চার্জশিট থেকে বাদপড়া দুই হত্যাকারীকে ধরল পিবিআই

৪ বছর আগে প্রেমের কারণে খুন হন গ্রিল মিস্ত্রি আবুল কালাম। এ হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে আসামি করে মামলাও হয়। মামলাটি থানা থেকে ডিবিতে পাঠানো হলে ডিবি ক্লু উদ্ঘাটন করে ২ জনকে গ্রেপ্তারও করে কিন্তু অন্য দুই আসামিকে খুঁজে না পেয়ে তাদের বাদ দিয়ে চার্জশিট দেয় ডিবি কিন্তু বাদীর আপত্তিতে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের কাছে পাঠায় আদালত। অবশেষে ওই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহমুদুর রহমান। অন্য আসামি আকবর ইতোমধ্যে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম টেলিফোনে সংবাদকে জানান, প্রেম নিয়ে বিরোধের জেরে রূপনগর থানার দুয়ারীপাড়া এলাকার গ্রিল মিস্ত্রি (ওয়ার্কশপের) আবুল কালাম আজাদকে হত্যা করা হয় ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. আবুল বাশার মিজি বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করে। মামলাটি রূপনগর থানা পুলিশ ২ মাস তদন্ত করে। পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব ডিবি ডিএমপি পল্লবী জোনাল টিমের ওপর দেয়া হয়। ডিবি দীর্ঘ ৩ বছর তদন্ত করে। তদন্তকালে তারা মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. শামীম মৃধা এবং মো. স্বাধীন মীর গ্রেপ্তার হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যাকা-ের অনুমান ৬ মাস পরে ওই বছরের ২৭ অক্টোবর শামীমের ভাড়া বাসার মেঝের মাটি খুঁড়ে ভিকটিম কালামের মৃতদেহের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়। হত্যায় জড়িত স্বাধীন মীর বিজ্ঞ আদালতে হত্যায় নিজেকে জড়িয়ে জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে এ হত্যায় শামীম, আকবর ও সুমনের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তিনি মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান। এরপর তারা তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে বাদপড়া আসামিদের মধ্যে প্রথমে আকবরকে গ্রেপ্তার করে। আকবার নিজের দোষ স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেন। এরপর তার দেয়া তথ্যে আরেক আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৫ দিনের রিমান্ড হেফাজতে সুমন গতকাল আদালতে হাজির করা হয়েছে। আগের তদন্তের তথ্য-উপাত্ত মিলিয়ে নতুন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাচাই করে চার্জশিট দেয়া হবে। তিনি বলেন, হত্যার প্রধান আসামি শামীম মৃধা দর্জি কাজ করত আর অন্যরা বখাটে হিসেবে পরিচিত। তারা এলাকায় মাদক সেবনসহ নানা অপরাধে জড়িত। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও আছে।

তিনি বলেন, মূলত প্রেম নিয়ে বিরোধেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আকবর বলেছে তারা একসঙ্গেই চলত। এক মেয়েকে নিয়ে আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে শামীম মৃধার বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন সে (আকবর), শামীম মৃধা, সুমন, স্বাধীন এবং আবুল কালাম আজাদ একসঙ্গে দেয়াল টপকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ করেন। একটি আমবাগানের নিচে একসঙ্গে মাদক সেবন করেন। এর মধ্যে এক মেয়েকে নিয়ে আজাদ ও শামীমের মধ্যে তর্কাতর্কি হলে একপর্যায়ে শামীম তাকে নির্দেশ দেয় আজাদকে ধরতে। তখন সে ও সুমন আজাদের হাত-পা চেপে ধরে আর শামীম ও স্বাধীন আজাদকে হত্যা করে। এরপর লাশ বোটানিক্যাল গার্ডেনে ফেলে দেয়। ধরা পড়ার ভয়ে পরদিন আবার লাশ তুলে নিয়ে শামীম তার বাসার মেঝেতে আজাদের লাশ পুঁতে রাখে। পরবর্তীতে যা ডিবি উদ্ধার করে।

আরও খবর
ভারতে নাগরিকত্ব প্রশ্নে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা, দ্বন্দ্বে আসাম সরকার
৬ দফার মাধ্যমেই বাঙালির স্বাধীনতা অর্জন হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী
গণতন্ত্রে বিশ্বাস নেই বলে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছে ওবায়দুল কাদের
ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস
সংসদে বিরোধী দলের তোপের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনা টিকার মজুদ আছে এক লাখ ৫৬ হাজার
যশোরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে সংঘর্ষ, আহত ৩
কাউন্টারে রেলের টিকিট বিক্রি শুরু
১০০ কিশোর গ্যাং শনাক্ত করেছে র‌্যাব
বান্দরবানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা, লক্ষাধিক মানুষকে সরে যেতে মাইকিং
সহযোগীসহ টিকটক-লাইকি দুই তরুণী আটক

মঙ্গলবার, ০৮ জুন ২০২১ , ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৬ শাওয়াল ১৪৪২

রূপনগরে আবুল কালাম হত্যা

চার্জশিট থেকে বাদপড়া দুই হত্যাকারীকে ধরল পিবিআই

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

৪ বছর আগে প্রেমের কারণে খুন হন গ্রিল মিস্ত্রি আবুল কালাম। এ হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে আসামি করে মামলাও হয়। মামলাটি থানা থেকে ডিবিতে পাঠানো হলে ডিবি ক্লু উদ্ঘাটন করে ২ জনকে গ্রেপ্তারও করে কিন্তু অন্য দুই আসামিকে খুঁজে না পেয়ে তাদের বাদ দিয়ে চার্জশিট দেয় ডিবি কিন্তু বাদীর আপত্তিতে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের কাছে পাঠায় আদালত। অবশেষে ওই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহমুদুর রহমান। অন্য আসামি আকবর ইতোমধ্যে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম টেলিফোনে সংবাদকে জানান, প্রেম নিয়ে বিরোধের জেরে রূপনগর থানার দুয়ারীপাড়া এলাকার গ্রিল মিস্ত্রি (ওয়ার্কশপের) আবুল কালাম আজাদকে হত্যা করা হয় ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. আবুল বাশার মিজি বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করে। মামলাটি রূপনগর থানা পুলিশ ২ মাস তদন্ত করে। পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব ডিবি ডিএমপি পল্লবী জোনাল টিমের ওপর দেয়া হয়। ডিবি দীর্ঘ ৩ বছর তদন্ত করে। তদন্তকালে তারা মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. শামীম মৃধা এবং মো. স্বাধীন মীর গ্রেপ্তার হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যাকা-ের অনুমান ৬ মাস পরে ওই বছরের ২৭ অক্টোবর শামীমের ভাড়া বাসার মেঝের মাটি খুঁড়ে ভিকটিম কালামের মৃতদেহের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়। হত্যায় জড়িত স্বাধীন মীর বিজ্ঞ আদালতে হত্যায় নিজেকে জড়িয়ে জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে এ হত্যায় শামীম, আকবর ও সুমনের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তিনি মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান। এরপর তারা তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে বাদপড়া আসামিদের মধ্যে প্রথমে আকবরকে গ্রেপ্তার করে। আকবার নিজের দোষ স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেন। এরপর তার দেয়া তথ্যে আরেক আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৫ দিনের রিমান্ড হেফাজতে সুমন গতকাল আদালতে হাজির করা হয়েছে। আগের তদন্তের তথ্য-উপাত্ত মিলিয়ে নতুন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাচাই করে চার্জশিট দেয়া হবে। তিনি বলেন, হত্যার প্রধান আসামি শামীম মৃধা দর্জি কাজ করত আর অন্যরা বখাটে হিসেবে পরিচিত। তারা এলাকায় মাদক সেবনসহ নানা অপরাধে জড়িত। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও আছে।

তিনি বলেন, মূলত প্রেম নিয়ে বিরোধেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আকবর বলেছে তারা একসঙ্গেই চলত। এক মেয়েকে নিয়ে আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে শামীম মৃধার বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন সে (আকবর), শামীম মৃধা, সুমন, স্বাধীন এবং আবুল কালাম আজাদ একসঙ্গে দেয়াল টপকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ করেন। একটি আমবাগানের নিচে একসঙ্গে মাদক সেবন করেন। এর মধ্যে এক মেয়েকে নিয়ে আজাদ ও শামীমের মধ্যে তর্কাতর্কি হলে একপর্যায়ে শামীম তাকে নির্দেশ দেয় আজাদকে ধরতে। তখন সে ও সুমন আজাদের হাত-পা চেপে ধরে আর শামীম ও স্বাধীন আজাদকে হত্যা করে। এরপর লাশ বোটানিক্যাল গার্ডেনে ফেলে দেয়। ধরা পড়ার ভয়ে পরদিন আবার লাশ তুলে নিয়ে শামীম তার বাসার মেঝেতে আজাদের লাশ পুঁতে রাখে। পরবর্তীতে যা ডিবি উদ্ধার করে।