প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর মিছিলে ওয়াসা

প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের বেশিরভাগ সংস্থার মধ্যে সময় ও ব্যয় বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর মিছিলে যোগ দিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। প্রতিষ্ঠানটির চলমান ১০ প্রকল্পের ৮টির কাজই নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়া প্রকল্পগুলোর মেয়াদ একে একে বাড়ানো হচ্ছে। এর সঙ্গে অবধারিতভাবে বাড়ছে ব্যয়। ইতোমধ্যে চারটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ১০ প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা, যা আগে ছিল ২৬ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকল্পের গতি কেন ধীর আর ব্যয় কেন বাড়ছে সেটার একটি ব্যাখ্যা গণমাধ্যমকে দিয়েছে ওয়াসা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সরকার ও দাতা সংস্থার বিধিবিধান, রাস্তা খননের অনুমতি, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ও করোনা মহামারির মতো কারণে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আমরা জানতে চাইব, প্রকল্প হাতে নেয়ার আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল কিনা। রাস্তা খুঁড়তে যে অনুমতি লাগবে বা জমি অধিগ্রহণ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার- সেটা প্রকল্প হাতে নেয়ার সময়ই বিবেচনায় নেয়া এবং সে অনুযায়ী মেয়াদ ও ব্যয় নির্ধারণ করার কথা।

সরকার ও দাতা সংস্থার বিধিবিধানের কারণে নাকি প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের অযোগ্যতা-অদক্ষতা আর অনিয়মের কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়- সেটা গবেষণার বিষয় হতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, নির্ধারিত সময়ে ওয়াসার প্রকল্পগুলো শেষ না হওয়া ও প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারীর ওপর কারও হাত নেই। মহামারী চলাকালে ওয়াসা পানির দাম বাড়াতে পারল কিন্তু একটি প্রকল্পের কাজেও কাক্সিক্ষত অগ্রগতি ঘটাতে পারল না।

ওয়াসার কাজের সঙ্গে নাগরিকদের সেবা প্রাপ্তির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাজে দেরি হলে নাগরিকদের সুপেয় পানি পাওয়া বা পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে অসন্তুষ্টি রয়েছে। যথাসময়ে যথা কাজ করে নাগরিকদের অসন্তোষ দূর করার কোন চেষ্টা ওয়াসার আছে বলে মনে হয় না।

প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। ঢালাওভাবে মেয়াদ বা ব্যয় বাড়ানোর আগে প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি আদায় করতে হবে। তাদের কাজে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।

শনিবার, ০৫ জুন ২০২১ , ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৩ শাওয়াল ১৪৪২

প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর মিছিলে ওয়াসা

প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের বেশিরভাগ সংস্থার মধ্যে সময় ও ব্যয় বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর মিছিলে যোগ দিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। প্রতিষ্ঠানটির চলমান ১০ প্রকল্পের ৮টির কাজই নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়া প্রকল্পগুলোর মেয়াদ একে একে বাড়ানো হচ্ছে। এর সঙ্গে অবধারিতভাবে বাড়ছে ব্যয়। ইতোমধ্যে চারটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ১০ প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা, যা আগে ছিল ২৬ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকল্পের গতি কেন ধীর আর ব্যয় কেন বাড়ছে সেটার একটি ব্যাখ্যা গণমাধ্যমকে দিয়েছে ওয়াসা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সরকার ও দাতা সংস্থার বিধিবিধান, রাস্তা খননের অনুমতি, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ও করোনা মহামারির মতো কারণে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আমরা জানতে চাইব, প্রকল্প হাতে নেয়ার আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল কিনা। রাস্তা খুঁড়তে যে অনুমতি লাগবে বা জমি অধিগ্রহণ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার- সেটা প্রকল্প হাতে নেয়ার সময়ই বিবেচনায় নেয়া এবং সে অনুযায়ী মেয়াদ ও ব্যয় নির্ধারণ করার কথা।

সরকার ও দাতা সংস্থার বিধিবিধানের কারণে নাকি প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের অযোগ্যতা-অদক্ষতা আর অনিয়মের কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়- সেটা গবেষণার বিষয় হতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, নির্ধারিত সময়ে ওয়াসার প্রকল্পগুলো শেষ না হওয়া ও প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারীর ওপর কারও হাত নেই। মহামারী চলাকালে ওয়াসা পানির দাম বাড়াতে পারল কিন্তু একটি প্রকল্পের কাজেও কাক্সিক্ষত অগ্রগতি ঘটাতে পারল না।

ওয়াসার কাজের সঙ্গে নাগরিকদের সেবা প্রাপ্তির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাজে দেরি হলে নাগরিকদের সুপেয় পানি পাওয়া বা পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে অসন্তুষ্টি রয়েছে। যথাসময়ে যথা কাজ করে নাগরিকদের অসন্তোষ দূর করার কোন চেষ্টা ওয়াসার আছে বলে মনে হয় না।

প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। ঢালাওভাবে মেয়াদ বা ব্যয় বাড়ানোর আগে প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি আদায় করতে হবে। তাদের কাজে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।