রোকেয়া উপাচার্য কলিম উল্লাহর মেয়াদ শেষ, ঢাকায় বসে নিয়োগ বদলি-বাণিজ্য চালাচ্ছে

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত সোমবার। তারপরও ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বসে ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাক ডেট দেখিয়ে বিভিন্ন পদে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ ভাউচার বাণিজ্যের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন গণবদলিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যেগে মানববন্ধন বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১ জুন চার বছরের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান কলিম উল্লাহ। সেই হিসাবে সোমবার তার চার বছর পূর্ণ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সুবিধাসহ সব সুবিধা গ্রহণ আব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্যের দায়িত্বেও শেষ দিনেও ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বসে বসে আইন লঙ্ঘন করে বিভিন্ন পদে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দিয়ে চলেছেন। গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের পরিচালক হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিউল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট হিসেবে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান, একই হলের সহকারী প্রভোস্ট হিসেবে একই বিভাগের প্রভাষক রহমতুল্লাহকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, অনেককে মেয়াদ পূর্তির আগেই অব্যাহতি দিয়ে পছন্দের লোককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট শাহীনুর রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, ড. রশিদুল ইসলামকে প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

দায়িত্বের শেষ দিনেও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দপ্তর বদলি করেছেন। এর মধ্যে একই দিনে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহকারী রেজিস্ট্রার তাপস গোস্বামীকে ডেসপাস শাখায়, ডেসডাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোস্তফা আল আরিফ তাহেরকে কলা অনুষদে এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিসের সেকশন অফিসার সিরাজুম মুনিরাকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে, পরিবহন পুলের উপ রেজিস্ট্রার তারিতুল ইসলামকে এস্টেট শাখায়, এস্টেট শাখার উপ-রেজিস্ট্রার শামসুজ্জামানকে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে এবং সেন্ট্রাল লাইব্রেরির উপ-রেজিস্ট্রার নুরজাহানকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিসে বদলি করেছেন।

সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিউর রহমান অভিযোগ করেছেন, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী উপাচার্য হিসেবে চার বছর মেয়াদ সোমবার শেষ হয়েছে। তারপরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সুবিধা ভোগ করছেন। তাছাড়া ইউজিসি অনুমোদিত ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বসে বসে এখনও তিনি আগের তারিখ দেখিয়ে বিভিন্ন ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করে চলেছেন।

এদিকে গতকাল দুপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। সমাবেশে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া, স্টুডেন্ট রাইটস মুভমেন্টের সভাপতি মিলন মাহমুদ সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ, কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলামসহ অন্য নেতারা।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক কলিমুল্লাহ’র ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বুধবার, ০২ জুন ২০২১ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২০ শাওয়াল ১৪৪২

রোকেয়া উপাচার্য কলিম উল্লাহর মেয়াদ শেষ, ঢাকায় বসে নিয়োগ বদলি-বাণিজ্য চালাচ্ছে

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত সোমবার। তারপরও ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বসে ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাক ডেট দেখিয়ে বিভিন্ন পদে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ ভাউচার বাণিজ্যের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন গণবদলিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যেগে মানববন্ধন বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১ জুন চার বছরের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান কলিম উল্লাহ। সেই হিসাবে সোমবার তার চার বছর পূর্ণ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সুবিধাসহ সব সুবিধা গ্রহণ আব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্যের দায়িত্বেও শেষ দিনেও ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বসে বসে আইন লঙ্ঘন করে বিভিন্ন পদে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দিয়ে চলেছেন। গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের পরিচালক হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিউল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট হিসেবে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান, একই হলের সহকারী প্রভোস্ট হিসেবে একই বিভাগের প্রভাষক রহমতুল্লাহকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, অনেককে মেয়াদ পূর্তির আগেই অব্যাহতি দিয়ে পছন্দের লোককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট শাহীনুর রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, ড. রশিদুল ইসলামকে প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

দায়িত্বের শেষ দিনেও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দপ্তর বদলি করেছেন। এর মধ্যে একই দিনে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহকারী রেজিস্ট্রার তাপস গোস্বামীকে ডেসপাস শাখায়, ডেসডাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোস্তফা আল আরিফ তাহেরকে কলা অনুষদে এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিসের সেকশন অফিসার সিরাজুম মুনিরাকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে, পরিবহন পুলের উপ রেজিস্ট্রার তারিতুল ইসলামকে এস্টেট শাখায়, এস্টেট শাখার উপ-রেজিস্ট্রার শামসুজ্জামানকে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে এবং সেন্ট্রাল লাইব্রেরির উপ-রেজিস্ট্রার নুরজাহানকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিসে বদলি করেছেন।

সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিউর রহমান অভিযোগ করেছেন, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী উপাচার্য হিসেবে চার বছর মেয়াদ সোমবার শেষ হয়েছে। তারপরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সুবিধা ভোগ করছেন। তাছাড়া ইউজিসি অনুমোদিত ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বসে বসে এখনও তিনি আগের তারিখ দেখিয়ে বিভিন্ন ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করে চলেছেন।

এদিকে গতকাল দুপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। সমাবেশে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া, স্টুডেন্ট রাইটস মুভমেন্টের সভাপতি মিলন মাহমুদ সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ, কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলামসহ অন্য নেতারা।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক কলিমুল্লাহ’র ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।