ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস আজ

আজ ৭ জনু, ঐতিহাসিক ‘ছয় দফা দিবস’। ১৯৬৬ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬-দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গি, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন পুলিশ ও ইপিআর’র গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন বাঙালি শহীদ হন। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোষহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ৬ দফা উত্থাপন করেন এবং পরদিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি আয়োজক পক্ষ গুরুত্ব প্রদান করেনি। তারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালেই ৬ দফা উত্থাপন করেন। এ নিয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন খবরের কাগজে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বলে চিহ্নিত করা হয়। পরে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু ১৩ মার্চ ৬ দফা এবং এ ব্যাপারে দলের অন্য বিস্তারিত কর্মসূচি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে অনুমোদন করিয়ে নেন।

৬ দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সামরিক জান্তা আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী সরকার ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার রাজপথ। পরবর্তীতে এই ৬ দফার প্রতি বাঙালির অকুণ্ঠ সমর্থনে রচিত হয় স্বাধীনতার রূপরেখা। একাত্তরে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেও ৬ দফার মর্মবাণী উচ্চারিত হয়। মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং দেশের অভ্যন্তরে সব সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় ৬ দফার ভিত্তিতে।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে, স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে দিবসটির কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সূর্যোদয়ের ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। এছাড়া সকাল ৯টায় ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতির আলোচনা সভার আয়োজন এবং ই-পোস্টার প্রকাশ করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তব্য প্রদান করবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ই-পোস্টারের শিরোনাম করা হয়েছে ‘৭ জুন বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্্র শ্রদ্ধা।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দল ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে ঐতিহাসিক ৭ জুন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।

আরও খবর
বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার টোল আদায় সেতুমন্ত্রী
অর্থ পাচারে সরকারি দলের এমপির ক্ষোভ
জিটিসির হাত ধরে তৃতীয়বারের মতো লাভের মুখ দেখছে
বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা আর্মি স্টেডিয়ামে
টিকা নিয়ে নয়ছয়, জনজীবন হুমকির মুখে সংসদে রুমিন ফারহানা
সীমান্ত নিরাপত্তা দুর্বলতায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আসছে হারুনুর রশীদ
রেকর্ড পাচার, নষ্ট বা হ্যাক করলে জেল-জরিমানা
বিধি তৈরি না করেই ভারতে নাগরিকত্ব আইন!
নদী খননে দুর্নীতি ও প্রতারণা হচ্ছে বাপা
হল বন্ধ, ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার ঢাবি ছাত্রীর লাশ
কেরামত হুজুরের কেরামতির নামে ধর্ষণ, মামলা, গ্রেপ্তার
সামান্য বৃষ্টিতেই নগরী প্লাবিত

সোমবার, ০৭ জুন ২০২১ , ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৫ শাওয়াল ১৪৪২

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস আজ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আজ ৭ জনু, ঐতিহাসিক ‘ছয় দফা দিবস’। ১৯৬৬ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬-দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গি, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন পুলিশ ও ইপিআর’র গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন বাঙালি শহীদ হন। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোষহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ৬ দফা উত্থাপন করেন এবং পরদিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি আয়োজক পক্ষ গুরুত্ব প্রদান করেনি। তারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালেই ৬ দফা উত্থাপন করেন। এ নিয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন খবরের কাগজে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বলে চিহ্নিত করা হয়। পরে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু ১৩ মার্চ ৬ দফা এবং এ ব্যাপারে দলের অন্য বিস্তারিত কর্মসূচি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে অনুমোদন করিয়ে নেন।

৬ দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সামরিক জান্তা আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী সরকার ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার রাজপথ। পরবর্তীতে এই ৬ দফার প্রতি বাঙালির অকুণ্ঠ সমর্থনে রচিত হয় স্বাধীনতার রূপরেখা। একাত্তরে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেও ৬ দফার মর্মবাণী উচ্চারিত হয়। মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং দেশের অভ্যন্তরে সব সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় ৬ দফার ভিত্তিতে।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে, স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে দিবসটির কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সূর্যোদয়ের ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। এছাড়া সকাল ৯টায় ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতির আলোচনা সভার আয়োজন এবং ই-পোস্টার প্রকাশ করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তব্য প্রদান করবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ই-পোস্টারের শিরোনাম করা হয়েছে ‘৭ জুন বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্্র শ্রদ্ধা।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দল ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে ঐতিহাসিক ৭ জুন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।