গোমস্তাপুরে মেহেরুল হত্যা ৫ মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ

প্রতিবন্ধী মা আনোয়ারীর (৫৫)একমাত্র সন্তান মেহেরুল ইসলাম (৩২)। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রাজারামপুর এলাকার বাসিন্দা তারা। পিতৃহারা মেহেরুল পেয়ারবাগানে কাজ করত। গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর বেগমনগরের দিয়ারাপাড়ায় মেহেরুলের লাশ পাওয়া যায়। সেদিনই তার মামা এনারুল ইসলাম গোমস্তাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে গোমস্তাপুর থানা পুলিশ থেকে মামলাটি সুরাহা করার দায়িত্ব পায় ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয় গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে মেহেরুলকে। কিন্তু, মেহেরুল হত্যাক-ের ৫ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পিতৃহারা, দিন আনে দিন খায় পরিবারের প্রতিবন্ধী মায়ের একমাত্র সন্তান মেহেরুলকে কি কারণে আর কারাই বা হত্যা করতে পারে এ নিয়ে গোমস্তাপুর উপজেলার এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, তদন্ত চলছে। মামলার বাদী কোন রকম সাহায্য করছেননা । এটা একটা বড় সমস্যা। ধারণার ওপর ভিত্তি করে কোন কিছু করা যায় না। তবে এখনও সিআইডি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে মামলার বাদী মেহেরুলের মামা বলেন, সিআইডির অভিযোগ সঠিক না।

তবে মামলাটির বাদী এনারুলের স্ত্রী নাজমা খাতুন পলি প্রতিবেদককে জানান, মেহেরুল হত্যাকা-ের একটা বড় কারণ পাওনা টাকা হতে পারে। বলেন, মেহেরুল তার এক বন্ধুকে ৭০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন। ফটিক তার বন্ধু মেহেরুলকে অনেক সময় পাওনা টাকা চাওয়ার জন্য মারতে চাইতো বলেও অভিযোগ করেন মেহেরুলের মামী নাজমা খাতুন পলি। তবে তার ওই বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদককে জানান, ৭০ হাজার নয় মেহেরুল তার কাছে ৩৫ হাজার টাকা পেত। আর মেহেরুলের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, মেহেরুল গেল বছরের ২০ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায় গোমস্তাপুর দাঁড়াবাজ মোড়ের আজিজুলের মুদির দোকানে যান। সেখানে প্রতিবেশী এখলাসকে জানায়, সে গোমস্তাপুর যাবে। সেখান থেকে একটা পিকনিকে অংশ নেবে। পরে সে একটি মোটরসাইকেলে করে চলে যায়। তবে এটি কার মোটরসাইকেল ছিল, চালকের মাথায় লাল রঙের হেলমেট, পরনে রেনকোট ও মাফলার থাকায় মোটরসাইকেল চালককে তিনি চিনতে পারেননি।

এদিকে সেদিনই একই এলাকার নূহ মার্কেটে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আলামাসের চায়ের দোকানে যান মেহেরুল। তবে সেসময় মোটরসাইকেল চালককে তার পাশে দেখা যায়নি। চা দোকানদার আলমাস জানান, সে তার দোকানে প্রায় রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত একায় একটা বেঞ্চে বসে ছিল। তারপর থেকে মেহেরুলকে আর দেখা যায়নি। পরের দিন অর্থাৎ গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর খুব ভোরে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ পরে থাকতে দেখে এলাকাবাসী।

সিআইডি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, তারা বেশ কিছু ঘটনাকে সামনে রেখে তদন্ত করছেন। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলা যাবে না।

রবিবার, ০৬ জুন ২০২১ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৪ শাওয়াল ১৪৪২

গোমস্তাপুরে মেহেরুল হত্যা ৫ মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ

প্রতিনিধি, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাগঞ্জ)

প্রতিবন্ধী মা আনোয়ারীর (৫৫)একমাত্র সন্তান মেহেরুল ইসলাম (৩২)। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রাজারামপুর এলাকার বাসিন্দা তারা। পিতৃহারা মেহেরুল পেয়ারবাগানে কাজ করত। গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর বেগমনগরের দিয়ারাপাড়ায় মেহেরুলের লাশ পাওয়া যায়। সেদিনই তার মামা এনারুল ইসলাম গোমস্তাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে গোমস্তাপুর থানা পুলিশ থেকে মামলাটি সুরাহা করার দায়িত্ব পায় ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয় গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে মেহেরুলকে। কিন্তু, মেহেরুল হত্যাক-ের ৫ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পিতৃহারা, দিন আনে দিন খায় পরিবারের প্রতিবন্ধী মায়ের একমাত্র সন্তান মেহেরুলকে কি কারণে আর কারাই বা হত্যা করতে পারে এ নিয়ে গোমস্তাপুর উপজেলার এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, তদন্ত চলছে। মামলার বাদী কোন রকম সাহায্য করছেননা । এটা একটা বড় সমস্যা। ধারণার ওপর ভিত্তি করে কোন কিছু করা যায় না। তবে এখনও সিআইডি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে মামলার বাদী মেহেরুলের মামা বলেন, সিআইডির অভিযোগ সঠিক না।

তবে মামলাটির বাদী এনারুলের স্ত্রী নাজমা খাতুন পলি প্রতিবেদককে জানান, মেহেরুল হত্যাকা-ের একটা বড় কারণ পাওনা টাকা হতে পারে। বলেন, মেহেরুল তার এক বন্ধুকে ৭০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন। ফটিক তার বন্ধু মেহেরুলকে অনেক সময় পাওনা টাকা চাওয়ার জন্য মারতে চাইতো বলেও অভিযোগ করেন মেহেরুলের মামী নাজমা খাতুন পলি। তবে তার ওই বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদককে জানান, ৭০ হাজার নয় মেহেরুল তার কাছে ৩৫ হাজার টাকা পেত। আর মেহেরুলের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, মেহেরুল গেল বছরের ২০ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায় গোমস্তাপুর দাঁড়াবাজ মোড়ের আজিজুলের মুদির দোকানে যান। সেখানে প্রতিবেশী এখলাসকে জানায়, সে গোমস্তাপুর যাবে। সেখান থেকে একটা পিকনিকে অংশ নেবে। পরে সে একটি মোটরসাইকেলে করে চলে যায়। তবে এটি কার মোটরসাইকেল ছিল, চালকের মাথায় লাল রঙের হেলমেট, পরনে রেনকোট ও মাফলার থাকায় মোটরসাইকেল চালককে তিনি চিনতে পারেননি।

এদিকে সেদিনই একই এলাকার নূহ মার্কেটে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আলামাসের চায়ের দোকানে যান মেহেরুল। তবে সেসময় মোটরসাইকেল চালককে তার পাশে দেখা যায়নি। চা দোকানদার আলমাস জানান, সে তার দোকানে প্রায় রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত একায় একটা বেঞ্চে বসে ছিল। তারপর থেকে মেহেরুলকে আর দেখা যায়নি। পরের দিন অর্থাৎ গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর খুব ভোরে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ পরে থাকতে দেখে এলাকাবাসী।

সিআইডি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, তারা বেশ কিছু ঘটনাকে সামনে রেখে তদন্ত করছেন। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলা যাবে না।