করোনা শনাক্ত ৮ লাখ ছাড়ালো

২৪ দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে সরকারি হিসাবে মারা গেছেন ১২ হাজার ৬১৯ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এক হাজার ৭১০ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যা গত ২৫ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১৮ মে একদিনে ১ হাজার ৮২২ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। এরপর গত ২৫ দিনে এত বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। এর আগের দিন রোববার এক হাজার ৪৪৪ জন এবং শনিবার এক হাজার ৪৩ জনের শনাক্ত হয়েছিল। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ লাখ ৫৪০ জন।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানার সই করা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৫৬৭ জন। তাদের নিয়ে করোনা থেকে সুস্থ হলেন সাত লাখ ৪০ হাজার ৩৭২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ২০ ডিসেম্বর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এরপর ৯৯ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হওয়ায় ২৯ মার্চ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়ায়।

ততদিনে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ, দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে হু হু করে। মাত্র ১৬ দিনে আরও এক লাখ মানুষের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়লে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ এপ্রিল সাত লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যেই গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাত লাখ থেকে আট লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছে ৪৭ দিন। দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন এপ্রিলের তুলনায় কমে এলেও ওই সংখ্যা এখনও এক থেকে দুই হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আর করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা এ বছর ১১ মে ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর এখন পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৮ শতাংশ, আর মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫৮ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগ্রহ হয় ১৮ হাজার ৮৬২টি। বিপরীতে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ১৭৮টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫১৩টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ২৮টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ১৬ লাখ চার হাজার ৪৮৫টি। দেশে বর্তমানে ৫০৩টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১২৯টি পরীক্ষাগারে, জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৪৪টি পরীক্ষাগারে এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৩৩০টি পরীক্ষাগারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৬ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, নারী ১১ জন। দেশে করোনায় এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ৯ হাজার ১১৩ জন আর তিন হাজার ৫০৬ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বয়স বিবেচনায় ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আছেন ৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে আছেন পাঁচজন, আর ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে আছেন চারজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের নয়জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ জন, রাজশাহী বিভাগের আটজন, খুলনা বিভাগের ছয়জন আর সিলেট বিভাগের একজন। ৩৬ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২৮ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ছয়জন আর বাড়িতে দুইজন।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া এক হাজার ৫৬৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৭০০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৬৯ জন, রংপুর বিভাগের ২১ জন, খুলনা বিভাগের ৭৮ জন, বরিশাল বিভাগের ৭২ জন, রাজশাহী বিভাগের ৫১ জন, সিলেট বিভাগের ৬০ জন আর ময়মনসিংহ বিভাগের ১৬ জন। এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ৬১৯ জনের মধ্যে ৯ হাজার ১১৩ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৫০৬ জন নারী।

মঙ্গলবার, ০১ জুন ২০২১ , ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৯ শাওয়াল ১৪৪২

করোনা শনাক্ত ৮ লাখ ছাড়ালো

২৪ দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে সরকারি হিসাবে মারা গেছেন ১২ হাজার ৬১৯ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এক হাজার ৭১০ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যা গত ২৫ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১৮ মে একদিনে ১ হাজার ৮২২ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। এরপর গত ২৫ দিনে এত বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। এর আগের দিন রোববার এক হাজার ৪৪৪ জন এবং শনিবার এক হাজার ৪৩ জনের শনাক্ত হয়েছিল। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ লাখ ৫৪০ জন।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানার সই করা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৫৬৭ জন। তাদের নিয়ে করোনা থেকে সুস্থ হলেন সাত লাখ ৪০ হাজার ৩৭২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ২০ ডিসেম্বর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এরপর ৯৯ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হওয়ায় ২৯ মার্চ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়ায়।

ততদিনে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ, দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে হু হু করে। মাত্র ১৬ দিনে আরও এক লাখ মানুষের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়লে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ এপ্রিল সাত লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যেই গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাত লাখ থেকে আট লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছে ৪৭ দিন। দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন এপ্রিলের তুলনায় কমে এলেও ওই সংখ্যা এখনও এক থেকে দুই হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আর করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা এ বছর ১১ মে ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর এখন পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৮ শতাংশ, আর মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫৮ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগ্রহ হয় ১৮ হাজার ৮৬২টি। বিপরীতে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ১৭৮টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫১৩টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ২৮টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ১৬ লাখ চার হাজার ৪৮৫টি। দেশে বর্তমানে ৫০৩টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১২৯টি পরীক্ষাগারে, জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৪৪টি পরীক্ষাগারে এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৩৩০টি পরীক্ষাগারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৬ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, নারী ১১ জন। দেশে করোনায় এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ৯ হাজার ১১৩ জন আর তিন হাজার ৫০৬ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বয়স বিবেচনায় ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আছেন ৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে আছেন পাঁচজন, আর ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে আছেন চারজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের নয়জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ জন, রাজশাহী বিভাগের আটজন, খুলনা বিভাগের ছয়জন আর সিলেট বিভাগের একজন। ৩৬ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২৮ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ছয়জন আর বাড়িতে দুইজন।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া এক হাজার ৫৬৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৭০০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৬৯ জন, রংপুর বিভাগের ২১ জন, খুলনা বিভাগের ৭৮ জন, বরিশাল বিভাগের ৭২ জন, রাজশাহী বিভাগের ৫১ জন, সিলেট বিভাগের ৬০ জন আর ময়মনসিংহ বিভাগের ১৬ জন। এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ৬১৯ জনের মধ্যে ৯ হাজার ১১৩ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৫০৬ জন নারী।