করোনার ভুয়া রিপোর্ট ঠেকাতে বিদেশগামীদের নতুন নির্দেশনা

চার প্রতিষ্ঠান বন্ধ 

সাম্প্রতিককালে বিদেশগামী যাত্রীদের কাছে কয়েকটি ল্যাবের মাধ্যমে ভুয়া করোনা রিপোর্ট সরবরাহ করা হচ্ছে এমন অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ কারণে নিজ বিল্ডিংয়ের (ল্যাবের) বাইরে করোনার নমুনা সংগ্রহ এবং বাড়িতে গিয়ে বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানীর চারটি ল্যাবকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অভিযুক্ত ল্যাব চারটি হচ্ছেÑ সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, স্টিমজ হেলথ কেয়ার, আল জামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডের মিরপুর শাখা। এসব প্রতিষ্ঠানকে নমুনা সংগ্রহ ও করোনার সনদ দেয়ার কার্যক্রম স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অধিদপ্তর বলছে, এ ধরনের অনৈতিক কর্মকা- জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং দেশের ভাবমূর্তি ভয়ঙ্কররূপে ক্ষুণœ করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে আপনার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিদেশগামী যাত্রীদের ভুয়া কোভিড-১৯ রিপোর্ট প্রদানসহ (যেমন- পজেটিভ রোগীকে নেগেটিভ সনদ প্রদান, নমুনা সংগ্রহ ব্যতীত নেগেটিভ সনদ প্রদান, প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, নমুনা সংগ্রহ বুথের নামে দালাল নিয়োগ ইত্যাদি) বেশকিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়, যা ডিএইচআইএস-২ ডাটাবেজ যাচাইয়ে ও প্রাথমিক তদন্ত ও অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়। এ ধরনের কর্মকা- অনাকাক্সিক্ষত, জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং দেশের ভাবমূর্তি ভয়ঙ্করভাবে ক্ষুণœ করছে। এ অবস্থায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আপনার প্রতিষ্ঠানে ও প্রতিষ্ঠানের আওতায় অন্য বুথগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহসহ বিদেশগামী যাত্রীদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য মহাপরিচালকের অনুমোদনক্রমে নির্দেশ প্রদান করা হলো।

একইসঙ্গে করোনা আরটি-পিসিআর পরীক্ষার অনুমোদন পাওয়া দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবগুলোকে আটটি নির্দেশনা মানতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে বা এর ব্যত্যয় ঘটলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যেকোন ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হচ্ছে

১. পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিদেশগামী যাত্রীদের কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহের জন্য ল্যাবগুলোর নিজস্ব ভবনের বাইরে স্থাপিত সব ধরনের নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

২. বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা কোন অবস্থাতেই বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা যাবে না।

৩. বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহের সময় মূল পাসপোর্ট যাচাই করে, পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখপূর্বক নমুনা সংগ্রহ ফরম পূরণ করতে হবে। কোনক্রমেই পাসপোর্টের ফটোকপি গ্রহণযোগ্য হবে না।

৪. বিমানবন্দরে বিদেশগামী যাত্রীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা সনদ, পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে যাচাই করা হবে। শুধু টেলিফোন/মোবাইল নম্বর প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।

৫. সাতদিনের মধ্যে কোন পজেটিভ রিপোর্ট থাকলে ওই যাত্রীকে দেশত্যাগের অনুমতি দেয়া যাবে না।

৬. কোন বিদেশগামী যাত্রী কোভিড-১৯ পজেটিভি হলে, সে কমপক্ষে সাতদিন পর শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ল্যাবে পুনরায় পরীক্ষা করাবেন এবং পরবর্তী সময় যদি নেগেটিভ সনদপ্রাপ্ত হন, সেক্ষেত্রে দেশত্যাগ করতে পারবেন।

৭. কোন আরটি-পিসিআর ল্যাবের ব্যাপারে কোন ধরনের অভিযোগ উত্থাপিত হলে ল্যাবটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

৮. কোন বিদেশগামী যাত্রীর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উভয় স্থানে প্রথমে পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে যাচাই করে দেখতে হবে যে, সে গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্য কোথাও আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করেছে কিনা। করে থাকলে এবং পজেটিভ হলে তাকে সাতদিন পর্যন্ত পুনরায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করার সুযোগ দেয়া যাবে না।

শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১ , ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৯ শাওয়াল ১৪৪২

করোনার ভুয়া রিপোর্ট ঠেকাতে বিদেশগামীদের নতুন নির্দেশনা

চার প্রতিষ্ঠান বন্ধ 

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সাম্প্রতিককালে বিদেশগামী যাত্রীদের কাছে কয়েকটি ল্যাবের মাধ্যমে ভুয়া করোনা রিপোর্ট সরবরাহ করা হচ্ছে এমন অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ কারণে নিজ বিল্ডিংয়ের (ল্যাবের) বাইরে করোনার নমুনা সংগ্রহ এবং বাড়িতে গিয়ে বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানীর চারটি ল্যাবকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অভিযুক্ত ল্যাব চারটি হচ্ছেÑ সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, স্টিমজ হেলথ কেয়ার, আল জামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডের মিরপুর শাখা। এসব প্রতিষ্ঠানকে নমুনা সংগ্রহ ও করোনার সনদ দেয়ার কার্যক্রম স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অধিদপ্তর বলছে, এ ধরনের অনৈতিক কর্মকা- জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং দেশের ভাবমূর্তি ভয়ঙ্কররূপে ক্ষুণœ করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে আপনার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিদেশগামী যাত্রীদের ভুয়া কোভিড-১৯ রিপোর্ট প্রদানসহ (যেমন- পজেটিভ রোগীকে নেগেটিভ সনদ প্রদান, নমুনা সংগ্রহ ব্যতীত নেগেটিভ সনদ প্রদান, প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, নমুনা সংগ্রহ বুথের নামে দালাল নিয়োগ ইত্যাদি) বেশকিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়, যা ডিএইচআইএস-২ ডাটাবেজ যাচাইয়ে ও প্রাথমিক তদন্ত ও অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়। এ ধরনের কর্মকা- অনাকাক্সিক্ষত, জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং দেশের ভাবমূর্তি ভয়ঙ্করভাবে ক্ষুণœ করছে। এ অবস্থায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আপনার প্রতিষ্ঠানে ও প্রতিষ্ঠানের আওতায় অন্য বুথগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহসহ বিদেশগামী যাত্রীদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য মহাপরিচালকের অনুমোদনক্রমে নির্দেশ প্রদান করা হলো।

একইসঙ্গে করোনা আরটি-পিসিআর পরীক্ষার অনুমোদন পাওয়া দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবগুলোকে আটটি নির্দেশনা মানতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে বা এর ব্যত্যয় ঘটলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যেকোন ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হচ্ছে

১. পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিদেশগামী যাত্রীদের কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহের জন্য ল্যাবগুলোর নিজস্ব ভবনের বাইরে স্থাপিত সব ধরনের নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

২. বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা কোন অবস্থাতেই বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা যাবে না।

৩. বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহের সময় মূল পাসপোর্ট যাচাই করে, পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখপূর্বক নমুনা সংগ্রহ ফরম পূরণ করতে হবে। কোনক্রমেই পাসপোর্টের ফটোকপি গ্রহণযোগ্য হবে না।

৪. বিমানবন্দরে বিদেশগামী যাত্রীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা সনদ, পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে যাচাই করা হবে। শুধু টেলিফোন/মোবাইল নম্বর প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।

৫. সাতদিনের মধ্যে কোন পজেটিভ রিপোর্ট থাকলে ওই যাত্রীকে দেশত্যাগের অনুমতি দেয়া যাবে না।

৬. কোন বিদেশগামী যাত্রী কোভিড-১৯ পজেটিভি হলে, সে কমপক্ষে সাতদিন পর শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ল্যাবে পুনরায় পরীক্ষা করাবেন এবং পরবর্তী সময় যদি নেগেটিভ সনদপ্রাপ্ত হন, সেক্ষেত্রে দেশত্যাগ করতে পারবেন।

৭. কোন আরটি-পিসিআর ল্যাবের ব্যাপারে কোন ধরনের অভিযোগ উত্থাপিত হলে ল্যাবটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

৮. কোন বিদেশগামী যাত্রীর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উভয় স্থানে প্রথমে পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে যাচাই করে দেখতে হবে যে, সে গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্য কোথাও আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করেছে কিনা। করে থাকলে এবং পজেটিভ হলে তাকে সাতদিন পর্যন্ত পুনরায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করার সুযোগ দেয়া যাবে না।