টেকনাফে পাহাড় কেটে রোহিঙ্গা ক্যাম্প নির্মাণ

কক্সবাজারের টেকনাফে আবারও পাহাড় কেটে গাছপালা নিধন করে রোহিঙ্গাদের বসতি তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে আর কোন সরকারি বনভূমি দেয়া হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেও টেকনাফে এস্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে ক্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ শুরু করেছে। উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ১০ হাজার একর বনভূমি ব্যবহার করছে আশ্রিত এ রোহিঙ্গারা।

জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার লেদা এলাকায় বনবিভাগের বহু গাছপালা কেটে ও পাহাড় নিধন করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে। তবে কক্সবাজার বনবিভাগ জানিয়েছে, ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কোন কথা বলেননি। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও লেদার সরকারি বনভূমির বিশাল এলাকাজুড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে অস্থায়ী ঘর নির্মাণের কারণে বিশাল আকৃতির বুলডোজার দিয়ে ওই এলাকার অনেক গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম নজরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এ জনগোষ্ঠী জেলার বিভিন্ন বনাঞ্চলের ৮ হাজার ১ দশমিক ২ একর বন উজাড় করে বসতি স্থাপন করেছে, ব্যবহার করেছে জ্বালানি হিসেবেও। টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি হবে। রোহিঙ্গা আগমনে পর থেকে কক্সবাজারের বনাঞ্চলের ১১ ভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে এক দিকে যেমন মানুষ বেড়েছে তার সঙ্গে তাদের নিঃসৃত কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণও বেড়েছে।

অন্যদিকে গাছ কাটার মাধ্যমে কার্বন শোষণের প্রাকৃতিক মেশিন বন্ধ হয়ে গেল। দুই দিক থেকে ক্ষতি হয়েছে। এখন দ্বিগুণ হারে সেখানে কার্বন জমছে। এতকিছুর পরও যখন পাহাড় প্রকৃতির ধ্বংসকারীদের আইনের আওতায় আনা হয় না! তিনি আরও জানান, যখন দেখি কিছু এনজিও সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প বাড়াতে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে। এসব দেখে দুঃখ করা ছাড়া কিছু বলার নেই।

এদিকে প্রতিনিয়ত অশান্ত হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। ক্যাম্পে মাদক বিক্রি এবং মাদকের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়েও ঘটেছে মারামারি খুনোখুনি। তাদের এসব কর্মকা- প্রতিরোধ, নজরদারি এবং রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতাসহ নানা উদ্যোগ হাতে নিয়ে সরকার ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

image
আরও খবর
১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি সাইলো নির্মাণ করা হবে
জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ পরিষদের সহ-সভাপতি বাংলাদেশ
দুর্নীতি নয়, দুর্নীতির তথ্য প্রকাশে বেশি নিয়ন্ত্রণ সরকারের
দেশে করোনার টিকা নিয়েছেন ১ কোটি ৪৮ লাখ ৭৫৬ জন
সরকারি স্থাপনায় মশার লার্ভা পেলে ৪ গুণ জরিমানা মেয়র তাপস
সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
আমদানি-রপ্তানি শুরুর ব্যবস্থা নিতে দাবি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের
বিএনপি হয়তো বজ্রপাতে মৃত্যুর দায়ও সরকারকে দেবে কাদের
শাজাহান খান ও শাহাবুদ্দিন মোল্লা, পরস্পরের পদত্যাগ দাবি
মেগা প্রজেক্ট হয়, মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয় না মির্জা ফখরুল
১৭৬ কোটি টাকা জালিয়াতি ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বুধবার, ০৯ জুন ২০২১ , ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪২

টেকনাফে পাহাড় কেটে রোহিঙ্গা ক্যাম্প নির্মাণ

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার

image

কক্সবাজারের টেকনাফে আবারও পাহাড় কেটে গাছপালা নিধন করে রোহিঙ্গাদের বসতি তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে আর কোন সরকারি বনভূমি দেয়া হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেও টেকনাফে এস্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে ক্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ শুরু করেছে। উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ১০ হাজার একর বনভূমি ব্যবহার করছে আশ্রিত এ রোহিঙ্গারা।

জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার লেদা এলাকায় বনবিভাগের বহু গাছপালা কেটে ও পাহাড় নিধন করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে। তবে কক্সবাজার বনবিভাগ জানিয়েছে, ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কোন কথা বলেননি। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও লেদার সরকারি বনভূমির বিশাল এলাকাজুড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে অস্থায়ী ঘর নির্মাণের কারণে বিশাল আকৃতির বুলডোজার দিয়ে ওই এলাকার অনেক গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম নজরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এ জনগোষ্ঠী জেলার বিভিন্ন বনাঞ্চলের ৮ হাজার ১ দশমিক ২ একর বন উজাড় করে বসতি স্থাপন করেছে, ব্যবহার করেছে জ্বালানি হিসেবেও। টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি হবে। রোহিঙ্গা আগমনে পর থেকে কক্সবাজারের বনাঞ্চলের ১১ ভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে এক দিকে যেমন মানুষ বেড়েছে তার সঙ্গে তাদের নিঃসৃত কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণও বেড়েছে।

অন্যদিকে গাছ কাটার মাধ্যমে কার্বন শোষণের প্রাকৃতিক মেশিন বন্ধ হয়ে গেল। দুই দিক থেকে ক্ষতি হয়েছে। এখন দ্বিগুণ হারে সেখানে কার্বন জমছে। এতকিছুর পরও যখন পাহাড় প্রকৃতির ধ্বংসকারীদের আইনের আওতায় আনা হয় না! তিনি আরও জানান, যখন দেখি কিছু এনজিও সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প বাড়াতে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে। এসব দেখে দুঃখ করা ছাড়া কিছু বলার নেই।

এদিকে প্রতিনিয়ত অশান্ত হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। ক্যাম্পে মাদক বিক্রি এবং মাদকের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়েও ঘটেছে মারামারি খুনোখুনি। তাদের এসব কর্মকা- প্রতিরোধ, নজরদারি এবং রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতাসহ নানা উদ্যোগ হাতে নিয়ে সরকার ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।