দেশে করোনা টিকা উৎপাদনের দাবি ১৮ বিশিষ্ট নাগরিকের

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আমদানি করার ক্ষেত্রে যাতে কোন মধ্যস্বত্বভোগী বাণিজ্য-সুবিধা নিতে না পারে সে বিষয়ে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের প্রত্যাশা করেছেন ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক। ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা আছে এমন দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে দ্রুত করোনার প্রতিষেধক উৎপাদনে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে যুদ্ধকালে জরুরি পরিস্থিতির ন্যায় সরকার উদ্যোগ নেবে, এটা সবার কাম্য।

বিবৃতিদাতারা হলেন- ১. আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ২. হাসান আজিজুল হক ৩. অধ্যাপক অনুপম সেন ৪. রামেন্দু মজুমদার ৫. ফেরদৌসী মজুমদার ৬. বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ৭. আবেদ খান ৮. অধ্যাপক আবদুস সেলিম ৯. মফিদুল হক ১০. মামুনুর রশীদ ১১. ডা. আমজাদ হোসেন ১২. ডা. ফওজিয়া মোসলেম ১৩. ডা. রশিদ এ মাহবুব ১৪. ডা. কামরুল হাসান খান ১৫. অধ্যাপক এ বি এম ফারুক ১৬. শাহরিয়ার কবীর ১৭. নাসির উদ্দীন ইউসুফ ১৮. অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।

ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও জীবন-জীবিকা সচল রাখতে সরকার এখন পর্যন্ত যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে তার সঙ্গে সহমত পোষণ করে তারা বিবৃতিতে বলেন, ‘অতিমারীতে আক্রান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন নিরাপদ এবং অর্থনীতি সচল রাখার জটিল সমস্যা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তার অনেক ইতিবাচক দিক আমাদের আস্থা জুগিয়েছে। সংক্রমণ রোধে টিকাদানের ব্যবস্থাপনা এবং তার বাস্তবায়ন সর্বমহলের প্রশংসা অর্জন করেছিল।

ভারতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর ভ্যাকসিন আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিদেশ মন্ত্রণালয় রাশিয়া ও চীন থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের প্রচেষ্টা শুরু করে। একই সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন সিনোফার্ম এবং স্পুটনিক দেশে উৎপাদনের জন্য সরকারিভাবে ফলপ্রসূ আলোচনা শুরু হয়। এর পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম দেশগুলোর জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদে অধিকার শিথিল করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

এতে আরও বলা হয়, আমরা সরকারের এসব পদক্ষেপের সঙ্গে সহমত পোষণ করে জরুরি ভিত্তিতে এর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করি। সেই সঙ্গে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ভ্যাকসিন-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা মনে করি ভ্যাকসিন আমদানির আলোচনা ও সিদ্ধান্ত এবং জনগণকে টিকাদানের সমগ্র দায়-দায়িত্ব যেহেতু সরকার পালন করছে, তাই ভ্যাকসিন আমদানিতে কোন মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা গ্রহণের সুযোগ নেই। সরকার এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে- সেটা আমাদের প্রত্যাশা।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডব্লিউটিও এবং অন্যান্য ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে বুদ্ধিবৃত্তিক সুরক্ষা শিথিলের যে দাবি তুলেছেন তা বিশ্বমানবের সার্বজনীন অধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা এ দাবির পক্ষে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সোচ্চার হওয়ার জন্য নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে সক্ষম দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বারা ভ্যাকসিন উৎপাদনের দ্রুত বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।

বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, বাংলাদেশের জন্য করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই। তাই দেশজ উৎপাদন বাস্তবায়নে যুদ্ধকালে জরুরি পরিস্থিতির মতো সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে- সেটা সবারই কাম্য।

মঙ্গলবার, ০৮ জুন ২০২১ , ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৬ শাওয়াল ১৪৪২

দেশে করোনা টিকা উৎপাদনের দাবি ১৮ বিশিষ্ট নাগরিকের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আমদানি করার ক্ষেত্রে যাতে কোন মধ্যস্বত্বভোগী বাণিজ্য-সুবিধা নিতে না পারে সে বিষয়ে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের প্রত্যাশা করেছেন ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক। ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা আছে এমন দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে দ্রুত করোনার প্রতিষেধক উৎপাদনে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে যুদ্ধকালে জরুরি পরিস্থিতির ন্যায় সরকার উদ্যোগ নেবে, এটা সবার কাম্য।

বিবৃতিদাতারা হলেন- ১. আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ২. হাসান আজিজুল হক ৩. অধ্যাপক অনুপম সেন ৪. রামেন্দু মজুমদার ৫. ফেরদৌসী মজুমদার ৬. বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ৭. আবেদ খান ৮. অধ্যাপক আবদুস সেলিম ৯. মফিদুল হক ১০. মামুনুর রশীদ ১১. ডা. আমজাদ হোসেন ১২. ডা. ফওজিয়া মোসলেম ১৩. ডা. রশিদ এ মাহবুব ১৪. ডা. কামরুল হাসান খান ১৫. অধ্যাপক এ বি এম ফারুক ১৬. শাহরিয়ার কবীর ১৭. নাসির উদ্দীন ইউসুফ ১৮. অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।

ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও জীবন-জীবিকা সচল রাখতে সরকার এখন পর্যন্ত যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে তার সঙ্গে সহমত পোষণ করে তারা বিবৃতিতে বলেন, ‘অতিমারীতে আক্রান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন নিরাপদ এবং অর্থনীতি সচল রাখার জটিল সমস্যা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তার অনেক ইতিবাচক দিক আমাদের আস্থা জুগিয়েছে। সংক্রমণ রোধে টিকাদানের ব্যবস্থাপনা এবং তার বাস্তবায়ন সর্বমহলের প্রশংসা অর্জন করেছিল।

ভারতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর ভ্যাকসিন আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিদেশ মন্ত্রণালয় রাশিয়া ও চীন থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের প্রচেষ্টা শুরু করে। একই সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন সিনোফার্ম এবং স্পুটনিক দেশে উৎপাদনের জন্য সরকারিভাবে ফলপ্রসূ আলোচনা শুরু হয়। এর পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম দেশগুলোর জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদে অধিকার শিথিল করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

এতে আরও বলা হয়, আমরা সরকারের এসব পদক্ষেপের সঙ্গে সহমত পোষণ করে জরুরি ভিত্তিতে এর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করি। সেই সঙ্গে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ভ্যাকসিন-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা মনে করি ভ্যাকসিন আমদানির আলোচনা ও সিদ্ধান্ত এবং জনগণকে টিকাদানের সমগ্র দায়-দায়িত্ব যেহেতু সরকার পালন করছে, তাই ভ্যাকসিন আমদানিতে কোন মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা গ্রহণের সুযোগ নেই। সরকার এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে- সেটা আমাদের প্রত্যাশা।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডব্লিউটিও এবং অন্যান্য ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে বুদ্ধিবৃত্তিক সুরক্ষা শিথিলের যে দাবি তুলেছেন তা বিশ্বমানবের সার্বজনীন অধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা এ দাবির পক্ষে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সোচ্চার হওয়ার জন্য নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে সক্ষম দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বারা ভ্যাকসিন উৎপাদনের দ্রুত বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।

বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, বাংলাদেশের জন্য করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই। তাই দেশজ উৎপাদন বাস্তবায়নে যুদ্ধকালে জরুরি পরিস্থিতির মতো সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে- সেটা সবারই কাম্য।