বর্ষার আগেই যমুনায় ভাঙন

বাড়িঘর, আবাদি জমি বিলীন হচ্ছে নদীতে

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের হাট পাচিল হতে খুকনী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ গ্রাম পর্যন্ত ৭ কিলোমিটারজুড়ে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ইতোমধ্যে প্রায় ৪/৫শ’ বাড়িঘর ও অন্তত ১/২শ’ একর জমি নদীতে বিলীন হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া অনেক বাড়িঘর ও ফসলি জমি বিলীন হওয়ার পথে। গত কয়েকদিন ধরে যমুনা, করতোয়া, বড়াল ও হুরাসাগর নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে এ ভাঙনের তা-বও শুরু হয়েছে।

ভাঙনকবলিত গ্রামগুলোর মধ্যে খুকনি ইউনিয়নের আরকান্দি, জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, ঘাটাবাড়ি ও পাকুরতলা, কৈজুরি ইউনিয়নের হাটপাচিল, সোনাতনী ইউনিয়নের পশ্চিম বানতিয়ার, ছোট চানতারা, বড় চানতারা, ধীতপুর, দইকান্দি ও বানিয়া সিঙ্গুলী, গালা ইউনিয়নের আগবাঙ্গলা ও ধলাই উল্লেখযোগ্য।

এ বিষয়ে জালালপুর গ্রামের, দেরাজ মোল্লা, আব্দুল হামিদ, দুলাল শেখ, তয়জাল মোল্লা, আরকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই এসব গ্রাম ও ঘরবাড়ি যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। মানুষজন সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে। এ থেকে এলাকাবাসীকে বাঁচাতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে জালালপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মহির উদ্দিন বলেন, এলাকার সব বাড়িঘর ভেঙে শেষ হয়ে যাচ্ছে। মানুষজন ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে এসব গ্রাম শেষ হয়ে যাবে।

কৈজুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, সোনাতনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান, খুকনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁদ, জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ ও গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়ায় এ বছরও বর্ষা মৌসুম শুরু না হতেই এসব গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে।

বাড়িঘর রক্ষায় এলাকাবাসী দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাই অবিলম্বে ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান তারা। এছাড়া চৌহালি উপজেলার বাঘুটিয়া খাসপুকুরিয়া ইউনিয়নের রেহাইপুকুরিয়া, চরনাকালিয়া, চরসলিমাবাদ, মিটুয়ানী, খাসপুকুরিয়সহ বিভিন্ন গ্রামে যমুনার ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বাঘুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী বলেন, যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে এটা রোধ করতে না পারলে বর্ষা মৌসুমে এই ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকাই যমুনা নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, অচিরেই ভাঙন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ভাঙন রোধে স্থানীয় বাঁধ ও তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।

image

সিরাজগঞ্জ : শাহজাদপুরের সোনাতনী ইউনিয়নের পশ্চিম বানাতিয়া গ্রামের বাড়িঘর জমি বিলীন যমুনায় -সংবাদ

আরও খবর
আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা চট্টগ্রামে
বহুদলীয় গণতন্ত্র ছিল বিএনপির তামাশা কাদের
জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে তাপস
‘উন্নয়নের জন্য বিদেশি ঋণের প্রয়োজন হবে না’
ইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দাবিতে সুজনের গণস্বাক্ষর অভিযান
জবানবন্দি গ্রুপের দুই সদস্যের
নোয়াখালী শহরে বাড়ছে করোনা, চরাঞ্চলে ডায়রিয়া
পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতিতে পালাবদলের ইঙ্গিত
অর্থ পাচার : তালিকা প্রকাশ না পেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি
দেশে এখন দুই শত্রু করোনা ও আ’লীগ মির্জা ফখরুল

বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১ , ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৮ শাওয়াল ১৪৪২

বর্ষার আগেই যমুনায় ভাঙন

বাড়িঘর, আবাদি জমি বিলীন হচ্ছে নদীতে

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ

image

সিরাজগঞ্জ : শাহজাদপুরের সোনাতনী ইউনিয়নের পশ্চিম বানাতিয়া গ্রামের বাড়িঘর জমি বিলীন যমুনায় -সংবাদ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের হাট পাচিল হতে খুকনী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ গ্রাম পর্যন্ত ৭ কিলোমিটারজুড়ে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ইতোমধ্যে প্রায় ৪/৫শ’ বাড়িঘর ও অন্তত ১/২শ’ একর জমি নদীতে বিলীন হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া অনেক বাড়িঘর ও ফসলি জমি বিলীন হওয়ার পথে। গত কয়েকদিন ধরে যমুনা, করতোয়া, বড়াল ও হুরাসাগর নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে এ ভাঙনের তা-বও শুরু হয়েছে।

ভাঙনকবলিত গ্রামগুলোর মধ্যে খুকনি ইউনিয়নের আরকান্দি, জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, ঘাটাবাড়ি ও পাকুরতলা, কৈজুরি ইউনিয়নের হাটপাচিল, সোনাতনী ইউনিয়নের পশ্চিম বানতিয়ার, ছোট চানতারা, বড় চানতারা, ধীতপুর, দইকান্দি ও বানিয়া সিঙ্গুলী, গালা ইউনিয়নের আগবাঙ্গলা ও ধলাই উল্লেখযোগ্য।

এ বিষয়ে জালালপুর গ্রামের, দেরাজ মোল্লা, আব্দুল হামিদ, দুলাল শেখ, তয়জাল মোল্লা, আরকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই এসব গ্রাম ও ঘরবাড়ি যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। মানুষজন সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে। এ থেকে এলাকাবাসীকে বাঁচাতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে জালালপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মহির উদ্দিন বলেন, এলাকার সব বাড়িঘর ভেঙে শেষ হয়ে যাচ্ছে। মানুষজন ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে এসব গ্রাম শেষ হয়ে যাবে।

কৈজুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, সোনাতনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান, খুকনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁদ, জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ ও গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়ায় এ বছরও বর্ষা মৌসুম শুরু না হতেই এসব গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে।

বাড়িঘর রক্ষায় এলাকাবাসী দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাই অবিলম্বে ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান তারা। এছাড়া চৌহালি উপজেলার বাঘুটিয়া খাসপুকুরিয়া ইউনিয়নের রেহাইপুকুরিয়া, চরনাকালিয়া, চরসলিমাবাদ, মিটুয়ানী, খাসপুকুরিয়সহ বিভিন্ন গ্রামে যমুনার ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বাঘুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী বলেন, যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে এটা রোধ করতে না পারলে বর্ষা মৌসুমে এই ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকাই যমুনা নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, অচিরেই ভাঙন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ভাঙন রোধে স্থানীয় বাঁধ ও তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।