পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদামগুলো সরিয়ে নিন

পুরান ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালের ৩ জুন রাসায়নিক দেকান ও গুদামে আগুন লেগে ১২৪ জন মারা গিয়েছিল। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চুরিহাট্টায় একইরকম দুর্ঘটনায় মারা যায় ৭১ জন। পুরান ঢাকায় এর মাঝে ছোট-বড় অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাই ঘটেছে। গত ২৩ এপ্রিল আরমানিটোলার একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লেগে মারা যায় ৫ জন।

পুরান ঢাকায় বারবার অগ্নিকাণ্ডে মানুষের মৃত্যু ও সম্পদহানির ঘটনার পরেও রাসায়নিক পণ্যের বৈধ ও অবৈধ ব্যবসা এবং গুদাম আছে বহাল তবিয়তে। নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের দোকান ও গুদাম দ্রুত স্থনান্তর করা হবে। এজন্য গঠন করা হয়েছিল কমিটি ও টাস্কফোর্স। কিন্তু গত ১১ বছরে সেসবের কিছুই হয়নি। কোন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, কমিটি তদন্ত করে, সুপারিশ আকারে সেই তদন্ত জমাও দেয়। কিন্তু সেগুলোর বাস্তয়ন হয় না।

পুরান ঢাকায় রয়েছে প্রায় ২৫ হাজারের মতো রাসায়নিক এবং প্লাস্টিকের কারখানা ও গুদাম। আক্ষরিক অর্থে রাসায়নিক বোমায় পরিণত হয়েছে উক্ত এলাকা। এর মাঝেই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নিয়ে বসবাস করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। বিপজ্জনক রাসায়নিকের গুদাম না সরানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যসায়ীদের আর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকারকে দোষারোপ করা হয়।

নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর রাসায়নিক শিল্পপল্লী নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রাসায়নিকের পুরান ঢাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হবে। শিল্পপল্লী প্রতিষ্ঠার আগে শ্যাপপুর ও টঙ্গীতে অস্থায়ী গুদামে সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল। সেটাও এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আর মুন্সীগঞ্জে ৩১০ একর জমিতে রাসায়নিক শিল্পপল্লী প্রকল্পের মাটি ভারাটের কাজ শুরু হয়েছে মাত্র।

যেকোন মূল্যে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পণ্যের ব্যবসা সরাতে হতে। এ সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিমতলী বা চুড়িহাট্টার মতো দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না।

রবিবার, ০৬ জুন ২০২১ , ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৪ শাওয়াল ১৪৪২

পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদামগুলো সরিয়ে নিন

পুরান ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালের ৩ জুন রাসায়নিক দেকান ও গুদামে আগুন লেগে ১২৪ জন মারা গিয়েছিল। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চুরিহাট্টায় একইরকম দুর্ঘটনায় মারা যায় ৭১ জন। পুরান ঢাকায় এর মাঝে ছোট-বড় অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাই ঘটেছে। গত ২৩ এপ্রিল আরমানিটোলার একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লেগে মারা যায় ৫ জন।

পুরান ঢাকায় বারবার অগ্নিকাণ্ডে মানুষের মৃত্যু ও সম্পদহানির ঘটনার পরেও রাসায়নিক পণ্যের বৈধ ও অবৈধ ব্যবসা এবং গুদাম আছে বহাল তবিয়তে। নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের দোকান ও গুদাম দ্রুত স্থনান্তর করা হবে। এজন্য গঠন করা হয়েছিল কমিটি ও টাস্কফোর্স। কিন্তু গত ১১ বছরে সেসবের কিছুই হয়নি। কোন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, কমিটি তদন্ত করে, সুপারিশ আকারে সেই তদন্ত জমাও দেয়। কিন্তু সেগুলোর বাস্তয়ন হয় না।

পুরান ঢাকায় রয়েছে প্রায় ২৫ হাজারের মতো রাসায়নিক এবং প্লাস্টিকের কারখানা ও গুদাম। আক্ষরিক অর্থে রাসায়নিক বোমায় পরিণত হয়েছে উক্ত এলাকা। এর মাঝেই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নিয়ে বসবাস করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। বিপজ্জনক রাসায়নিকের গুদাম না সরানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যসায়ীদের আর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকারকে দোষারোপ করা হয়।

নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর রাসায়নিক শিল্পপল্লী নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রাসায়নিকের পুরান ঢাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হবে। শিল্পপল্লী প্রতিষ্ঠার আগে শ্যাপপুর ও টঙ্গীতে অস্থায়ী গুদামে সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল। সেটাও এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আর মুন্সীগঞ্জে ৩১০ একর জমিতে রাসায়নিক শিল্পপল্লী প্রকল্পের মাটি ভারাটের কাজ শুরু হয়েছে মাত্র।

যেকোন মূল্যে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পণ্যের ব্যবসা সরাতে হতে। এ সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিমতলী বা চুড়িহাট্টার মতো দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না।