টাইলস-স্যানিটারি পণ্যে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি

দেশীয় সব প্রকারের টাইলস ও স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে আরোপিত শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। পাশাপাশি বিদেশে তৈরি টাইলস আমদানি পর্যায়ে ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য হ্রাস না করে আরও বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে তারা।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।

তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ থেকে তৈরি টাইলস আমদানিতে সর্বনিম্ন ট্যারিফ মূল্য বর্গমিটার প্রতি ১ ডলার পর্যন্ত হাস করা হয়েছে। এর ফলে প্রতি বর্গফুটে প্রায় ১২ টাকা মূল্য হ্রাস পাবে। যা আমদানিকে আরও উৎসাহিত করবে এবং এটি সরাসরি দেশীয় পণ্যের বিকাশে অন্তরায় হবে। বিগত বছরেও টাইলস আমদানিতে একইভাবে সর্বনিম্ন ট্যারিফ মূল্য বর্গমিটার প্রতি ১ ডলার পর্যন্ত হ্রাস করা হয়েছিল। পর পর দুই বছরে প্রতি বর্গফুটে প্রায় ২৪ টাকা ট্যারিফ মূল্য হ্রাসের ফলে স্থানীয় বাজারে আমদানিকৃত টাইলসের বিক্রয় মূল্য দেশীয় উৎপাদিত পণ্যের চেয়ে কমে যাবে।’

‘যেখানে দেশীয় পণ্যে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং বিক্রয়কালীন সময়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংয়োজন কর আরোপ রয়েছে, সেখানে তৈরি পণ্যের আমদানি পর্যায়ে ট্যারিফ মূল্য হ্রাস করার ফলে দেশীয় পণ্য অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে। এর ফলে বাজার সংকুচিত হলে সিরামিক খাতটি রুগ্ন শিল্প খাত হিসেবেও পরিণত হতে পারে। এতে আর্থিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।’

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব বিদেশে তৈরি টাইলস আমদানি পর্যায়ে ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য হ্রাস না করে আরও বৃদ্ধি করা হউক। দেশীয় সব টাইলস এবং স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে যথাক্রমে ১৫ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যদিও প্রস্তাবিত বাজেটে শুধুমাত্র দেশীয় স্যানিটারি লং প্যান উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাবিত দেশীয় সব প্রকারের টাইলস এবং স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হোক।’

এ সময় তিনি সিরামিকের সব কাঁচামাল আমদানিতে ৩০ শতাংশ অবচয় ধরে আমদানি শুল্ক পরিশোধের দাবি জানান। প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক কর ছাড় দেয়াসহ দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেটে সিরামিক শিল্প রক্ষায় আমাদের প্রস্তাব প্রতিফলিত হয় নাই। উপরন্তু হয়তো সরকারের অগোচরেই স্থানীয় সিরামিক শিল্পের জন্য ক্ষতির সিদ্ধান্ত আরোপ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে উদ্যোক্তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় রপ্তানি এবং আমদানি-বিকল্প পণ্য হিসেবে দেশে সিরামিক সেক্টরে দেশি-বিদেশি প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৬৮টি সিরামিক টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই খাতে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন এবং পরোক্ষভাবে ৫ লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১ , ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৯ শাওয়াল ১৪৪২

টাইলস-স্যানিটারি পণ্যে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

দেশীয় সব প্রকারের টাইলস ও স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে আরোপিত শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। পাশাপাশি বিদেশে তৈরি টাইলস আমদানি পর্যায়ে ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য হ্রাস না করে আরও বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে তারা।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।

তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ থেকে তৈরি টাইলস আমদানিতে সর্বনিম্ন ট্যারিফ মূল্য বর্গমিটার প্রতি ১ ডলার পর্যন্ত হাস করা হয়েছে। এর ফলে প্রতি বর্গফুটে প্রায় ১২ টাকা মূল্য হ্রাস পাবে। যা আমদানিকে আরও উৎসাহিত করবে এবং এটি সরাসরি দেশীয় পণ্যের বিকাশে অন্তরায় হবে। বিগত বছরেও টাইলস আমদানিতে একইভাবে সর্বনিম্ন ট্যারিফ মূল্য বর্গমিটার প্রতি ১ ডলার পর্যন্ত হ্রাস করা হয়েছিল। পর পর দুই বছরে প্রতি বর্গফুটে প্রায় ২৪ টাকা ট্যারিফ মূল্য হ্রাসের ফলে স্থানীয় বাজারে আমদানিকৃত টাইলসের বিক্রয় মূল্য দেশীয় উৎপাদিত পণ্যের চেয়ে কমে যাবে।’

‘যেখানে দেশীয় পণ্যে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং বিক্রয়কালীন সময়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংয়োজন কর আরোপ রয়েছে, সেখানে তৈরি পণ্যের আমদানি পর্যায়ে ট্যারিফ মূল্য হ্রাস করার ফলে দেশীয় পণ্য অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে। এর ফলে বাজার সংকুচিত হলে সিরামিক খাতটি রুগ্ন শিল্প খাত হিসেবেও পরিণত হতে পারে। এতে আর্থিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।’

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব বিদেশে তৈরি টাইলস আমদানি পর্যায়ে ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য হ্রাস না করে আরও বৃদ্ধি করা হউক। দেশীয় সব টাইলস এবং স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে যথাক্রমে ১৫ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যদিও প্রস্তাবিত বাজেটে শুধুমাত্র দেশীয় স্যানিটারি লং প্যান উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাবিত দেশীয় সব প্রকারের টাইলস এবং স্যানিটারি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হোক।’

এ সময় তিনি সিরামিকের সব কাঁচামাল আমদানিতে ৩০ শতাংশ অবচয় ধরে আমদানি শুল্ক পরিশোধের দাবি জানান। প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক কর ছাড় দেয়াসহ দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেটে সিরামিক শিল্প রক্ষায় আমাদের প্রস্তাব প্রতিফলিত হয় নাই। উপরন্তু হয়তো সরকারের অগোচরেই স্থানীয় সিরামিক শিল্পের জন্য ক্ষতির সিদ্ধান্ত আরোপ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে উদ্যোক্তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় রপ্তানি এবং আমদানি-বিকল্প পণ্য হিসেবে দেশে সিরামিক সেক্টরে দেশি-বিদেশি প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৬৮টি সিরামিক টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই খাতে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন এবং পরোক্ষভাবে ৫ লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।