বাজেটোত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন

বাড়বে বিনিয়োগ, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান, আশা অর্থমন্ত্রীর

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, ব্যবসায়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়লে উৎপাদন বাড়বে আর উৎপাদনে যেতে হলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। কারণ লোকবল ছাড়া উৎপাদন সম্ভব নয়। এ কারণে ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। গতকাল বাজেটোত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেলে ৩টায় জাতীয় সংসদে করোনা মহামারীর প্রকোপের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের তৃতীয়বারের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট হতে যাচ্ছে ৫০তম এ বাজেট। আলোচিত এই বাজেটে অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ। অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ লাইনটা ব্যবহার করতে চাই। আমাদের দেশীয় প্রোডাক্টকে বাড়তি সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে বাজেটে যা দেখেছেন সেটাই যে থাকবে তা নয়, আমরা কিছু ফ্লেক্সিবল থাকব। আরও পরিবর্তন করব, কখনও বাড়াবো না। আমরা সব সময় প্রয়োজনে ট্যাক্স ও ভ্যাট কমাবো।

বাজেটের ঘাটতির

অর্থসংস্থানের উৎস

ঘাটতি পূরণ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেয়া হবে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক খাত থেকে নেয়া হবে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে নেয়া হবে ৫ হাজার এক কোটি টাকা।

প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব

করোনাভাইরাস মহামারী হানা দেয়ার পরও গত বছর বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৮ দশমিক ২ শতাংশ ধরেছিল সরকার। তা অর্জিত না হওয়ায় মহামারীর বাস্তবতায় এবার সেই লক্ষ্যে রাশ টেনেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যেও আমাদের প্রবৃদ্ধি ভালো হয়েছে। আমাদের অর্থনীতির অবস্থা এখন সারাবিশ্বের আলোচনার বিষয়। লক্ষ্য ঠিকমতো বাস্তবায়ন করতে পারলে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। গত দুই বছর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঊর্ধ্বগতির উদাহরণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালের ৩০ জুন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২০ সালের ৩০ জুন তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এক বছরে বেড়েছে ৪ বিলিয়ন। এরপর ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর তা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৩ বিলিয়ন ডলারে। আর বৃহস্পতিবার (৩ জুন) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে। দুই বছরও হয়নি রিজার্ভ বেড়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার। তার মানে আমাদের যোগ্যতা আছে।

ঋণ নেয়া নয়, দেয়ার সময় এসেছে

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আজ থেকে দুই বছর আগে আমি বলেছিলাম, আজ আমরা ঋণ নিচ্ছি কিন্তু সময় এসে গেছে, আমরা আর ঋণ নেবো না, ঋণ দেবো। এখন আমাদের ঋণ দেয়ার সময় এসেছে।

বাজেট ঘাটতি ও রাজস্ব আয়ের ভারসাম্য বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতি সম্প্রসারণশীল। এখন বিভিন্ন দেশের কর্ণধার যারা আছেন, তারা সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণের পক্ষে। আমাদের যে অবস্থান, শুধু এশিয়াতে নয়, সারাবিশ্বেই আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আলোচনার বিষয়। আপনারা এটি মানেন আর না মানেন, এটিই সত্যি। আমাদের যে জিডিপি, সে অনুপাতে ঋণ খুব বেশি বলা যাবে না। আমাদের জিডিপির সঙ্গে ঋণের অনুপাত ৪০-এর অনেক নিচে। এই অনুপাত কিন্তু ভারত-চীনের অনেক বেশি। তাই, আমাদের যে ঘাটতি আছে, সেটি আমরা বহন করতে পারব’ বলেন তিনি।

করের হার কমানোয় রাজস্ব

আদায় বাড়বে

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা লক্ষ্য রেখেছি আইনটিকে আমরা সহজ করব। আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যদি আমরা আইনটিকে সহজ করতে পারি, ট্যাক্স পেয়ারদের যদি এই কাজে সম্পৃক্ত করতে পারি, তাহলে রেভিনিউ জেনারেশন অনেক বৃদ্ধি পাবে। রেভিনিউ জেনারেশন বাড়াতে পৃথিবীর অনেক দেশ চেষ্টা করেছিল। এমনকি আমেরিকায়ও কোন একসময় ৭৫ শতাংশ ট্যাক্সের পরিমাণ ছিল, সেটা এখন নেই। বেশি করে ট্যাক্স আদায় করা যায় কিনা, সেটি সবাই চেষ্টা করেছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি যদি আমরা রেভিনিউয়ের হার আস্তে আস্তে কমাই, তাহলে আমাদের কালেকশন বাড়বে। আমরা যে কর কমালাম, আমরা বিশ্বাস করি ‘উই উইল বি উইনার’। করের হার কমানো হয়েছে, আশা করি আমাদের রেভিনিউ কালেকশন আরও বাড়বে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী যারা বলছেন ব্যবসায়ীবান্ধব বাজেট করার কথা। ব্যবসায়ী শব্দটি ফ্লেক্সিবল জব, এটাকে ফিক্সড করে রাখা যাবে না। প্রত্যেক সময় মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়। চাহিদা পূরণে ব্যবসায়ীদেরও পরিবর্তন আসে। তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্যও পরিবর্তন আসে। সুতরাং এটা কখনও ফিক্স রাখা যাবে না। আমাদের সিচুয়েশন কী ডিমান্ড করে, সারাবিশ্ব কী করছে, সেটি দেখতে হবে। উন্নত বিশ্ব যদি পিছিয়ে পড়ে, তাহলে আমরা কিন্তু এগোতে পারব না। কারণ উন্নত বিশ্বের মাধ্যমে কিন্তু আমরা সমৃদ্ধ। আজকে মার্কিন ইকোনমি এটাই আমাদের শেখায়, আমরা একে অন্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আগামীতে থাকছে কি?

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এর পক্ষে এবং বিপক্ষে নানা ধরনের অভিমত রয়েছে। কেউ বলছেন, এ সুযোগ থাকা উচিত নয় আবার কেউ বলছেন, এটির পক্ষে সুযোগ রাখা উচিত। তাই এ মুহূর্তে কিছু বলছি না। আরও কিছুদিন ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত দেবো, এ সুযোগ রাখা হবে কী হবে না। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে সব তথ্য আসেনি। অপ্রদর্শিত অর্থ মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার যে সুযোগ আমরা দিয়েছিলাম, সেই সুযোগ কতজন নিল। সে সম্পর্কে আমার কাছে শতভাগ তথ্য এসে পৌঁছায়নি।

শনিবার, ০৫ জুন ২০২১ , ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৩ শাওয়াল ১৪৪২

বাজেটোত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন

বাড়বে বিনিয়োগ, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান, আশা অর্থমন্ত্রীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, ব্যবসায়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়লে উৎপাদন বাড়বে আর উৎপাদনে যেতে হলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। কারণ লোকবল ছাড়া উৎপাদন সম্ভব নয়। এ কারণে ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। গতকাল বাজেটোত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেলে ৩টায় জাতীয় সংসদে করোনা মহামারীর প্রকোপের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের তৃতীয়বারের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট হতে যাচ্ছে ৫০তম এ বাজেট। আলোচিত এই বাজেটে অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ। অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ লাইনটা ব্যবহার করতে চাই। আমাদের দেশীয় প্রোডাক্টকে বাড়তি সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে বাজেটে যা দেখেছেন সেটাই যে থাকবে তা নয়, আমরা কিছু ফ্লেক্সিবল থাকব। আরও পরিবর্তন করব, কখনও বাড়াবো না। আমরা সব সময় প্রয়োজনে ট্যাক্স ও ভ্যাট কমাবো।

বাজেটের ঘাটতির

অর্থসংস্থানের উৎস

ঘাটতি পূরণ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেয়া হবে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক খাত থেকে নেয়া হবে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে নেয়া হবে ৫ হাজার এক কোটি টাকা।

প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব

করোনাভাইরাস মহামারী হানা দেয়ার পরও গত বছর বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৮ দশমিক ২ শতাংশ ধরেছিল সরকার। তা অর্জিত না হওয়ায় মহামারীর বাস্তবতায় এবার সেই লক্ষ্যে রাশ টেনেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যেও আমাদের প্রবৃদ্ধি ভালো হয়েছে। আমাদের অর্থনীতির অবস্থা এখন সারাবিশ্বের আলোচনার বিষয়। লক্ষ্য ঠিকমতো বাস্তবায়ন করতে পারলে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। গত দুই বছর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঊর্ধ্বগতির উদাহরণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালের ৩০ জুন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২০ সালের ৩০ জুন তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এক বছরে বেড়েছে ৪ বিলিয়ন। এরপর ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর তা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৩ বিলিয়ন ডলারে। আর বৃহস্পতিবার (৩ জুন) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে। দুই বছরও হয়নি রিজার্ভ বেড়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার। তার মানে আমাদের যোগ্যতা আছে।

ঋণ নেয়া নয়, দেয়ার সময় এসেছে

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আজ থেকে দুই বছর আগে আমি বলেছিলাম, আজ আমরা ঋণ নিচ্ছি কিন্তু সময় এসে গেছে, আমরা আর ঋণ নেবো না, ঋণ দেবো। এখন আমাদের ঋণ দেয়ার সময় এসেছে।

বাজেট ঘাটতি ও রাজস্ব আয়ের ভারসাম্য বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতি সম্প্রসারণশীল। এখন বিভিন্ন দেশের কর্ণধার যারা আছেন, তারা সম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণের পক্ষে। আমাদের যে অবস্থান, শুধু এশিয়াতে নয়, সারাবিশ্বেই আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আলোচনার বিষয়। আপনারা এটি মানেন আর না মানেন, এটিই সত্যি। আমাদের যে জিডিপি, সে অনুপাতে ঋণ খুব বেশি বলা যাবে না। আমাদের জিডিপির সঙ্গে ঋণের অনুপাত ৪০-এর অনেক নিচে। এই অনুপাত কিন্তু ভারত-চীনের অনেক বেশি। তাই, আমাদের যে ঘাটতি আছে, সেটি আমরা বহন করতে পারব’ বলেন তিনি।

করের হার কমানোয় রাজস্ব

আদায় বাড়বে

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা লক্ষ্য রেখেছি আইনটিকে আমরা সহজ করব। আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যদি আমরা আইনটিকে সহজ করতে পারি, ট্যাক্স পেয়ারদের যদি এই কাজে সম্পৃক্ত করতে পারি, তাহলে রেভিনিউ জেনারেশন অনেক বৃদ্ধি পাবে। রেভিনিউ জেনারেশন বাড়াতে পৃথিবীর অনেক দেশ চেষ্টা করেছিল। এমনকি আমেরিকায়ও কোন একসময় ৭৫ শতাংশ ট্যাক্সের পরিমাণ ছিল, সেটা এখন নেই। বেশি করে ট্যাক্স আদায় করা যায় কিনা, সেটি সবাই চেষ্টা করেছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি যদি আমরা রেভিনিউয়ের হার আস্তে আস্তে কমাই, তাহলে আমাদের কালেকশন বাড়বে। আমরা যে কর কমালাম, আমরা বিশ্বাস করি ‘উই উইল বি উইনার’। করের হার কমানো হয়েছে, আশা করি আমাদের রেভিনিউ কালেকশন আরও বাড়বে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী যারা বলছেন ব্যবসায়ীবান্ধব বাজেট করার কথা। ব্যবসায়ী শব্দটি ফ্লেক্সিবল জব, এটাকে ফিক্সড করে রাখা যাবে না। প্রত্যেক সময় মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়। চাহিদা পূরণে ব্যবসায়ীদেরও পরিবর্তন আসে। তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্যও পরিবর্তন আসে। সুতরাং এটা কখনও ফিক্স রাখা যাবে না। আমাদের সিচুয়েশন কী ডিমান্ড করে, সারাবিশ্ব কী করছে, সেটি দেখতে হবে। উন্নত বিশ্ব যদি পিছিয়ে পড়ে, তাহলে আমরা কিন্তু এগোতে পারব না। কারণ উন্নত বিশ্বের মাধ্যমে কিন্তু আমরা সমৃদ্ধ। আজকে মার্কিন ইকোনমি এটাই আমাদের শেখায়, আমরা একে অন্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আগামীতে থাকছে কি?

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এর পক্ষে এবং বিপক্ষে নানা ধরনের অভিমত রয়েছে। কেউ বলছেন, এ সুযোগ থাকা উচিত নয় আবার কেউ বলছেন, এটির পক্ষে সুযোগ রাখা উচিত। তাই এ মুহূর্তে কিছু বলছি না। আরও কিছুদিন ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত দেবো, এ সুযোগ রাখা হবে কী হবে না। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে সব তথ্য আসেনি। অপ্রদর্শিত অর্থ মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার যে সুযোগ আমরা দিয়েছিলাম, সেই সুযোগ কতজন নিল। সে সম্পর্কে আমার কাছে শতভাগ তথ্য এসে পৌঁছায়নি।