আড়াই থেকে তিন হাজার কিশোর অপরাধী সক্রিয়
দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় শহরে কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। গতকাল পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে ১শ’টি কিশোর গ্যাং চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আড়াই থেকে তিন হাজার সদস্য নানা অপরাধে জড়িত।
ইতোমধ্যে র্যাবের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন শতাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যকে আইনের আওতায় এনেছে। তার মধ্যে ৪০ জনকে মুচলেকা রেখে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদকে জানান, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মূলত এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, মাদক কেনাবেচা, রিকশায় টোকেন বাণিজ্যে জড়িত। এলাকাভিত্তিক তাদের পৃষ্ঠপোষক রয়েছে। পৃষ্ঠপোষকদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা কিশোর গ্যাংকে নিয়ন্ত্রণ কেের। প্রতিদিন তাদের খরচের জন্য দিনে কমপক্ষে ৪শ’ টাকা করে দেয়। এজন্য তারা পৃষ্ঠপোষকদের নির্দেশমতো এলাকাভিত্তিক অপরাধ করে থাকে।
রাজধানীসহ আশপাশ এলাকায় ইতোমধ্যে মধ্যে ৫০টির বেশি কিশোর গ্যাং আছে। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও টঙ্গীতে এ সব গ্রুপ তৎপর রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, খুলনা, নোয়াখালী ও ফেনীসহ দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে।
এলাকা ও থানাভিত্তিক ছোটখাট গ্রুপগুলোর সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে ২০। ৩০ ও ৪০ জনের গ্রুপও আছে। তাদের তালিকা তৈরির পাশাপাশি তাদের মামলা ও অপরাধের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
কিশোর অপরাধীদের বেশিরভাগ সদস্য কম শিক্ষিত। কেউ মেট্রিক পাস। কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পী ও নীরব ওরফে ডন নীরবের ডি কোম্পানির সদস্য সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫। গত ৫ জুন তাদের গ্রুপের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, পলাতকদের ধরতে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে উত্তরায় আদনান হত্যাকা-ের পরপর কিশোর গ্যাং এক সহিংসতার নির্মমতা জনসম্মুখে উম্মেচিত হয়। ওই হত্যাকা-ে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ২০১৭ সাল থেকে গতকাল পর্যন্ত র্যাব ৩শ’ ৮ জন কিশোর গ্যাং সদস্যকে আইনের আওতায় এনেছে।
২০১৯ সালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক সেবন, ছিনতাই, চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৪ কিশোর অপরাধীকে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুধুমাত্র হত্যাকা-ের পৃথক ৪টি ঘটনায় জড়িত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ৪টি হত্যাকা-ের কারণ ছিল আধিপত্য বিস্তার, কোন্দল, পূর্ব শত্রুতা ও সম্মানহানীর অভিযোগ। র্যাবের তথ্যমতে, ডি কোম্পানি, ফাস্ট হিটার বস (এফএইচবি), রায়ের বাজারের স্টার বন্ড গ্রুপ, সূত্রাপুরের লেজ টু পেজ গ্রুপ।
র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন কিশোর অপরাধে জড়িত যেই হোক। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। র্যাবের ডিজির নির্দেশ মতো র্যাব সদস্যরা দেশের প্রতিটি জেলার এলাকাভিত্তিক কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা প্রস্তুতের কাজ করছেন।
র্যাবের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, তারা সন্তানদের দিকে নজর রাখবেন। সন্তানরা কখন বাসায় ফিরে এবং বাইরে কি করে, তার খোঁজ-খবর রাখবেন।
মঙ্গলবার, ০৮ জুন ২০২১ , ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৬ শাওয়াল ১৪৪২
আড়াই থেকে তিন হাজার কিশোর অপরাধী সক্রিয়
বাকী বিল্লাহ
দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় শহরে কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। গতকাল পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে ১শ’টি কিশোর গ্যাং চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আড়াই থেকে তিন হাজার সদস্য নানা অপরাধে জড়িত।
ইতোমধ্যে র্যাবের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন শতাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যকে আইনের আওতায় এনেছে। তার মধ্যে ৪০ জনকে মুচলেকা রেখে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদকে জানান, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মূলত এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, মাদক কেনাবেচা, রিকশায় টোকেন বাণিজ্যে জড়িত। এলাকাভিত্তিক তাদের পৃষ্ঠপোষক রয়েছে। পৃষ্ঠপোষকদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা কিশোর গ্যাংকে নিয়ন্ত্রণ কেের। প্রতিদিন তাদের খরচের জন্য দিনে কমপক্ষে ৪শ’ টাকা করে দেয়। এজন্য তারা পৃষ্ঠপোষকদের নির্দেশমতো এলাকাভিত্তিক অপরাধ করে থাকে।
রাজধানীসহ আশপাশ এলাকায় ইতোমধ্যে মধ্যে ৫০টির বেশি কিশোর গ্যাং আছে। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও টঙ্গীতে এ সব গ্রুপ তৎপর রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, খুলনা, নোয়াখালী ও ফেনীসহ দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে।
এলাকা ও থানাভিত্তিক ছোটখাট গ্রুপগুলোর সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে ২০। ৩০ ও ৪০ জনের গ্রুপও আছে। তাদের তালিকা তৈরির পাশাপাশি তাদের মামলা ও অপরাধের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
কিশোর অপরাধীদের বেশিরভাগ সদস্য কম শিক্ষিত। কেউ মেট্রিক পাস। কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পী ও নীরব ওরফে ডন নীরবের ডি কোম্পানির সদস্য সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫। গত ৫ জুন তাদের গ্রুপের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, পলাতকদের ধরতে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে উত্তরায় আদনান হত্যাকা-ের পরপর কিশোর গ্যাং এক সহিংসতার নির্মমতা জনসম্মুখে উম্মেচিত হয়। ওই হত্যাকা-ে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ২০১৭ সাল থেকে গতকাল পর্যন্ত র্যাব ৩শ’ ৮ জন কিশোর গ্যাং সদস্যকে আইনের আওতায় এনেছে।
২০১৯ সালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক সেবন, ছিনতাই, চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৪ কিশোর অপরাধীকে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুধুমাত্র হত্যাকা-ের পৃথক ৪টি ঘটনায় জড়িত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ৪টি হত্যাকা-ের কারণ ছিল আধিপত্য বিস্তার, কোন্দল, পূর্ব শত্রুতা ও সম্মানহানীর অভিযোগ। র্যাবের তথ্যমতে, ডি কোম্পানি, ফাস্ট হিটার বস (এফএইচবি), রায়ের বাজারের স্টার বন্ড গ্রুপ, সূত্রাপুরের লেজ টু পেজ গ্রুপ।
র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন কিশোর অপরাধে জড়িত যেই হোক। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। র্যাবের ডিজির নির্দেশ মতো র্যাব সদস্যরা দেশের প্রতিটি জেলার এলাকাভিত্তিক কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা প্রস্তুতের কাজ করছেন।
র্যাবের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, তারা সন্তানদের দিকে নজর রাখবেন। সন্তানরা কখন বাসায় ফিরে এবং বাইরে কি করে, তার খোঁজ-খবর রাখবেন।