এ বছর চার মাসে বজ্রপাতে ১৭৭ জনের মৃত্যু

চলতি বছরে মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত গত ৪ মাসে বজ্রপাতে ১৭৭ জন মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছেন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএএফ)। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছে ৪৭ জন। এর মধ্যে শুধু কৃষি কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ১২২ জনের। বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা গেছে ১৫ জন। ১০ জন ঘরে অবস্থানকালীন বজ্রপাতে মারা গেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে এসএসটিএএফ। জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজ ও টেলিভিশনের স্ক্রল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই বজ্রপাতে হতাহতের এই পরিসংখ্যান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর ড. কবিরুল বাশার, বজ্রপাত বিশেষজ্ঞ ড. মুনির আহমেদ, আইডিইবি রিসার্চ ও টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট রিসার্চ ফেলো প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রাশিম মোল্লা প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছর বজ্রপাতে মৃত্যুর মোট সংখ্যার মধ্যে পুরুষ মারা গেছে ১৪৯ এবং নারী ২৮ জন। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৩ জন, কিশোর ৬ ও কিশোরীর সংখ্যা ৩ জন। নৌকায় মাছ ধরার সময় ৬ জন। মাঠে গরু আনতে গিয়ে ৫ জন। মাঠে খেলা করার সময় ৩ জন ও বাড়ির আঙিনায়/উঠানে খেলা করার সময় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, ভ্যান/রিকশা চালানোর সময় ২ জন এবং গাড়ির ভেতরে অবস্থানকালীন বজ্রপাতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বজ্রপাতে হতাহতের কোন ঘটনা না থাকলেও মার্চ মাসের শেষের দিন থেকে মৃত্যুর ঘটনা শুরু হয়। এর পর থেকে চলতি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মারা যায় ১৭৭ জন। অন্যদিকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মারা গেছে ৬৫ জন। মৃত্যুর পাশাপাশি এ বছর বজ্রপাতে আহত হয়েছে ৪৭ জন। এর মধ্যে ৪০ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী রয়েছে। এ বছর বজ্রপাতের হট স্পট হিসেবে চিহিৃত হয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা। এই জেলায় চলতি বছরের মে এবং জুন মাসেই মারা গেছে ১৮ জন। এছাড়া, চলতি বছরের ৪ মাসে জামালপুরে ১৪ জন, নেত্রকোণায় ১৩ জন, চাপাইনবাবগঞ্জে ১৬ ও চট্টগ্রামে ১০ জন মারা গেছে। বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে ৬ দফা সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। এগুলো- ১. বজ্রপাতের ১৫ মিনিট আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর জানতে পারে কোন কোন এলাকায় বজ্রপাত হবে। তা মোবাইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তথ্য সরবরাহ করা, ২. প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঘোষণা করে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, ৩. খোলা স্থানে বজ্রপাত নিরোধক দন্ডসহ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, ৪. আমদানি করা থান্ডার প্রটেকশন সিস্টেম পণ্যে শুল্ক মওকুফ, ৫. সরকারিভাবে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন, ৬. বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা না থাকলে ভবনের নকশা অনুমোদন না করার সুপারিশ।

শনিবার, ১২ জুন ২০২১ , ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৩০ শাওয়াল ১৪৪২

এ বছর চার মাসে বজ্রপাতে ১৭৭ জনের মৃত্যু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

চলতি বছরে মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত গত ৪ মাসে বজ্রপাতে ১৭৭ জন মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছেন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএএফ)। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছে ৪৭ জন। এর মধ্যে শুধু কৃষি কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ১২২ জনের। বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা গেছে ১৫ জন। ১০ জন ঘরে অবস্থানকালীন বজ্রপাতে মারা গেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে এসএসটিএএফ। জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজ ও টেলিভিশনের স্ক্রল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই বজ্রপাতে হতাহতের এই পরিসংখ্যান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর ড. কবিরুল বাশার, বজ্রপাত বিশেষজ্ঞ ড. মুনির আহমেদ, আইডিইবি রিসার্চ ও টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট রিসার্চ ফেলো প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রাশিম মোল্লা প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছর বজ্রপাতে মৃত্যুর মোট সংখ্যার মধ্যে পুরুষ মারা গেছে ১৪৯ এবং নারী ২৮ জন। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৩ জন, কিশোর ৬ ও কিশোরীর সংখ্যা ৩ জন। নৌকায় মাছ ধরার সময় ৬ জন। মাঠে গরু আনতে গিয়ে ৫ জন। মাঠে খেলা করার সময় ৩ জন ও বাড়ির আঙিনায়/উঠানে খেলা করার সময় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, ভ্যান/রিকশা চালানোর সময় ২ জন এবং গাড়ির ভেতরে অবস্থানকালীন বজ্রপাতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বজ্রপাতে হতাহতের কোন ঘটনা না থাকলেও মার্চ মাসের শেষের দিন থেকে মৃত্যুর ঘটনা শুরু হয়। এর পর থেকে চলতি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মারা যায় ১৭৭ জন। অন্যদিকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মারা গেছে ৬৫ জন। মৃত্যুর পাশাপাশি এ বছর বজ্রপাতে আহত হয়েছে ৪৭ জন। এর মধ্যে ৪০ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী রয়েছে। এ বছর বজ্রপাতের হট স্পট হিসেবে চিহিৃত হয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা। এই জেলায় চলতি বছরের মে এবং জুন মাসেই মারা গেছে ১৮ জন। এছাড়া, চলতি বছরের ৪ মাসে জামালপুরে ১৪ জন, নেত্রকোণায় ১৩ জন, চাপাইনবাবগঞ্জে ১৬ ও চট্টগ্রামে ১০ জন মারা গেছে। বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে ৬ দফা সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। এগুলো- ১. বজ্রপাতের ১৫ মিনিট আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর জানতে পারে কোন কোন এলাকায় বজ্রপাত হবে। তা মোবাইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তথ্য সরবরাহ করা, ২. প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঘোষণা করে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, ৩. খোলা স্থানে বজ্রপাত নিরোধক দন্ডসহ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, ৪. আমদানি করা থান্ডার প্রটেকশন সিস্টেম পণ্যে শুল্ক মওকুফ, ৫. সরকারিভাবে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন, ৬. বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা না থাকলে ভবনের নকশা অনুমোদন না করার সুপারিশ।