প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস

বেড়েছে ১৯ মন্ত্রণালয়ের ব্যয়

জাতীয় সংসদে ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১’ পাসের মধ্য দিয়ে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট পাস হয়েছে। সরকারের যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তাদের মূল বরাদ্দের থেকে বেশি খরচ করেছে, তার অনুমোদন নিতে এই বিল পাস হয়। গতকাল সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন। পরে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে বিলটি পাস হয়। এর আগে সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

চলতি অর্থবছরে মূল বাজেট ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা আর ২৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ব্যয় হ্রাস পেয়েছে ২৯ হাজার ১৭ কোটি টাকা। এ অর্থ হ্রাস- বৃদ্ধি পেয়ে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়ায় ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮৩ কোটি টাকা। বিল পাসের আগে বিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দাবিসহ ১৯টি মঞ্জুরি দাবি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সংসদে উত্থাপন করলে পৃথক পৃথকভাবে পাস করা হয়। এই সম্পূরক বাজেটের ওপর জাতীয় পার্টি, বিএনপি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্রসহ মোট ১১ জন সংসদ সদস্য ১৯০টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। এরমধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। বাকিগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো দেন- জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান, বিএনপির হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা, মোশারফ হোসেন, গণফেরামের মোকাব্বির খান, স্বতন্ত্র রেজাউল করিম বাবলু।

সম্পূরক বাজেটে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮৯০ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ খাতে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮৫০ কোটি ৪৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯০৫ কোটি ৬৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় খাতে। আর চতুর্থ সর্বোচ্চ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ৩৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা, পঞ্চম সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় খাতে রয়েছে।

এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় খাতে ৪৮৯ কোটি ৩৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, ধর্ম মন্ত্রণালয় খাতে ৩৮৪ কোটি ৫১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, নির্বাচন কমিশন খাতে ৭৯ কোটি ৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা, শিল্প মন্ত্রণালয় খাতে ৫৬৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৩ হাজার টাকা, পরিকল্পনা বিভাগ খাতে ২৪২ কোটি ৭৫ লাখ ২১ হাজার টাকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় খাতে ৪৮২ কোটি ৩ লাখ ১২ হাজার টাকা, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ১৪২ কোটি ৮৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ৯ কোটি ৭০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে ৬৭৬ কোটি ৬৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠা বিভাগে ২০৪ কোটি ৫৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৬৭৬ কোটি ৬২ লাখ ১৬ হাজার টাকা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৩৩২ কোটি ৭৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে ১ কোটি ৪০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নেন বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও সরকারি দলের আমির হোসেন আমু। এরপর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্য দেন।

সম্পূরক বাজেট পাস হওয়ার পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন।

আরও খবর
ভারতে নাগরিকত্ব প্রশ্নে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা, দ্বন্দ্বে আসাম সরকার
৬ দফার মাধ্যমেই বাঙালির স্বাধীনতা অর্জন হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী
গণতন্ত্রে বিশ্বাস নেই বলে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছে ওবায়দুল কাদের
ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
সংসদে বিরোধী দলের তোপের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনা টিকার মজুদ আছে এক লাখ ৫৬ হাজার
যশোরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে সংঘর্ষ, আহত ৩
কাউন্টারে রেলের টিকিট বিক্রি শুরু
১০০ কিশোর গ্যাং শনাক্ত করেছে র‌্যাব
চার্জশিট থেকে বাদপড়া দুই হত্যাকারীকে ধরল পিবিআই
বান্দরবানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা, লক্ষাধিক মানুষকে সরে যেতে মাইকিং
সহযোগীসহ টিকটক-লাইকি দুই তরুণী আটক

মঙ্গলবার, ০৮ জুন ২০২১ , ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৬ শাওয়াল ১৪৪২

প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস

বেড়েছে ১৯ মন্ত্রণালয়ের ব্যয়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

জাতীয় সংসদে ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১’ পাসের মধ্য দিয়ে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট পাস হয়েছে। সরকারের যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তাদের মূল বরাদ্দের থেকে বেশি খরচ করেছে, তার অনুমোদন নিতে এই বিল পাস হয়। গতকাল সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন। পরে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে বিলটি পাস হয়। এর আগে সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

চলতি অর্থবছরে মূল বাজেট ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা আর ২৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ব্যয় হ্রাস পেয়েছে ২৯ হাজার ১৭ কোটি টাকা। এ অর্থ হ্রাস- বৃদ্ধি পেয়ে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়ায় ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮৩ কোটি টাকা। বিল পাসের আগে বিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দাবিসহ ১৯টি মঞ্জুরি দাবি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সংসদে উত্থাপন করলে পৃথক পৃথকভাবে পাস করা হয়। এই সম্পূরক বাজেটের ওপর জাতীয় পার্টি, বিএনপি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্রসহ মোট ১১ জন সংসদ সদস্য ১৯০টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। এরমধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। বাকিগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো দেন- জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান, বিএনপির হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা, মোশারফ হোসেন, গণফেরামের মোকাব্বির খান, স্বতন্ত্র রেজাউল করিম বাবলু।

সম্পূরক বাজেটে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮৯০ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ খাতে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮৫০ কোটি ৪৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯০৫ কোটি ৬৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় খাতে। আর চতুর্থ সর্বোচ্চ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ৩৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা, পঞ্চম সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় খাতে রয়েছে।

এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় খাতে ৪৮৯ কোটি ৩৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, ধর্ম মন্ত্রণালয় খাতে ৩৮৪ কোটি ৫১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, নির্বাচন কমিশন খাতে ৭৯ কোটি ৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা, শিল্প মন্ত্রণালয় খাতে ৫৬৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৩ হাজার টাকা, পরিকল্পনা বিভাগ খাতে ২৪২ কোটি ৭৫ লাখ ২১ হাজার টাকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় খাতে ৪৮২ কোটি ৩ লাখ ১২ হাজার টাকা, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ১৪২ কোটি ৮৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ৯ কোটি ৭০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে ৬৭৬ কোটি ৬৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠা বিভাগে ২০৪ কোটি ৫৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৬৭৬ কোটি ৬২ লাখ ১৬ হাজার টাকা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৩৩২ কোটি ৭৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে ১ কোটি ৪০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নেন বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও সরকারি দলের আমির হোসেন আমু। এরপর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্য দেন।

সম্পূরক বাজেট পাস হওয়ার পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন।