মুন্সীগঞ্জে ছাত্রলীগের নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু

দু’জন গ্রেপ্তার পুত্র হত্যার বিচার চেয়ে মা সড়কে শুয়ে পড়েন

মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার রামপাল ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে নির্মম নির্যাতনে প্রাণ গেছে রামপাল ইউনিয়নের উত্তর কাজী কসবা এলাকার মো. নয়ন মিজির (৩৩)। গতকাল সকালে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নয়ন।

মৃত নয়ন উত্তর কাজী কসবা গ্রামের মৃত বাতেন মিজির ছেলে। এ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন তৌকির তালুকদার (২৫) ও নাহিদ ভুইয়া (২০)।

এ দিকে ছেলে হত্যার প্রতিবাদে মা রাশিদা বেগম সিপাহীপাড়া সড়কে শুয়ে পড়ে অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ প্রশাসনের কাছে ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি। পরে পুলিশের আশ্বাসে তিনি সড়ক থেকে উঠে যান।

মৃত নয়নের মা রাশিদা বেগম (৫৫) জানান, গত মাসেই রামপাল ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত, ছাত্রলীগ নেতা শোভন, চঞ্চল, কাঞ্চন, বাদশা ও খলিল সবাই মিলে আমার ছেলে নয়নের খামারে কবুতর চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। এ সময় নয়নকে মারধর করে সব কিছু নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলাও হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার বিকেলে কাজী কসবা শাকিলের মুদি দোকানের সামনে থেকে প্রান্ত ও তার বাহিনী নয়নকে তুলে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। পরে সেখান থেকে সিপাহীপাড়া প্রতিভা কিন্ডারগার্টেনের পেছনে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হাত-পা ভেঙে মাটিতে ফেলে রাখে।

রাশিদা বেগম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হাতে পায়ে ধরেও ছেলেকে বাঁচাতে পারিনি। এমনকি নয়নের দুই মেয়ে ও বোন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত, শোভন ও তাদের সহযোগীদের পায়ে ধরেও তাকে বাঁচাতে পারেনি। তারা নির্মমভাবে মেরে নয়নকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।

দ্রুত নয়নকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল, সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পঙ্গুতে পাঠানো হয়। গতকাল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নয়ন।

এই হামলার ঘটনায় বুধবারই রাশিদা রামপাল ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত (২৮), চঞ্চল (৩২), শোভন (৩২), রনি (৩২) ও কাঞ্চনের (২৬) নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও সাত-আট জনকে আসামি করে সদর থনায় মামলা দায়ের করেন।

গতকাল মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ আবেদীন জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে মারামারির ঘটনায় মো. নয়ন মিজি নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার দায়ের হওয়া মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১ , ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৯ শাওয়াল ১৪৪২

মুন্সীগঞ্জে ছাত্রলীগের নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু

দু’জন গ্রেপ্তার পুত্র হত্যার বিচার চেয়ে মা সড়কে শুয়ে পড়েন

মাহাবুব আলম লিটন, মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার রামপাল ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে নির্মম নির্যাতনে প্রাণ গেছে রামপাল ইউনিয়নের উত্তর কাজী কসবা এলাকার মো. নয়ন মিজির (৩৩)। গতকাল সকালে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নয়ন।

মৃত নয়ন উত্তর কাজী কসবা গ্রামের মৃত বাতেন মিজির ছেলে। এ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন তৌকির তালুকদার (২৫) ও নাহিদ ভুইয়া (২০)।

এ দিকে ছেলে হত্যার প্রতিবাদে মা রাশিদা বেগম সিপাহীপাড়া সড়কে শুয়ে পড়ে অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ প্রশাসনের কাছে ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি। পরে পুলিশের আশ্বাসে তিনি সড়ক থেকে উঠে যান।

মৃত নয়নের মা রাশিদা বেগম (৫৫) জানান, গত মাসেই রামপাল ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত, ছাত্রলীগ নেতা শোভন, চঞ্চল, কাঞ্চন, বাদশা ও খলিল সবাই মিলে আমার ছেলে নয়নের খামারে কবুতর চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। এ সময় নয়নকে মারধর করে সব কিছু নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলাও হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার বিকেলে কাজী কসবা শাকিলের মুদি দোকানের সামনে থেকে প্রান্ত ও তার বাহিনী নয়নকে তুলে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। পরে সেখান থেকে সিপাহীপাড়া প্রতিভা কিন্ডারগার্টেনের পেছনে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হাত-পা ভেঙে মাটিতে ফেলে রাখে।

রাশিদা বেগম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হাতে পায়ে ধরেও ছেলেকে বাঁচাতে পারিনি। এমনকি নয়নের দুই মেয়ে ও বোন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত, শোভন ও তাদের সহযোগীদের পায়ে ধরেও তাকে বাঁচাতে পারেনি। তারা নির্মমভাবে মেরে নয়নকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।

দ্রুত নয়নকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল, সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পঙ্গুতে পাঠানো হয়। গতকাল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নয়ন।

এই হামলার ঘটনায় বুধবারই রাশিদা রামপাল ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত (২৮), চঞ্চল (৩২), শোভন (৩২), রনি (৩২) ও কাঞ্চনের (২৬) নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও সাত-আট জনকে আসামি করে সদর থনায় মামলা দায়ের করেন।

গতকাল মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ আবেদীন জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে মারামারির ঘটনায় মো. নয়ন মিজি নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার দায়ের হওয়া মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।