জুনে সংক্রমণ থাকবে বিপজ্জনক অবস্থায়

ঢাকা বিভাগেও ভারতীয় ধরন শনাক্ত

দেশে করোনায় মৃত্যু, শনাক্তের হার ও সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচ সপ্তাহ পর দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ফের দুই হাজার ছাড়িয়েছে। পুরো জুন মাসেই সংক্রমণ ‘বিপদজনক অবস্থায়’ থাকবে বলে মনে করছেন আইইডিসিআর’র বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিভাগেও করোনার ভারতীয় ধরন অর্থাৎ ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’র সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

সীমান্তবর্তী জেলার পাশাপাশি গত একদিনে রাজধানীতেও সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৩৪৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে ঢাকা মহানগরে, যেখানে আগের দিন শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২৬৯ জন।

২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে রাজশাহী জেলায়। রাজশাহীতে আগের দিন ২৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর সংবাদকে বলেন, ‘গত তিন-চারদিন ধরেই এটি বাড়ছে। গত ঈদের আগে যারা স্বাস্থ্যবিধি আমলে না নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে তাদের কারণেই এখন সংক্রমণ বাড়ছে।’ এই ধাক্কায় জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সংক্রমণ বাড়তে পারে- আভাস দিয়ে ডা. আলমগীর বলেন, ‘ঈদ শেষে যারা শহরে ফিরেছেন তাদের মাধ্যমে শহরগুলোতেও এখন সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। অনেকেই দেরিতে শহরে ফিরেছেন, সেই চিত্রটা জুনের মাঝামাঝির পর বুঝা যাবে।’

কয়েকটি অঞ্চলে করোনার ভারতীয় ধরন অর্থাৎ ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’র সংক্রমণ ছড়াচ্ছেÑ জানিয়ে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটির সংক্রমণ ক্ষমতা একটু বেশি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা এখন বিপদজনক অবস্থায় আছি। তবে সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, সরকারের বিধিনিষেধ প্রতিপালন করি, মাস্ক পরি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করি তাহলে অল্পসময়ের মধ্যে বিপজ্জনক অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারব।’

গত ১৪ মে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়। ঈদকে ঘিরে বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যায়। একইভাবে ঈদ শেষে শহরে ফিরে আসে। ওই সময় জনস্বাস্থ্যবিদরা ঈদ পরবর্তীতে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, ঈদে যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে সেটার চিত্র দুই-তিন সপ্তাহ পর পাওয়া যাবে।

ঢাকা বিভাগেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বেলাল হোসেইন গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘আমরা এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী...সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে ভালো অবস্থানে আছি। তবে গত ৩/৪ দিন ধরে ঢাকা মহানগর এবং নরসিংদী, কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে।’

ঢাকা বিভাগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঘটছে কীনা জানতে চাইলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘গোপালগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমাকে চার-পাঁচদিন আগে জানিয়েছেন, জেলায় সাতজনের দেহে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। তাদের কারোর মধ্যেই কোন উপসর্গ ছিল না। তারা এখন আইসোলেশনে আছেন, চিকিৎসাধীন আছেন, ভালো আছেন।’

বিভাগভিত্তিক সংক্রমণ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় ৯ হাজার ৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৪৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ। এর মধ্যে ফরিদপুরে ৪২ জন, গাজীপুরে ১২ জন, কিশোরগঞ্জে ১৫ জন, নরসিংদীতে ২২ জন, রাজবাড়ীতে ১৯ জন এবং টাঙ্গাইলে ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্যান্য জেলায় ১০ জনের কম শনাক্ত হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৩৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। এর মধ্যে রাজশাহীতে ২৯৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৮৯ জন, নাটোরে ৪২ জন, নওগাঁয় ৩৬ জন, পাবনায় ১৩ জন, সিরাজগঞ্জে ১৭ জন, বগুড়ায় ২৫ জন ও জয়পুরহাটে ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

অন্য বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামের ১১ জেলায় দুই হাজার ৬৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ২৯১ জনের করোনা পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ০১ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৪৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় এক হাজার ৪৬৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ২৭০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৯ জনের করোনা পাওয়া গেছে। সিলেটের চারটি জেলায় ৬০০টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৯ জনের করোনা পাওয়া গেছে।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু, শনাক্ত ও শনাক্তের হার- সব স্তরেই পরিস্থিতির অবনতি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দুই হাজার ৩২২ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত ২৯ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওইদিন দুই হাজার ৩৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত একদিনের শনাক্ত নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ১৫ হাজার ২৮২ জনে। এই একদিনে ৪৪ জন নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৯১৩ জনে।

বিভাগভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রামে সাতজন, রাজশাহীর ১১ জন, খুলনার ছয়জন, সিলেটের দুইজন, রংপুরের পাঁচ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন দুই জন। ওই ৪০ জনের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন ও নারী ১৭ জন।

২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৬২ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়াল সাত লাখ ৫৫ হাজার ৩০২ জনে। সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

গত একদিনে সরকারি ও বেসরকারি ৫০৯টি ল্যাবরেটরিতে ১৯ হাজার ১৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৬০ লাখ ৮৬ হাজার ২০৭টি। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ১২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর পর থেকে এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।

বুধবার, ০৯ জুন ২০২১ , ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪২

জুনে সংক্রমণ থাকবে বিপজ্জনক অবস্থায়

ঢাকা বিভাগেও ভারতীয় ধরন শনাক্ত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

করোনা সংক্রমণ হার আবার বাড়ছে, জুন মাস পুরোটাই বিপজ্জনক বলছেন স্বাস্থ্যবিদরা। মহাখালী করোনা বিশেষায়িত আইসিইউতে গতকাল নতুন রোগী -সংবাদ

দেশে করোনায় মৃত্যু, শনাক্তের হার ও সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচ সপ্তাহ পর দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ফের দুই হাজার ছাড়িয়েছে। পুরো জুন মাসেই সংক্রমণ ‘বিপদজনক অবস্থায়’ থাকবে বলে মনে করছেন আইইডিসিআর’র বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিভাগেও করোনার ভারতীয় ধরন অর্থাৎ ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’র সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

সীমান্তবর্তী জেলার পাশাপাশি গত একদিনে রাজধানীতেও সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৩৪৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে ঢাকা মহানগরে, যেখানে আগের দিন শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২৬৯ জন।

২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে রাজশাহী জেলায়। রাজশাহীতে আগের দিন ২৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর সংবাদকে বলেন, ‘গত তিন-চারদিন ধরেই এটি বাড়ছে। গত ঈদের আগে যারা স্বাস্থ্যবিধি আমলে না নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে তাদের কারণেই এখন সংক্রমণ বাড়ছে।’ এই ধাক্কায় জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সংক্রমণ বাড়তে পারে- আভাস দিয়ে ডা. আলমগীর বলেন, ‘ঈদ শেষে যারা শহরে ফিরেছেন তাদের মাধ্যমে শহরগুলোতেও এখন সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। অনেকেই দেরিতে শহরে ফিরেছেন, সেই চিত্রটা জুনের মাঝামাঝির পর বুঝা যাবে।’

কয়েকটি অঞ্চলে করোনার ভারতীয় ধরন অর্থাৎ ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’র সংক্রমণ ছড়াচ্ছেÑ জানিয়ে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটির সংক্রমণ ক্ষমতা একটু বেশি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা এখন বিপদজনক অবস্থায় আছি। তবে সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, সরকারের বিধিনিষেধ প্রতিপালন করি, মাস্ক পরি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করি তাহলে অল্পসময়ের মধ্যে বিপজ্জনক অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারব।’

গত ১৪ মে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়। ঈদকে ঘিরে বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যায়। একইভাবে ঈদ শেষে শহরে ফিরে আসে। ওই সময় জনস্বাস্থ্যবিদরা ঈদ পরবর্তীতে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, ঈদে যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে সেটার চিত্র দুই-তিন সপ্তাহ পর পাওয়া যাবে।

ঢাকা বিভাগেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বেলাল হোসেইন গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘আমরা এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী...সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে ভালো অবস্থানে আছি। তবে গত ৩/৪ দিন ধরে ঢাকা মহানগর এবং নরসিংদী, কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে।’

ঢাকা বিভাগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঘটছে কীনা জানতে চাইলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘গোপালগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমাকে চার-পাঁচদিন আগে জানিয়েছেন, জেলায় সাতজনের দেহে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। তাদের কারোর মধ্যেই কোন উপসর্গ ছিল না। তারা এখন আইসোলেশনে আছেন, চিকিৎসাধীন আছেন, ভালো আছেন।’

বিভাগভিত্তিক সংক্রমণ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় ৯ হাজার ৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৪৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ। এর মধ্যে ফরিদপুরে ৪২ জন, গাজীপুরে ১২ জন, কিশোরগঞ্জে ১৫ জন, নরসিংদীতে ২২ জন, রাজবাড়ীতে ১৯ জন এবং টাঙ্গাইলে ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্যান্য জেলায় ১০ জনের কম শনাক্ত হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৩৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। এর মধ্যে রাজশাহীতে ২৯৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৮৯ জন, নাটোরে ৪২ জন, নওগাঁয় ৩৬ জন, পাবনায় ১৩ জন, সিরাজগঞ্জে ১৭ জন, বগুড়ায় ২৫ জন ও জয়পুরহাটে ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

অন্য বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামের ১১ জেলায় দুই হাজার ৬৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ২৯১ জনের করোনা পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ০১ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৪৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় এক হাজার ৪৬৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ২৭০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৯ জনের করোনা পাওয়া গেছে। সিলেটের চারটি জেলায় ৬০০টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৯ জনের করোনা পাওয়া গেছে।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু, শনাক্ত ও শনাক্তের হার- সব স্তরেই পরিস্থিতির অবনতি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দুই হাজার ৩২২ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত ২৯ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওইদিন দুই হাজার ৩৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত একদিনের শনাক্ত নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ১৫ হাজার ২৮২ জনে। এই একদিনে ৪৪ জন নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৯১৩ জনে।

বিভাগভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রামে সাতজন, রাজশাহীর ১১ জন, খুলনার ছয়জন, সিলেটের দুইজন, রংপুরের পাঁচ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন দুই জন। ওই ৪০ জনের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন ও নারী ১৭ জন।

২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৬২ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়াল সাত লাখ ৫৫ হাজার ৩০২ জনে। সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

গত একদিনে সরকারি ও বেসরকারি ৫০৯টি ল্যাবরেটরিতে ১৯ হাজার ১৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৬০ লাখ ৮৬ হাজার ২০৭টি। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ১২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর পর থেকে এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।