সীমান্ত জেলায় বাড়ছে মৃত্যু

সংক্রমণের পাশাপাশি করোনায় মৃত্যুও বাড়ছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে। গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৩৪ জনের মধ্যে ১০ জনই রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দা। গতকাল প্রায় দুই হাজার মানুষের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে; এটি গত একমাসের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বুলেটিনে গতকাল বলা হয়, এই মুহূর্তে ১১টি জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়তির দিকে।

এই পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী জেলা ও উচ্চ সংক্রমিত এলাকায় অঞ্চলভিত্তিক ‘সম্পূর্ণ লকডাউন’ (মানুষকে অবরুদ্ধ রাখা) দেয়ার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’।

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ‘লকডাউন’ পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে যেসব রোগী হাসপাতালের বাইরে অর্থাৎ বাসায় রয়েছেন তাদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা, রোগীর সংস্পর্শে আসা লোকজনকে কোয়ারেন্টিন করা এবং ভারত থেকে আসা লোকজন ও তাদের সংস্পর্শে থাকা সবার কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে সীমান্তবর্তী জেলা থেকে সংক্রমণ পর্যায়ক্রমে ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।

করোনা সংক্রমণের লাগাম টানতে এবার সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতেও ‘কঠোর লকডাউন’র বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্তমানে ‘লকডাউন’ চলমান রয়েছে।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা ‘লকডাউন’র ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আগের মতো এবার আর ঢিলেঢালা লকডাউন দেখা যাবে না। এবার তা কঠোরভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে। তবে সবাইকে এই লকডাউনের বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে হবে, বিশেষ করে জনসাধারণকে।’

নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় গতকাল ‘বিশেষ লকডাউন’ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। এর আওতায় গণপরিবহন নিষিদ্ধসহ ১৫ দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

দুই বিভাগের সীমান্ত জেলায়

উচ্চ সংক্রমণ

কাভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গতকাল জানিয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, দেশের সার্বিক কোডিড-১৯ পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী- রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, নওগাঁ এবং খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, বাগেরহাটে সংক্রমণের উচ্চহার দেখা যাচ্ছে। এছাড়া আরও কিছু জেলাতে উচ্চ সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। তারমধ্যে কমিউনিটি পর্যায়ে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্টের (ধরন) উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

চাপ কমেছে ঢাকার হাসপাতালে, বেড়েছে সীমান্ত জেলায়

বর্তমানে রাজধানীর ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কম আছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম গতকাল এক স্বাস্থ্য বুলেটিনে বলেছেন, করোনা শনাক্ত হারের বিপরীতে ১১টি জেলায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে সতর্কতা অবলম্বনের ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখানোর সুযোগ নেই-মন্তব্য করে ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘মে মাস পর্যন্ত ৪১ হাজার ৪০৮ জন নতুন রোগীকে চিহ্নিত করা গেছে। এপ্রিল মাসের সঙ্গে তুলনা করলে এ সংখ্যা কিছুটা কম। কিন্তু সামগ্রিক বিবেচনায় আমরা চাই যে, আরও কমে থাকুক।’

এই মুহূর্তে ঢাকার কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর মোট শয্যার সিংহভাগই খালি আছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক।

জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘মানুষের জীবন জীবিকার তাগিদে হয়তো ‘পুরোপুরি লকডাউনে’ যাওয়া যাচ্ছে না; গরিব ও দিন মজুরদের ঘরে বন্দী রাখা সম্ভবও নয়, পেটের তাগিদে সে বের হবেই। কিন্তু রোগী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে অর্থাৎ হাসপাতালের বাইরে থাকা সব রোগী আইসোলেশনে রাখতে পারলে; মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ বা সীমিত করা এবং ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের সংস্পর্শে আসা সবারই কোয়ারেন্টিন করতে পারলে আপাতত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর সংক্রমণের স্থায়ী নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন টিকা; সেটি এখন আমাদের হাতে পর্যাপ্ত নেই।’

একদিনের ব্যবধানে মৃত্যু কমলেও শনাক্ত ২ হাজারের কাছাকাছি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বিকেলে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এক হাজার ৯৮৮ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের।

দৈনিক রোগী শনাক্তের এই সংখ্যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি দুই হাজার ১৭৭ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত একদিনে শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট লাখ চার হাজার ২৯৩ জনে। আর এদিন মারা যাওয়া ৩৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৬৯৪ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯১৪ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়াল সাত লাখ ৪৪ হাজার ৬৫ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৫০৯টি ল্যাবে ১৮ হাজার ২৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার ২২টি।

গত একদিনে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৪ জনের মধ্যে পুরুষ ২১ জন এবং নারী ১৩ জন। এর মধ্যে ২৮ জন সরকারি হাসপাতালে, ছয় জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। আর এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হওয়া ১২ হাজার ৬৯৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ১৬০ জন এবং নারী তিন হাজার ৫৩৪ জন।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ১৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, আট জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, পাঁচ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং তিন জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

বিভাগ ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই ৩৪ জনের মধ্যে ১১ জন ঢাকা বিভাগের, পাঁচ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, পাঁচ জন রাজশাহী বিভাগের, পাঁচ জন খুলনা বিভাগের, দুই জন বরিশাল বিভাগের, তিন জন সিলেট বিভাগের এবং তিন জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

বৃহস্পতিবার, ০৩ জুন ২০২১ , ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২১ শাওয়াল ১৪৪২

সীমান্ত জেলায় বাড়ছে মৃত্যু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

সংক্রমণের পাশাপাশি করোনায় মৃত্যুও বাড়ছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে। গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৩৪ জনের মধ্যে ১০ জনই রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দা। গতকাল প্রায় দুই হাজার মানুষের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে; এটি গত একমাসের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বুলেটিনে গতকাল বলা হয়, এই মুহূর্তে ১১টি জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়তির দিকে।

এই পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী জেলা ও উচ্চ সংক্রমিত এলাকায় অঞ্চলভিত্তিক ‘সম্পূর্ণ লকডাউন’ (মানুষকে অবরুদ্ধ রাখা) দেয়ার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’।

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ‘লকডাউন’ পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে যেসব রোগী হাসপাতালের বাইরে অর্থাৎ বাসায় রয়েছেন তাদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা, রোগীর সংস্পর্শে আসা লোকজনকে কোয়ারেন্টিন করা এবং ভারত থেকে আসা লোকজন ও তাদের সংস্পর্শে থাকা সবার কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে সীমান্তবর্তী জেলা থেকে সংক্রমণ পর্যায়ক্রমে ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।

করোনা সংক্রমণের লাগাম টানতে এবার সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতেও ‘কঠোর লকডাউন’র বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্তমানে ‘লকডাউন’ চলমান রয়েছে।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা ‘লকডাউন’র ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আগের মতো এবার আর ঢিলেঢালা লকডাউন দেখা যাবে না। এবার তা কঠোরভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে। তবে সবাইকে এই লকডাউনের বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে হবে, বিশেষ করে জনসাধারণকে।’

নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় গতকাল ‘বিশেষ লকডাউন’ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। এর আওতায় গণপরিবহন নিষিদ্ধসহ ১৫ দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

দুই বিভাগের সীমান্ত জেলায়

উচ্চ সংক্রমণ

কাভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গতকাল জানিয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, দেশের সার্বিক কোডিড-১৯ পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী- রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, নওগাঁ এবং খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা, বাগেরহাটে সংক্রমণের উচ্চহার দেখা যাচ্ছে। এছাড়া আরও কিছু জেলাতে উচ্চ সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। তারমধ্যে কমিউনিটি পর্যায়ে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্টের (ধরন) উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

চাপ কমেছে ঢাকার হাসপাতালে, বেড়েছে সীমান্ত জেলায়

বর্তমানে রাজধানীর ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কম আছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম গতকাল এক স্বাস্থ্য বুলেটিনে বলেছেন, করোনা শনাক্ত হারের বিপরীতে ১১টি জেলায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে সতর্কতা অবলম্বনের ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখানোর সুযোগ নেই-মন্তব্য করে ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘মে মাস পর্যন্ত ৪১ হাজার ৪০৮ জন নতুন রোগীকে চিহ্নিত করা গেছে। এপ্রিল মাসের সঙ্গে তুলনা করলে এ সংখ্যা কিছুটা কম। কিন্তু সামগ্রিক বিবেচনায় আমরা চাই যে, আরও কমে থাকুক।’

এই মুহূর্তে ঢাকার কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর মোট শয্যার সিংহভাগই খালি আছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক।

জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘মানুষের জীবন জীবিকার তাগিদে হয়তো ‘পুরোপুরি লকডাউনে’ যাওয়া যাচ্ছে না; গরিব ও দিন মজুরদের ঘরে বন্দী রাখা সম্ভবও নয়, পেটের তাগিদে সে বের হবেই। কিন্তু রোগী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে অর্থাৎ হাসপাতালের বাইরে থাকা সব রোগী আইসোলেশনে রাখতে পারলে; মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ বা সীমিত করা এবং ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের সংস্পর্শে আসা সবারই কোয়ারেন্টিন করতে পারলে আপাতত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর সংক্রমণের স্থায়ী নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন টিকা; সেটি এখন আমাদের হাতে পর্যাপ্ত নেই।’

একদিনের ব্যবধানে মৃত্যু কমলেও শনাক্ত ২ হাজারের কাছাকাছি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বিকেলে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এক হাজার ৯৮৮ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের।

দৈনিক রোগী শনাক্তের এই সংখ্যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি দুই হাজার ১৭৭ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত একদিনে শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট লাখ চার হাজার ২৯৩ জনে। আর এদিন মারা যাওয়া ৩৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৬৯৪ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯১৪ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়াল সাত লাখ ৪৪ হাজার ৬৫ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৫০৯টি ল্যাবে ১৮ হাজার ২৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার ২২টি।

গত একদিনে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৪ জনের মধ্যে পুরুষ ২১ জন এবং নারী ১৩ জন। এর মধ্যে ২৮ জন সরকারি হাসপাতালে, ছয় জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। আর এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হওয়া ১২ হাজার ৬৯৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ১৬০ জন এবং নারী তিন হাজার ৫৩৪ জন।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ১৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, আট জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, পাঁচ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং তিন জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

বিভাগ ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই ৩৪ জনের মধ্যে ১১ জন ঢাকা বিভাগের, পাঁচ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, পাঁচ জন রাজশাহী বিভাগের, পাঁচ জন খুলনা বিভাগের, দুই জন বরিশাল বিভাগের, তিন জন সিলেট বিভাগের এবং তিন জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।