‘প্রকৃতি সুরক্ষা না পেলে জীবনও সুরক্ষা হবে না’

প্রকৃতি সুরক্ষা না পেলে আমার জীবনও সুরক্ষিত হবে না। প্রকৃতি বাঁচাতে হলে মানুষের মধ্যে বোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। মানবিক উন্নয়ন সবার আগে দরকার। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। গতকাল বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ও ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলা হয়।

ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সভাপতি ছিলেন সুলতানা কামাল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারীর মধ্যে মানুষ সব নিয়ম ভেঙে ফেলছে। কারণ রাজনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে দেশের প্রতি কোন দায়বদ্ধতাবোধ তৈরি হচ্ছে না। ফলে জনসচেতনতা আসবে কোথা থেকে? যারা জনপ্রতিনিধি আছেন তাদের এইখানে এগিয়ে আসতে হবে। প্রকৃতি বাঁচাতে হলে এই বোধ মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে হবে। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রকৃতি সুরক্ষা না পেলে আমার জীবনও সুরক্ষিত হবে না। মানবিক উন্নয়ন সবার আগে দরকার। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

ড. কামরুজ্জামান বলেন, ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেই এবার পরিবেশ দিবসে এক লাখের বেশি মানুষ মারা যায় বায়ু দূষণের কারণে, এটি ২০১৮ সালের হিসাব; এরপর ২০১৯, ২০২০ সালের দিকে এসে সেটা আরও বেড়ে এক লাখ ৫০ হাজারের মতো হয়েছে। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় প্রথম ৫ মাসে বেশি বায়ু দূষণ হয়। করোনায় মাত্র ১৮ ভাগ কমেছে। অন্য দেশ ৪০/৫০ ভাগ কমিয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দূষণ সবচেয়ে বেশি। ঢাকা শহরের গাছের উপরে দিনে প্রায় ৪৩৬ মেট্রিক টন ধুলা জমে। একইভাবে সারা ঢাকায় প্রতিদিনে প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন ধুলা-বালু জমে। এতে ইকোসিস্টেমের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।

ড. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দূষণ বেশি হচ্ছে এমন এলাকা চিহ্নিত করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। পাশাপাশি তরুণদের সচেতন করাও একটা বড় কাজ। ইকোসিস্টেম রেস্টোরেশন জরুরি। নইলে একদিন শহরগুলো বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

শরীফ জামিল বলেন, পৌরসভাগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। যত্রতত্র পলিথিনের ব্যবহার এই ব্যবস্থাকে আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে গেছে। বায়ু দূষণে ঢাকা প্রায়ই প্রথম হয়। বায়ু দূষণ অ্যাক্টের খসড়া পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা এটি দ্রুত চূড়ান্ত হোক তা চাই।

ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, উদ্ভিদের স্বাস্থ্য, প্রাণীর স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে তাহলে মানুষও ভালো থাকতে পারে না।

পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা সচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। জেলায় জেলায় ওয়েবিনার করা হচ্ছে, লিফলেট দিচ্ছি, পোস্টার দেয়া হচ্ছে যাতে পরিবেশ দূষণ কমাতে সবাই সচেতন হয়।

রবিবার, ০৬ জুন ২০২১ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৪ শাওয়াল ১৪৪২

‘প্রকৃতি সুরক্ষা না পেলে জীবনও সুরক্ষা হবে না’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

প্রকৃতি সুরক্ষা না পেলে আমার জীবনও সুরক্ষিত হবে না। প্রকৃতি বাঁচাতে হলে মানুষের মধ্যে বোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। মানবিক উন্নয়ন সবার আগে দরকার। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। গতকাল বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ও ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলা হয়।

ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সভাপতি ছিলেন সুলতানা কামাল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারীর মধ্যে মানুষ সব নিয়ম ভেঙে ফেলছে। কারণ রাজনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে দেশের প্রতি কোন দায়বদ্ধতাবোধ তৈরি হচ্ছে না। ফলে জনসচেতনতা আসবে কোথা থেকে? যারা জনপ্রতিনিধি আছেন তাদের এইখানে এগিয়ে আসতে হবে। প্রকৃতি বাঁচাতে হলে এই বোধ মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে হবে। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রকৃতি সুরক্ষা না পেলে আমার জীবনও সুরক্ষিত হবে না। মানবিক উন্নয়ন সবার আগে দরকার। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

ড. কামরুজ্জামান বলেন, ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেই এবার পরিবেশ দিবসে এক লাখের বেশি মানুষ মারা যায় বায়ু দূষণের কারণে, এটি ২০১৮ সালের হিসাব; এরপর ২০১৯, ২০২০ সালের দিকে এসে সেটা আরও বেড়ে এক লাখ ৫০ হাজারের মতো হয়েছে। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় প্রথম ৫ মাসে বেশি বায়ু দূষণ হয়। করোনায় মাত্র ১৮ ভাগ কমেছে। অন্য দেশ ৪০/৫০ ভাগ কমিয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দূষণ সবচেয়ে বেশি। ঢাকা শহরের গাছের উপরে দিনে প্রায় ৪৩৬ মেট্রিক টন ধুলা জমে। একইভাবে সারা ঢাকায় প্রতিদিনে প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন ধুলা-বালু জমে। এতে ইকোসিস্টেমের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।

ড. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দূষণ বেশি হচ্ছে এমন এলাকা চিহ্নিত করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। পাশাপাশি তরুণদের সচেতন করাও একটা বড় কাজ। ইকোসিস্টেম রেস্টোরেশন জরুরি। নইলে একদিন শহরগুলো বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

শরীফ জামিল বলেন, পৌরসভাগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। যত্রতত্র পলিথিনের ব্যবহার এই ব্যবস্থাকে আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে গেছে। বায়ু দূষণে ঢাকা প্রায়ই প্রথম হয়। বায়ু দূষণ অ্যাক্টের খসড়া পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা এটি দ্রুত চূড়ান্ত হোক তা চাই।

ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, উদ্ভিদের স্বাস্থ্য, প্রাণীর স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে তাহলে মানুষও ভালো থাকতে পারে না।

পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা সচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। জেলায় জেলায় ওয়েবিনার করা হচ্ছে, লিফলেট দিচ্ছি, পোস্টার দেয়া হচ্ছে যাতে পরিবেশ দূষণ কমাতে সবাই সচেতন হয়।