গেছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের সবার সম্প্রতি ভারত ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এতে ধরে নেয়া যায়, দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন এই ২৩ জনের মধ্যে কতজনের সাম্প্রতিক ভারত ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে, জানতে চাইলে ডা. তাহমিনা শিরীন গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘২৩ জনের মধ্যে ৭ জনের ভারত ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে।’ ওই সাতজনই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

কোভিড-১৯ বিষয়ক ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র সদস্য ডা. আবু জামিল ফয়সাল সংবাদকে বলেছেন, ‘সীমান্ত জেলাগুলোতে সংক্রমণ বাড়ার মূল কারণ হলো মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই চলছে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করার দায়িত্ব স্থানীয় সিভিল প্রশাসনের। এক্ষেত্রে সিভিল প্রশাসনের ব্যর্থতা থাকতে পারে।’

সীমান্তবর্তী এলাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর পেছনে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টেরও প্রভাব রয়েছে জানিয়ে এই জনস্বাস্থ্যবিদ বলেন, ‘স্যাম্পল টেস্টিং ঠিকমত হচ্ছে না, স্যাম্পল টেস্টের ফলস নেগেটিভ রিপোর্টও হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, সংক্রমণ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পরছে।’

সংক্রমণের লাগাম টানতে ডা. আবু জামিল ফয়সাল নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘পরীক্ষার রিপোর্টও সঠিক হতে হবে, তা না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে।’

দেশের ৩০টি জেলার সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি জেলায় সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে। এসব জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ এবং ভারতীয় ধরনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের প্রমাণ পাওয়ায় গত ২৪ মে থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘লকডাউন’র বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। গতকাল এই জেলায় ‘লকডাউন’র মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়েছে প্রশাসন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়া আরও কয়েকটি জেলায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র এক সভায় গত ২৯ মে সীমান্তবর্তী সাত জেলায় ‘লকডাউন’ আরোপের পরামর্শ দেয়া হয়। সর্বশেষ ৩০ মে পরামর্শক কমিটি সীমান্তবর্তী উচ্চ সংক্রমণশীল জেলাগুলোতে ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপের পরামর্শ দিয়েছে।

সীমান্তবর্তী সাত জেলা হলো খুলনা, নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী ও কুষ্টিয়া। এই সাত জেলা ছাড়াও আশপাশের আরও কয়েকটি জেলায় বর্তমানে বাড়তির দিকে রয়েছে করোনা সংক্রমণ।

সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার সংবাদকে বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও আশপাশের এলাকার মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানতে চান না। তাদের ধারণা-তাদের করোনা সংক্রমণ হবে না। এজন্য কেউই মাস্ক পরতে চাইত না, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে চান না।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ‘লকডাউন কার্যকরের’র পর মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

সংক্রমণ বাড়ছে জেলায় জেলায়

সংবাদের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি গতকাল জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সাতক্ষীরা জেলা করোনা রেড এলার্টের আওতায় রয়েছে। সীমান্ত গলিয়ে লোকজনের বৈধ পারাপার রোধ করতে বিজিবি মাঠে রয়েছে।’

সাতক্ষীরায় গত ২৯ মে’র চেয়ে ৩০ মে করোনা সংক্রমণ ৪ শতাংশ বেড়েছে। ২৩ মে জেলায় সংক্রমণের হার ছিল ৩৮ শতাংশ, ২৪ মে ৪১ শতাংশ, ২৫ মে ৪০ শতাংশ, ২৬ মে ৪৬ শতাংশ, ২৭ মে শূন্য থাকার পর ২৮ মে ৪৩ শতাংশ, ২৯ মে ৩৬ শতাংশ এবং ৩০ মে ৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, জেলায় গত ১০ দিনে করোনা শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত পাঁচদিনে ১১৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, ৩০ মে জেলায় ২২০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

এদিকে সংবাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে জেলায় ১৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এক সপ্তাহে দিনাজপুরে করোনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল জেলায় ১৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৯ শতাংশ।

বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, গত এক সপ্তাহে বাগেরহাটে করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ মে’র তথ্য অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ, রাজশাহীতে সংক্রমণের হার ৩৫ দশমিক শতাংশ, খুলনায় ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ।