গ্যাং কালচার থেকে শিশু-কিশোরদের ফেরাতে হবে

দেশের অনেক জায়গাতেই কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। রাজধানীর বাইরেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধের কথা জানা যায়। গত রোববার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সন্দেহে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের সবাইকে পরে মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।

হত্যা, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত এক বছরে ঢাকায় অন্তত পাঁচটি হত্যাকা-ের পেছনে রয়েছে কিশোর গ্যাং। ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে কিশোর গ্যাং রয়েছে কমবেশি ৪০টি।

প্রশ্ন হচ্ছে, কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠে কীভাবে, সেখানে যোগ দেয় কারা, আর তাদের আশ্রয়-প্রশয়ইবা দেয় কারা। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতাসহ স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ব্যবহার করে। সম্প্রতি ‘ডি কোম্পানি’ নামক টঙ্গীর একটি কিশোর গ্যাংকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগে লন্ডন ফেরত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দেশে মাদক আর অস্ত্র সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। যেসব কিশোর অপরাধ জগতে পা বাড়ায় তাদের বড় একটি অংশই কোন না কোনভাবে মাদকসেবী বলে জানা যায়।

পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা আপন পরিবেশে যথেষ্ট মনোযোগ না পাওয়া শিশু-কিশোররা গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গ্যাং কালচার আরও তীব্র হয়েছে।

গ্যাং কালচার থেকে শিশু-কিশোরদের ফেরাতে হবে। কিশোর গ্যাং দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে হবে। তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। মাদকমুক্ত এমন এক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে শিশু-কিশোররা অপরাধী হওয়ার সুযোগ পাবে না। সমাজ ও রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ যেন শিশু-কিশোরদের বিপথগামী করতে না পারে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার থাকতে হবে। সমাজে মূল্যবোধ ও নৈতিকতার চর্চা বাড়াতে হবে।

শিশু-কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা থেকে রক্ষা করতে পরিবারগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। সন্তান যেন একা বা বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে অভিভাবকদেরকেই। সন্তান যেন গুণগত সময় ও আদর্শ পরিবেশ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে মা-বাবাকে।

বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১ , ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৮ শাওয়াল ১৪৪২

গ্যাং কালচার থেকে শিশু-কিশোরদের ফেরাতে হবে

দেশের অনেক জায়গাতেই কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। রাজধানীর বাইরেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধের কথা জানা যায়। গত রোববার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সন্দেহে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের সবাইকে পরে মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।

হত্যা, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত এক বছরে ঢাকায় অন্তত পাঁচটি হত্যাকা-ের পেছনে রয়েছে কিশোর গ্যাং। ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে কিশোর গ্যাং রয়েছে কমবেশি ৪০টি।

প্রশ্ন হচ্ছে, কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠে কীভাবে, সেখানে যোগ দেয় কারা, আর তাদের আশ্রয়-প্রশয়ইবা দেয় কারা। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতাসহ স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ব্যবহার করে। সম্প্রতি ‘ডি কোম্পানি’ নামক টঙ্গীর একটি কিশোর গ্যাংকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগে লন্ডন ফেরত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দেশে মাদক আর অস্ত্র সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। যেসব কিশোর অপরাধ জগতে পা বাড়ায় তাদের বড় একটি অংশই কোন না কোনভাবে মাদকসেবী বলে জানা যায়।

পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা আপন পরিবেশে যথেষ্ট মনোযোগ না পাওয়া শিশু-কিশোররা গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গ্যাং কালচার আরও তীব্র হয়েছে।

গ্যাং কালচার থেকে শিশু-কিশোরদের ফেরাতে হবে। কিশোর গ্যাং দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে হবে। তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। মাদকমুক্ত এমন এক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে শিশু-কিশোররা অপরাধী হওয়ার সুযোগ পাবে না। সমাজ ও রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ যেন শিশু-কিশোরদের বিপথগামী করতে না পারে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার থাকতে হবে। সমাজে মূল্যবোধ ও নৈতিকতার চর্চা বাড়াতে হবে।

শিশু-কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা থেকে রক্ষা করতে পরিবারগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। সন্তান যেন একা বা বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে অভিভাবকদেরকেই। সন্তান যেন গুণগত সময় ও আদর্শ পরিবেশ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে মা-বাবাকে।