অটোচালককে ধরে নিয়ে পুলিশের মাদক মামলা

থানা ঘেরাও, মহাসড়ক অবরোধ

রংপুর নগরীর খোর্দ্দ তামফাট এলাকায় একটি চায়ের দোকান থেকে নিরীহ অটোচালক আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে গাঁজা পাওয়ার মিথ্যা সাজানো নাটক তৈরি করার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা গত সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর তাজহাট থানা ঘেরাও ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় কাউন্সিলর শামীমের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার ঘটনায় প্যানেল মেয়র টিটোর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর বিক্ষোভে যোগ দেয়। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে গভীর রাতে আটক আবুল হোসেনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে এলাকাবাসী তাজহাট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে হয়রানি আর ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করে তদন্ত করে দায়ীদের বিচার দাবি করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, গত সোমবার সন্ধ্যার পর তাজহাট থানায় কর্মরত এসআই আসাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ খোর্দ্দ তামফাট এলাকায় একটি চায়ের দোকান থেকে আবুল হোসেন নামে অটোচালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় এলাকাবাসী ও স্থানীয় ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুব মোরশেদ শামীম তাকে আটক করার কারণ জানতে চাওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কাউন্সিলরের কথা কাটাকাটি হয়। আটক আবুল হোসেনের স্ত্রী বুলবুলি বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে আটক করার সময় পুলিশ তল্লাশি করে কিছু না পেলেও থানায় নিয়ে আসার পর মাদক পাওয়ার সাজানো নাটক তৈরি করে। এদিকে শামীম থানায় এসে ওসি আখতারুজ্জচামান প্রধানের সঙ্গে দেখা করে জানান, আটক আবুল হোসেন তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা সে ভালো ছেলে মাদক সেবন তো দূরের কথা সিগারেটও সেবন করে না। তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ধরে আনা হয়েছে। এখন থানায় আনার পর সনাজানো নাটক তৈরি করা হচ্ছে। এ সময় এসআই আসাদ ও ওসির সঙ্গে কাউন্সিলরের তীব্র বাদানুবাদ হয়। খবর পেয়ে প্যানেল মেয়র টিটোসহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর নিয়ে থানায় আসে। এ সময় ওসির সঙ্গে কাউন্সিলরদের তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়। তারা দাবি করেন, পুলিশ নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করবে এটা মেনে নেয়া যায় না। আর কাউন্সিলর যেহেতু তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা সে কারণে সে আসতেই পারে। রাত আড়াইটা পর্যন্ত ওসির সঙ্গে বাদানুবাদ চলে। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার আলতাফ হোসেন রাতে থানায় আসেন। তিনি কাউন্সিলর ও বিক্ষুব্ধ লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, কাউন্সিলরদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে অন্য কিছু নয়। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আটক আবুল হোসেনকে সবাই ভালো বলায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র টিটোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খবর পেয়ে তিনিও তাজহাট থানায় যান। তিনি বলেন, আমরা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি, সমস্যা নিয়ে থানায় যাব কথা বলব এটাই আমারেদর দায়িত্বের অংশ বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, পরে আলাপ আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।

বুধবার, ০৯ জুন ২০২১ , ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪২

অটোচালককে ধরে নিয়ে পুলিশের মাদক মামলা

থানা ঘেরাও, মহাসড়ক অবরোধ

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

image

রংপুর : নিরীহ অটোচালককে তাজহাট থানায় নিয়ে গাঁজা পাওয়ার মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে জনতার থানা ঘেরাও ও বিক্ষোভ -সংবাদ

রংপুর নগরীর খোর্দ্দ তামফাট এলাকায় একটি চায়ের দোকান থেকে নিরীহ অটোচালক আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে গাঁজা পাওয়ার মিথ্যা সাজানো নাটক তৈরি করার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা গত সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর তাজহাট থানা ঘেরাও ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় কাউন্সিলর শামীমের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার ঘটনায় প্যানেল মেয়র টিটোর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর বিক্ষোভে যোগ দেয়। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে গভীর রাতে আটক আবুল হোসেনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে এলাকাবাসী তাজহাট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে হয়রানি আর ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করে তদন্ত করে দায়ীদের বিচার দাবি করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, গত সোমবার সন্ধ্যার পর তাজহাট থানায় কর্মরত এসআই আসাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ খোর্দ্দ তামফাট এলাকায় একটি চায়ের দোকান থেকে আবুল হোসেন নামে অটোচালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় এলাকাবাসী ও স্থানীয় ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুব মোরশেদ শামীম তাকে আটক করার কারণ জানতে চাওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কাউন্সিলরের কথা কাটাকাটি হয়। আটক আবুল হোসেনের স্ত্রী বুলবুলি বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে আটক করার সময় পুলিশ তল্লাশি করে কিছু না পেলেও থানায় নিয়ে আসার পর মাদক পাওয়ার সাজানো নাটক তৈরি করে। এদিকে শামীম থানায় এসে ওসি আখতারুজ্জচামান প্রধানের সঙ্গে দেখা করে জানান, আটক আবুল হোসেন তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা সে ভালো ছেলে মাদক সেবন তো দূরের কথা সিগারেটও সেবন করে না। তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ধরে আনা হয়েছে। এখন থানায় আনার পর সনাজানো নাটক তৈরি করা হচ্ছে। এ সময় এসআই আসাদ ও ওসির সঙ্গে কাউন্সিলরের তীব্র বাদানুবাদ হয়। খবর পেয়ে প্যানেল মেয়র টিটোসহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর নিয়ে থানায় আসে। এ সময় ওসির সঙ্গে কাউন্সিলরদের তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়। তারা দাবি করেন, পুলিশ নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করবে এটা মেনে নেয়া যায় না। আর কাউন্সিলর যেহেতু তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা সে কারণে সে আসতেই পারে। রাত আড়াইটা পর্যন্ত ওসির সঙ্গে বাদানুবাদ চলে। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার আলতাফ হোসেন রাতে থানায় আসেন। তিনি কাউন্সিলর ও বিক্ষুব্ধ লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, কাউন্সিলরদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে অন্য কিছু নয়। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আটক আবুল হোসেনকে সবাই ভালো বলায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র টিটোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খবর পেয়ে তিনিও তাজহাট থানায় যান। তিনি বলেন, আমরা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি, সমস্যা নিয়ে থানায় যাব কথা বলব এটাই আমারেদর দায়িত্বের অংশ বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, পরে আলাপ আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।