অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও গাছ কাটা চলছে টাঙ্গাইল মভাবিপ্রবিতে

কর্তৃপক্ষ নীরব

অবৈধভাবে গড়ে উঠা অর্ধশতাধিক স্থাপনায় ঢেকে গেছে টাঙ্গাইল মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (মভাবিপ্রবি)। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবাধে চলছে গাছ কাটা। তবে অবৈধ এসব স্থাপনা বন্ধে ও গাছ কাটার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নীরবতায় দেখা দিয়েছে স্থানীয় জনমনে নানা প্রশ্ন। এ নিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়াসহ আইনশৃঙ্খলা অবনতির শঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখের প্রথম গেট থেকে দ্বিতীয় গেট পর্যন্ত দীঘির ওপর অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশতাধিক বিভিন্ন ধররের বাণিজ্যিক স্থাপনা। এখনও চলছে নতুন বেশ কিছু স্থাপনা গড়ে তোলার কার্যক্রম। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা পুরাতন প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ অবাধে কেটে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্তোষ এলাকায় বসবাসকারী প্রভাবশালীরাই এই স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে যাদের বাসা-বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারাই এ দোকানগুলো নির্মাণ করেছেন। এদের কেউ কেউ আবার দোকান নির্মাণ করে দুই-তিন লাখ টাকায় বিক্রিও করেছেন। বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে এভাবে দোকান নির্মাণ হওয়ায় যেমন নষ্ট হয়েছে এর সৌন্দর্য, তেমনি নষ্ট হবে বিশ^বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ বলে মনে করছেন তারা। এদিকে করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা পুরাতন প্রায় অর্ধশতাধিক কাছ কেটে ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দোকান নির্মাণকারী স্থানীয় মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি প্রায় পঞ্চাশ বছর যাবত সরকারি জমির ওপর ব্যবসা করে আসছি। এলাকার অনেকেই বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করায় আমিও নয় ফুট জমির ওপর একটি দোকান নির্মাণ করেছি। দোকান নির্মাণে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন বাধা প্রয়োগ করেনি।’ এছাড়া বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন টাকা নিয়েছে কিনা সেটিও তার জানা নেই। তবে এখানে প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান নির্মাণ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সুমন পাল বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের সামনেই আমাদের বাসা-বাড়ি আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই বাইরের লোকজন এসে বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে যেন দোকানপাট না করতে পারে সেজন্যই আমি দোকানটি নির্মাণ করেছি।’ মুঠোফোনে অবৈধ দোকান নির্মাণকারী শাহিনুর রহমান খান বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের সামনেই আমার বাণিজ্য ভা-ার নামের একটি দোকার আছে। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয় পুকুরের ওপর দশ ফুট জমিতে আমি আরও একটি দোকান নির্মাণ করেছি। স্থানীয় ব্যবসায়ী মিঠু বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে এভাবে দোকান গড়ে ওঠায় ঢাকা পরে গেছে বিশ^বিদ্যালয়টির সৌন্দর্য। মূল সড়ক থেকে এখন চোখে পরছে না বিশ^বিদ্যালয়। করোনার কারণে বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় রাতারাতিই দোকানগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব দোকান নির্মাণের বিষয়ে কিছু জানেন কিনা সেটি তার জানা নেই।

এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। তারা এসেও পরিদর্শন করে গেছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াসও দিয়েছেন। ক্যাম্পাসের ভেতরে অবাধে গাছ কাটার বিষয়ে ভিসি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ কাটা হয়েছে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ সড়ক বৃদ্ধি করা এবং নতুন রাস্তা তৈরির জন্যই এ কাজ করা হচ্ছে।

বুধবার, ০৯ জুন ২০২১ , ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪২

অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও গাছ কাটা চলছে টাঙ্গাইল মভাবিপ্রবিতে

কর্তৃপক্ষ নীরব

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

অবৈধভাবে গড়ে উঠা অর্ধশতাধিক স্থাপনায় ঢেকে গেছে টাঙ্গাইল মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (মভাবিপ্রবি)। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবাধে চলছে গাছ কাটা। তবে অবৈধ এসব স্থাপনা বন্ধে ও গাছ কাটার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নীরবতায় দেখা দিয়েছে স্থানীয় জনমনে নানা প্রশ্ন। এ নিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়াসহ আইনশৃঙ্খলা অবনতির শঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখের প্রথম গেট থেকে দ্বিতীয় গেট পর্যন্ত দীঘির ওপর অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশতাধিক বিভিন্ন ধররের বাণিজ্যিক স্থাপনা। এখনও চলছে নতুন বেশ কিছু স্থাপনা গড়ে তোলার কার্যক্রম। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা পুরাতন প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ অবাধে কেটে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্তোষ এলাকায় বসবাসকারী প্রভাবশালীরাই এই স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে যাদের বাসা-বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারাই এ দোকানগুলো নির্মাণ করেছেন। এদের কেউ কেউ আবার দোকান নির্মাণ করে দুই-তিন লাখ টাকায় বিক্রিও করেছেন। বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে এভাবে দোকান নির্মাণ হওয়ায় যেমন নষ্ট হয়েছে এর সৌন্দর্য, তেমনি নষ্ট হবে বিশ^বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ বলে মনে করছেন তারা। এদিকে করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা পুরাতন প্রায় অর্ধশতাধিক কাছ কেটে ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দোকান নির্মাণকারী স্থানীয় মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি প্রায় পঞ্চাশ বছর যাবত সরকারি জমির ওপর ব্যবসা করে আসছি। এলাকার অনেকেই বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করায় আমিও নয় ফুট জমির ওপর একটি দোকান নির্মাণ করেছি। দোকান নির্মাণে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন বাধা প্রয়োগ করেনি।’ এছাড়া বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন টাকা নিয়েছে কিনা সেটিও তার জানা নেই। তবে এখানে প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান নির্মাণ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সুমন পাল বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের সামনেই আমাদের বাসা-বাড়ি আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই বাইরের লোকজন এসে বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে যেন দোকানপাট না করতে পারে সেজন্যই আমি দোকানটি নির্মাণ করেছি।’ মুঠোফোনে অবৈধ দোকান নির্মাণকারী শাহিনুর রহমান খান বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের সামনেই আমার বাণিজ্য ভা-ার নামের একটি দোকার আছে। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয় পুকুরের ওপর দশ ফুট জমিতে আমি আরও একটি দোকান নির্মাণ করেছি। স্থানীয় ব্যবসায়ী মিঠু বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে এভাবে দোকান গড়ে ওঠায় ঢাকা পরে গেছে বিশ^বিদ্যালয়টির সৌন্দর্য। মূল সড়ক থেকে এখন চোখে পরছে না বিশ^বিদ্যালয়। করোনার কারণে বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় রাতারাতিই দোকানগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব দোকান নির্মাণের বিষয়ে কিছু জানেন কিনা সেটি তার জানা নেই।

এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। তারা এসেও পরিদর্শন করে গেছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াসও দিয়েছেন। ক্যাম্পাসের ভেতরে অবাধে গাছ কাটার বিষয়ে ভিসি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ কাটা হয়েছে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ সড়ক বৃদ্ধি করা এবং নতুন রাস্তা তৈরির জন্যই এ কাজ করা হচ্ছে।