বাজেটে বিজিএমইএ’র সব প্রস্তাবের প্রতিফলন হয়নি

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে পোশাক খাতের জন্য বিজিএমইএ’র কিছু প্রস্তাব ছিল। শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানো ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তাবগুলো অপরিহার্য ছিল। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে সবগুলো প্রস্তাবের প্রতিফলন হয়নি। গতকাল রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ কার্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, ‘সংকটময় মুহূর্তে আমরা প্রথমত বাজেটে নগদ সহায়তার ওপর আরোপ করা ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের অনুরোধটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করছি। তবে এবার অর্থমন্ত্রী বেশকিছু খাতে কর সহজ করেছেন। করোনায় আমাদের বিনিয়োগ, রপ্তানি ও কর্মসংস্থানে মন্দা বিরাজ করছে। অর্থাৎ গত দেড় বছরে তেমন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। এ অবস্থায় এই করটি প্রত্যাহার করলে সরকার খুব বেশি রাজস্ব হারাবে না, বিপরীতে শিল্প উপকৃত হবে। করোনা সংকট মোকাবিলায় রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত দশমিক ৫০ শতাংশ উৎসে কর আগামী পাঁচ বছর বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে নন-কটন শিল্প খাতে ১০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা বাজেটে পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো ক্যাশ-ফ্লো ম্যানেজ করা, যেটি করতে না পেরে অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। কর কিছুটা কমলে আমাদের ক্যাশ-ফ্লোতে একটু স্বস্তি আসবে। কারখানা টিকলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন গতি আসবে। আর পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়ালে অর্থনীতির বৃহৎ পরিসরে পণ্য ও সেবার লেনদেন বৃদ্ধি পাবে। যেমন- হোটেল, পর্যটন, ব্যাংক, বীমা, প্রসাধনী ইত্যাদি খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ফলে সরকারের আয় বাড়বে।’

বাজেটে অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৫.৩ শতাংশ নির্ধারণ করে আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এরূপ উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঘোষিত বাজেট আশাব্যঞ্জক। প্রস্তাবিত বাজেটে কোন করদাতা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিক অথবা ১০০ অধিক কর্মচারী নিয়োগ সাপেক্ষে পাঁচ শতাংশ কর রেয়াতের প্রস্তাব করা হয়েছে।’

দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী বৃহৎ শিল্পে (অটোমোবাইল খাত) ২০ বছর, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে ১০ বছর কর অব্যাহতি এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে ১০ বছর কর অব্যাহতি প্রদান করায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। একই সঙ্গে তিনি প্রস্তাবিত বাজেট দেশীয় শিল্প ও বেসরকারি খাতসহায়ক বাজেট হিসেবে মন্তব্য করেন।

শিল্প প্রতিষ্ঠানের মূলধন যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত এক শতাংশের অতিরিক্ত সব প্রকার শুল্ক-করা মওকুফ করার জন্য পুনরায় অনুরোধ করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর ২.৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে ভ্যাটের আগাম কর (এটি) চার শতাংশ থেকে কমিয়ে তিন শতাংশ করা হয়েছে। এ আগাম কর সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করছি। তিন কোটি টাকার টার্নওভারে ন্যূনতম কর হার ০.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.২৫ শতাংশ করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক কটনের পরিবর্তে ফাইবার চাহিদার বিচারে আমরা অপেক্ষাকৃত কম বাজার দখলকারী কটনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছি। বিগত দশকে আমাদের দেশে নন-কটন বিশেষত ম্যান-মেড-ফাইবার খাতে কিছু বিনিয়োগ হলেও প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছি না। কারণ তাদের কাঁচামালে পেট্রাক্যামিকেল টিপস আছে এবং তাদের স্কেল ইকোনমির কারণে তারা প্রতিযোগী সক্ষমতায় অনেক এগিয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে নন-কটন পোশাক রপ্তানির ওপর ১০ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনার দাবি করছি। তাহলে আমরা যেসব বিনিয়োগ ইতোমধ্যেই করে ফেলেছি সেগুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে। নতুন দক্ষ শ্রমিক তৈরি হবে, টেকনোলজির ব্যবহার বাড়বে এবং আরও বিনিয়োগ আসবে। পাশাপাশি নন-কটন বস্ত্র ও পোশাক খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য একটি বিশেষ স্কিম গ্রহণের সুপারিশ করছি।’ এর মাধ্যমে আমাদের ২০১৯ পরবর্তী সময়ে ‘দুই ধাপ’ উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রতিপালন করে জিএসপি প্লাসের জন্য প্রস্তুত হতে পারে’ যোগ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

সংগঠনটির প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ‘আমাদের বেশকিছু রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা রুগ্ন এবং বন্ধ হয়ে গেছে। রুগ্ন পোশাক কারখানার মালিকদের সার্বিক অবস্থা খুবই করুণ এবং তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এদের মধ্যে আবার অনেকেই নীতি সহায়তা পেলে পুনরায় উৎপাদনে ফিরে আসতে পারেন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে ঋণ পরিশোধ করে ব্যবসা থেকে প্রস্থান করা অসম্ভব। এসব রুগ্ন কারখানা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ঋণ, সুদ ও মামলা খরচ বাবদ সমুদয় অর্থ অবসায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করলে তারা পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন।’

এ সময় সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম মান্নান কচি, ভাইস প্রেসিডেন্ট শহিদুল্লাহ আজিম, নাসির উদ্দিন, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলামসহ বোর্ডের পরিচালক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রবিবার, ০৬ জুন ২০২১ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৪ শাওয়াল ১৪৪২

বাজেটে বিজিএমইএ’র সব প্রস্তাবের প্রতিফলন হয়নি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে পোশাক খাতের জন্য বিজিএমইএ’র কিছু প্রস্তাব ছিল। শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানো ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তাবগুলো অপরিহার্য ছিল। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে সবগুলো প্রস্তাবের প্রতিফলন হয়নি। গতকাল রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ কার্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, ‘সংকটময় মুহূর্তে আমরা প্রথমত বাজেটে নগদ সহায়তার ওপর আরোপ করা ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের অনুরোধটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করছি। তবে এবার অর্থমন্ত্রী বেশকিছু খাতে কর সহজ করেছেন। করোনায় আমাদের বিনিয়োগ, রপ্তানি ও কর্মসংস্থানে মন্দা বিরাজ করছে। অর্থাৎ গত দেড় বছরে তেমন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। এ অবস্থায় এই করটি প্রত্যাহার করলে সরকার খুব বেশি রাজস্ব হারাবে না, বিপরীতে শিল্প উপকৃত হবে। করোনা সংকট মোকাবিলায় রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত দশমিক ৫০ শতাংশ উৎসে কর আগামী পাঁচ বছর বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে নন-কটন শিল্প খাতে ১০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা বাজেটে পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো ক্যাশ-ফ্লো ম্যানেজ করা, যেটি করতে না পেরে অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। কর কিছুটা কমলে আমাদের ক্যাশ-ফ্লোতে একটু স্বস্তি আসবে। কারখানা টিকলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন গতি আসবে। আর পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়ালে অর্থনীতির বৃহৎ পরিসরে পণ্য ও সেবার লেনদেন বৃদ্ধি পাবে। যেমন- হোটেল, পর্যটন, ব্যাংক, বীমা, প্রসাধনী ইত্যাদি খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ফলে সরকারের আয় বাড়বে।’

বাজেটে অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৫.৩ শতাংশ নির্ধারণ করে আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এরূপ উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঘোষিত বাজেট আশাব্যঞ্জক। প্রস্তাবিত বাজেটে কোন করদাতা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিক অথবা ১০০ অধিক কর্মচারী নিয়োগ সাপেক্ষে পাঁচ শতাংশ কর রেয়াতের প্রস্তাব করা হয়েছে।’

দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী বৃহৎ শিল্পে (অটোমোবাইল খাত) ২০ বছর, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে ১০ বছর কর অব্যাহতি এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে ১০ বছর কর অব্যাহতি প্রদান করায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। একই সঙ্গে তিনি প্রস্তাবিত বাজেট দেশীয় শিল্প ও বেসরকারি খাতসহায়ক বাজেট হিসেবে মন্তব্য করেন।

শিল্প প্রতিষ্ঠানের মূলধন যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত এক শতাংশের অতিরিক্ত সব প্রকার শুল্ক-করা মওকুফ করার জন্য পুনরায় অনুরোধ করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর ২.৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে ভ্যাটের আগাম কর (এটি) চার শতাংশ থেকে কমিয়ে তিন শতাংশ করা হয়েছে। এ আগাম কর সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করছি। তিন কোটি টাকার টার্নওভারে ন্যূনতম কর হার ০.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.২৫ শতাংশ করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক কটনের পরিবর্তে ফাইবার চাহিদার বিচারে আমরা অপেক্ষাকৃত কম বাজার দখলকারী কটনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছি। বিগত দশকে আমাদের দেশে নন-কটন বিশেষত ম্যান-মেড-ফাইবার খাতে কিছু বিনিয়োগ হলেও প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছি না। কারণ তাদের কাঁচামালে পেট্রাক্যামিকেল টিপস আছে এবং তাদের স্কেল ইকোনমির কারণে তারা প্রতিযোগী সক্ষমতায় অনেক এগিয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে নন-কটন পোশাক রপ্তানির ওপর ১০ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনার দাবি করছি। তাহলে আমরা যেসব বিনিয়োগ ইতোমধ্যেই করে ফেলেছি সেগুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে। নতুন দক্ষ শ্রমিক তৈরি হবে, টেকনোলজির ব্যবহার বাড়বে এবং আরও বিনিয়োগ আসবে। পাশাপাশি নন-কটন বস্ত্র ও পোশাক খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য একটি বিশেষ স্কিম গ্রহণের সুপারিশ করছি।’ এর মাধ্যমে আমাদের ২০১৯ পরবর্তী সময়ে ‘দুই ধাপ’ উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রতিপালন করে জিএসপি প্লাসের জন্য প্রস্তুত হতে পারে’ যোগ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

সংগঠনটির প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ‘আমাদের বেশকিছু রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা রুগ্ন এবং বন্ধ হয়ে গেছে। রুগ্ন পোশাক কারখানার মালিকদের সার্বিক অবস্থা খুবই করুণ এবং তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এদের মধ্যে আবার অনেকেই নীতি সহায়তা পেলে পুনরায় উৎপাদনে ফিরে আসতে পারেন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে ঋণ পরিশোধ করে ব্যবসা থেকে প্রস্থান করা অসম্ভব। এসব রুগ্ন কারখানা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ঋণ, সুদ ও মামলা খরচ বাবদ সমুদয় অর্থ অবসায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করলে তারা পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন।’

এ সময় সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম মান্নান কচি, ভাইস প্রেসিডেন্ট শহিদুল্লাহ আজিম, নাসির উদ্দিন, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলামসহ বোর্ডের পরিচালক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।