এনু-রূপমসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক

চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্যাসিনো ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের মাধ্যমে পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক এনু এবং রূপম ভূইয়ার ৮৪ কোটি ৯৪ লাখ ৮ হাজার ৬৬৬ টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। গত প্রায় ২ বছর আগে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলার পর তদন্ত করে এ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুই ভাইসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে যাচ্ছে দুদক।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেই ধারাবাহিতায় ২৪ সেপ্টেম্বর দুই ভাই এনু-রূপনের বাড়িতে অভিযান চালায় র?্যাব। সেখান থেকে টাকা ও গহনা জব্দ করার পর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনুর বন্ধু হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ৮ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র‌্যাব। পরবর্তীতে দুদক তাদের সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধান শেষে গত বছর ২৩ অক্টোবর ৩৫ কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

গতকাল দুদকের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মেসার্স এনু রূপন স্টিল হাউজের মালিক রূপন ভূইয়ার বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামূল আহসান গাজি। মামলাটি তদন্ত শেষে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে তার ৪২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭০ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৫ কোটি ৩৬ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ টাকার সম্পদের বৈধ থাকার তথ্য থাকলেও ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৬ হাজার ৯৮৭ টাকার সম্পদের কোন বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। এ পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী কমিশন মামলাটি আদালতে চার্জশিটের জন্য অনুমোদন দেন।

অপরদিকে এনামুল হক এনুর বিরুদ্ধে একই অভিযোগে পৃথক আরেকটি মামলা করেন একই কর্মকর্তা। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত করে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ রহমান এবং হারুন অর রশিদ নামে দুজন তাকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করার তথ্য পেয়েছে। ওই দুইজনের কাছে মোট ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার সম্পদ দখলে আছে যার মালিক মূলত অনু। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় এনুর সঙ্গে আবুল কালাম আজদ ও হারুন অর রশিদকেও আসামি করে দুদক চার্জশিট দিচ্ছে।

শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১ , ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৯ শাওয়াল ১৪৪২

ক্যাসিনোকাণ্ড

এনু-রূপমসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্যাসিনো ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের মাধ্যমে পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক এনু এবং রূপম ভূইয়ার ৮৪ কোটি ৯৪ লাখ ৮ হাজার ৬৬৬ টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। গত প্রায় ২ বছর আগে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলার পর তদন্ত করে এ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুই ভাইসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে যাচ্ছে দুদক।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেই ধারাবাহিতায় ২৪ সেপ্টেম্বর দুই ভাই এনু-রূপনের বাড়িতে অভিযান চালায় র?্যাব। সেখান থেকে টাকা ও গহনা জব্দ করার পর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনুর বন্ধু হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ৮ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র‌্যাব। পরবর্তীতে দুদক তাদের সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধান শেষে গত বছর ২৩ অক্টোবর ৩৫ কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

গতকাল দুদকের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মেসার্স এনু রূপন স্টিল হাউজের মালিক রূপন ভূইয়ার বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামূল আহসান গাজি। মামলাটি তদন্ত শেষে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে তার ৪২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭০ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৫ কোটি ৩৬ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ টাকার সম্পদের বৈধ থাকার তথ্য থাকলেও ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৬ হাজার ৯৮৭ টাকার সম্পদের কোন বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। এ পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী কমিশন মামলাটি আদালতে চার্জশিটের জন্য অনুমোদন দেন।

অপরদিকে এনামুল হক এনুর বিরুদ্ধে একই অভিযোগে পৃথক আরেকটি মামলা করেন একই কর্মকর্তা। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত করে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ রহমান এবং হারুন অর রশিদ নামে দুজন তাকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করার তথ্য পেয়েছে। ওই দুইজনের কাছে মোট ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার সম্পদ দখলে আছে যার মালিক মূলত অনু। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় এনুর সঙ্গে আবুল কালাম আজদ ও হারুন অর রশিদকেও আসামি করে দুদক চার্জশিট দিচ্ছে।