সমবায় সমিতির নামে প্রতারণার বিহিত করুন

সমবায় সমিতিতে যারা সদস্য হন তাদের বড় একটি অংশই নিম্নবিত্ত। একটু মুনাফার আশায় শ্রমে-ঘামে অর্জিত টাকার একটি অংশ তারা সঞ্চয় করেন। তারা ভাবেন, নির্ধারিত মেয়াদ শেষে লাভসহ আমানতের টাকা ফেরত পাওয়া গেলে জীবনের কোন না কোন স্বপ্ন পূরণ হবে। তুলনামূলক বেশি মুনাফা পাওয়ার কথা শুনলে অবস্থাপন্ন মানুষও সমিতিতে টাকা রাখেন। প্রত্যাশিত মুনাফা পাওয়া তো দূরে থাক, কোন সমিতি যখন আমানতের টাকাই আত্মসাৎ করে তখন এসব মানুষের আশায় ‘গুড়েবালি’ পড়ে, অনেকে সর্বস্বান্ত হন।

দেশে প্রায়ই সমিতির অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। গত রোববার প্রকাশিত সংবাদ-এর একটি প্রতিবেদন থেকে এমনই এক ঘটনার কথা জানা গেছে। ‘এহসান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ’ নামক একটি সমবায় সমিতি দশ হাজার গ্রাহকের ৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানা গেছে। উক্ত সমিতি ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী সমিতি পরিচালনা ও বেশি মুনাফা দেয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করত।

সমিতির সদস্যদের বড় একটি অংশই নারী। ধর্মীয় রীতিতে সমিতি পরিচালিত হচ্ছে- এমন কথা শুনে ধর্মভীরু অনেক মানুষও তার সদস্য হন, সেখানে টাকা জমা রাখেন। সদস্যদের অসহায়ত্ব আর সরলতার সুযোগ নেয় সমিতির কর্তাব্যক্তিরা। তারা অনেক সময় বেশি মুনাফা দেয়ার প্রলোভন দিয়েও আমানত সংগ্রহ করে। পরে সুযোগ বুঝে টাকা আত্মসাৎ করে পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলে। অতীতে দেশে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। সমিতির ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি সদস্যদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। দেশে বিভিন্ন সময় এ ধরনের অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে গবেষণাও হয়েছে। সমবায় অধিদপ্তরে এ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রায়ই জমা হয়। কিন্তু অর্থ আত্মসাতের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না। সমবায় সমিতির কার্যক্রম মনিটর করা বা অডিট করার দায়িত্ব সমবায় অধিদপ্তরের। দায়িত্ব পালনে তাদের কোন ঘাটতি আছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে।

অর্থ আত্মসাতের ঘটনার বিহিত করা না হলে সমবায় সমিতির প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হতে পারে। সমবায় সমিতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে স্বল্প পুঁজির মানুষ যাবে কোথায় সেটাও একটা সমস্যা। সমবায় সমিতির প্রতি মানুষের যেন অনাস্থা তৈরি না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে। সমিতিগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করতে হবে, অডিট করতে হবে। সমিতির ব্যবস্থাপনায় সৎ লোক থাকা অত্যন্ত জরুরি। সমিতির অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। এ বার্তাটা দেয়া জরুরি যে, সমিতির সদস্যদের টাকা আত্মসাৎ করে কেউ পার পাবে না। সাধারণ সদস্যদের টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ মানুষ যেন বেশি মুনাফার প্রলোভনে পা না বাড়ান সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

সোমবার, ০৭ জুন ২০২১ , ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৫ শাওয়াল ১৪৪২

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণার বিহিত করুন

সমবায় সমিতিতে যারা সদস্য হন তাদের বড় একটি অংশই নিম্নবিত্ত। একটু মুনাফার আশায় শ্রমে-ঘামে অর্জিত টাকার একটি অংশ তারা সঞ্চয় করেন। তারা ভাবেন, নির্ধারিত মেয়াদ শেষে লাভসহ আমানতের টাকা ফেরত পাওয়া গেলে জীবনের কোন না কোন স্বপ্ন পূরণ হবে। তুলনামূলক বেশি মুনাফা পাওয়ার কথা শুনলে অবস্থাপন্ন মানুষও সমিতিতে টাকা রাখেন। প্রত্যাশিত মুনাফা পাওয়া তো দূরে থাক, কোন সমিতি যখন আমানতের টাকাই আত্মসাৎ করে তখন এসব মানুষের আশায় ‘গুড়েবালি’ পড়ে, অনেকে সর্বস্বান্ত হন।

দেশে প্রায়ই সমিতির অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। গত রোববার প্রকাশিত সংবাদ-এর একটি প্রতিবেদন থেকে এমনই এক ঘটনার কথা জানা গেছে। ‘এহসান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ’ নামক একটি সমবায় সমিতি দশ হাজার গ্রাহকের ৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানা গেছে। উক্ত সমিতি ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী সমিতি পরিচালনা ও বেশি মুনাফা দেয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করত।

সমিতির সদস্যদের বড় একটি অংশই নারী। ধর্মীয় রীতিতে সমিতি পরিচালিত হচ্ছে- এমন কথা শুনে ধর্মভীরু অনেক মানুষও তার সদস্য হন, সেখানে টাকা জমা রাখেন। সদস্যদের অসহায়ত্ব আর সরলতার সুযোগ নেয় সমিতির কর্তাব্যক্তিরা। তারা অনেক সময় বেশি মুনাফা দেয়ার প্রলোভন দিয়েও আমানত সংগ্রহ করে। পরে সুযোগ বুঝে টাকা আত্মসাৎ করে পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলে। অতীতে দেশে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। সমিতির ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি সদস্যদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। দেশে বিভিন্ন সময় এ ধরনের অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে গবেষণাও হয়েছে। সমবায় অধিদপ্তরে এ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রায়ই জমা হয়। কিন্তু অর্থ আত্মসাতের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না। সমবায় সমিতির কার্যক্রম মনিটর করা বা অডিট করার দায়িত্ব সমবায় অধিদপ্তরের। দায়িত্ব পালনে তাদের কোন ঘাটতি আছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে।

অর্থ আত্মসাতের ঘটনার বিহিত করা না হলে সমবায় সমিতির প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হতে পারে। সমবায় সমিতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে স্বল্প পুঁজির মানুষ যাবে কোথায় সেটাও একটা সমস্যা। সমবায় সমিতির প্রতি মানুষের যেন অনাস্থা তৈরি না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে। সমিতিগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করতে হবে, অডিট করতে হবে। সমিতির ব্যবস্থাপনায় সৎ লোক থাকা অত্যন্ত জরুরি। সমিতির অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। এ বার্তাটা দেয়া জরুরি যে, সমিতির সদস্যদের টাকা আত্মসাৎ করে কেউ পার পাবে না। সাধারণ সদস্যদের টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ মানুষ যেন বেশি মুনাফার প্রলোভনে পা না বাড়ান সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।