দশমিনায় ৫০ বছরেও বেড়িবাঁধ হয়নি

জোয়ারে ডুবছে চরাঞ্চল

তেতুলিয়া ও বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর বুক চীরে জেগে ওঠা দশমিনার চরাঞ্চলে দীর্ঘ ৪০ বছরেও তৈরি করা হয়নি বেড়িবাধ। উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরবোরহান, চরশাহজালাল, চরহাদী, লালচর, চর ফাতেমা, চরবাশবাড়ীয়া, চরআজমাইনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস।

উপজেলায় দীর্ঘ ৪০ বছর আগে দশমিনার চরাঞ্চলে জনবসতি গড়ে ওঠার পড় থেকে চরাঞ্চলের মানুষ বেড়িবাঁধের জন্য সভা সমাবেশ এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্বারকলিপিসহ বিভিন্নভাবে আবেদন নিবেদন করলেও বেড়িবাঁধ তৈরির কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বেড়িবাঁধ না থাকায় নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে দশমিনার চরাঞ্চলে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার ফসল হানি ঘটছে। দীর্ঘ ৪০ বছরে চরাঞ্চলে কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ ও মানুষের জীবনমান বৃদ্ধি পেলেও এখনো বর্ষা মৌসুমে জোয়ারে ৩-৪ ফুট পানিতে ডুবে থাকে আর ভাটায় ভেসে ওঠে চরাঞ্চল। বর্তমানে দশমিনার চরাঞ্চলে ১৪টি প্রাথমিক ও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বর্ষা মৌসুমে নৌকায় করে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়।

উপজেলার চর শাহজালালের কৃষক মোকলেছ হাওলাদার (৫২) জানান, চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ না থাকায় ফসলের ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকে প্রতিবছর হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। চর শাহজালালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. খলিলুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের থেকে ৩-৪ ফুট বেশি হওয়ায় শত শত বাসা বাড়ি তলিয়ে রয়েছে।

তিনি জানান, বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিবছর ঝড় বন্যা জলোচ্ছাসে চরাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বেড়িবাঁধের অভাবে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে চরের মানুষকে।

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান জানান, বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে চরাঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। তিনি জানান, চরাঞ্চলের মানুষের এখন প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে বেড়িবাধ।

চরবোরহান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজির আহমেদ সরদার জানান, উপজেলা পরিষদের সভায় একাধিকবার চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছি। তিনি আরও জানান, চরাঞ্চলের মানুষের এখন একটাই দাবি ত্রাণ নয় বেড়িবাঁধ চাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিন জানান, চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য এস.এম শাহজাদা জানান, দশমিনার চরাঞ্চলে বেড়িবাধ তৈরির জন্য ডিও লেটারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

বুধবার, ০২ জুন ২০২১ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২০ শাওয়াল ১৪৪২

দশমিনায় ৫০ বছরেও বেড়িবাঁধ হয়নি

জোয়ারে ডুবছে চরাঞ্চল

আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল, দশমিনা (পটুয়াখালী)

তেতুলিয়া ও বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর বুক চীরে জেগে ওঠা দশমিনার চরাঞ্চলে দীর্ঘ ৪০ বছরেও তৈরি করা হয়নি বেড়িবাধ। উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরবোরহান, চরশাহজালাল, চরহাদী, লালচর, চর ফাতেমা, চরবাশবাড়ীয়া, চরআজমাইনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস।

উপজেলায় দীর্ঘ ৪০ বছর আগে দশমিনার চরাঞ্চলে জনবসতি গড়ে ওঠার পড় থেকে চরাঞ্চলের মানুষ বেড়িবাঁধের জন্য সভা সমাবেশ এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্বারকলিপিসহ বিভিন্নভাবে আবেদন নিবেদন করলেও বেড়িবাঁধ তৈরির কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বেড়িবাঁধ না থাকায় নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে দশমিনার চরাঞ্চলে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার ফসল হানি ঘটছে। দীর্ঘ ৪০ বছরে চরাঞ্চলে কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ ও মানুষের জীবনমান বৃদ্ধি পেলেও এখনো বর্ষা মৌসুমে জোয়ারে ৩-৪ ফুট পানিতে ডুবে থাকে আর ভাটায় ভেসে ওঠে চরাঞ্চল। বর্তমানে দশমিনার চরাঞ্চলে ১৪টি প্রাথমিক ও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বর্ষা মৌসুমে নৌকায় করে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়।

উপজেলার চর শাহজালালের কৃষক মোকলেছ হাওলাদার (৫২) জানান, চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ না থাকায় ফসলের ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকে প্রতিবছর হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। চর শাহজালালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. খলিলুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের থেকে ৩-৪ ফুট বেশি হওয়ায় শত শত বাসা বাড়ি তলিয়ে রয়েছে।

তিনি জানান, বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিবছর ঝড় বন্যা জলোচ্ছাসে চরাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বেড়িবাঁধের অভাবে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে চরের মানুষকে।

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান জানান, বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে চরাঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। তিনি জানান, চরাঞ্চলের মানুষের এখন প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে বেড়িবাধ।

চরবোরহান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজির আহমেদ সরদার জানান, উপজেলা পরিষদের সভায় একাধিকবার চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছি। তিনি আরও জানান, চরাঞ্চলের মানুষের এখন একটাই দাবি ত্রাণ নয় বেড়িবাঁধ চাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিন জানান, চরাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য এস.এম শাহজাদা জানান, দশমিনার চরাঞ্চলে বেড়িবাধ তৈরির জন্য ডিও লেটারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।