পাবনা গণপূর্ত অফিসে ঠিকাদার আ’লীগ নেতার অস্ত্রের মহড়া

গোটা অফিসজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে

পাবনা গণপূর্ত ভবনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন সদস্য অস্ত্রের মহড়া দেয়। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান গণপূর্ত ভবনে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ সদস্যদের ওই অস্ত্রের মহড়া নিয়ে আলোচনা করে বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এভাবে সরকারি দপ্তরে অস্ত্রের মহড়া মোটেই সহ্য করা হবে না।’

এদিকে এ ঘটনায় গণপূর্ত কর্মরতদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। লিখিত অভিযোগ না পেলেও বিষয়টি তদন্ত করছে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানা গেছে, গত ৬ জুন পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাজী ফারুক, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এআর খান মামুন এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালুর নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গণপূর্ত ভবনে প্রবেশ করে। এ সময় হেলমেট পরিহিত অবস্থায় ছিলেন অনেকে। আগতরা বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমকে খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের কক্ষে গিয়ে তার টেবিলে আগ্নেয়াস্ত্র রেখে অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর তারা বের হয়ে যায়।

অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করার পর দেখা যায়, দুপুর ১২টা দুই মিনিটে গোলাপী পাঞ্জাবি ও টুপি পরিহিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ফারুক আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে জামার হাতা গুটিয়ে গণপূর্ত ভবনে প্রবেশ করেন। তার পেছনে হাফ শার্ট ও মাস্ক পরিহিত অবস্থায় শটগান হাতে ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এআর খান মামুন ও সাদা-কালো টি-শার্ট পরিহিত যুবলীগ নেতা শেখ লালু। অস্ত্র নিয়েই তারা অফিসের বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে। বাইরে সশস্ত্র সহযোগীরা অপেক্ষা করতে থাকে। ১২টা ১২ মিনিটে তারা অস্ত্র প্রদর্শন করেই বের হয়ে চলে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবনা গণপূর্ত বিভাগে কর্মরতরা জানান, বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রভাব বলয় তৈরি করে উন্নয়ন কাজের কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নিজেদের আয়ত্তে নিতে চেষ্টা করেন ক্ষমতাসীন দলের ঠিকাদাররা। এসব লোকজনের দাপটে অনেক পেশাদার ঠিকাদাররা গণপূর্ত বিভাগে টেন্ডার জমা দিতেই পারেন না। টেন্ডার নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যেই বিভিন্ন গ্রুপের দ্বন্দ্ব রয়েছে। পাশাপাশি অফিসের প্রকৌশলী ও কর্মরতদের নিজেদের পক্ষে নিতে তারা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। কিছুদিন ধরে এসবের জেরে প্রভাব ও ক্ষমতার দাপট দেখাতে তারা বিভিন্ন সময় শো-ডাউন, শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছেন। তবে অস্ত্র নিয়ে অফিসে মহড়ার ঘটনা নজিরবিহীন। আমরা চরম আতঙ্কে ভুগছি।

গণপূর্ত বিভাগ পাবনার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ঠিকাদাররা আমার কক্ষে এসেছিলেন। বিল কিংবা টেন্ডার নিয়ে ক্ষোভ থেকেই তাদের এমন শোডাউন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাবনায় নতুন যোগদান করেছি, এসব বিষয়ে আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। তবে সিসিটিভি ফুটেজে অস্ত্র হাতে অনেকে এসেছেন দেখেছি। তারা আমাকে সরাসরি বা ফোনে কোন হুমকি দেননি, কথাও হয়নি। তাই আমরা লিখিত অভিযোগ করিনি।’

অস্ত্র নিয়ে সদলবলে গণপূর্ত বিভাগে প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাজী ফারুক বলেন, আমি গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার নই। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে মামুন ও লালু আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। তবে এভাবে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।

পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এআর খান মামুন বলেন, নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে বৈধ লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি নিয়ে আমি ব্যবসায়িক কাজে ইটভাটায় যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের সঙ্গে কথা বলতে গণপূর্ত বিভাগে যাই। কিন্তু তিনি না থাকায় আমরা ফিরে আসি। তাকে ভয় দেখানোর উদ্দেশে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়নি। প্রতিপক্ষ ঠিকাদাররা বিষয়টিকে অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করছে। একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে যুবলীগ নেতা শেখ লালু বলেন, ভুলবশত আমরা অস্ত্র নিয়ে অফিসে ঢুকে পড়েছিলাম।

এদিকে গণপূর্ত ভবনে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রকৌশলী বলেন, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে পাবনায় চিহ্নিত কিছু ঠিকাদার সব দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। জোরপূর্বক কাজ নেয়া, নি¤œমানের কাজ করাসহ এমন কোন অনিয়ম নেই যে তারা করেন না। তাদের কথামতো না চললেই অকথ্য গালাগাল, মারধরের শিকার হন প্রকৌশলীরা। এর আগেও হাজী ফারুক প্রকৌশলীদের মারধর করেন, জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপারিনটেনডেন্টকে লাঞ্ছিত করেন। সেসব ঘটনার বিচার না করে তাদের বদলি করানো হয়েছে। এ কারণেই তাদের দুঃসাহস বেড়েছে।

ঘটনার পর এক সপ্তাহ চলে গেছে। কিন্তু এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। পাবনা পুলিশ সুপার মুহিবুল হক খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অস্ত্র আইনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি তদন্ত করছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

image

পাবনা : গোলাপী পাঞ্জাবি ও টুপি পরা আ’লীগ নেতা হাজী ফারুক, পেছনে শটগান হাতে এআর খান মামুন ও যুবলীগ নেতা শেখ লালু। অস্ত্র হাতেই দপ্তরের কক্ষে কক্ষে ঘুরে ত্রাস সৃষ্টি করেন -ছবি সিসি ক্যামেরা থেকে সংগৃহিত

আরও খবর
বইয়ের জগৎ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
স্বাস্থ্য খাতে কোন দুর্নীতি হয়নি স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনার চেয়ে নির্বাচন অধিক গুরুত্বপূর্ণ সিইসি
কোম্পানীগঞ্জ ফের অশান্ত, সংঘর্ষ, গুলি, আহত ১০
সিরিয়ায় প্রশিক্ষণ, যুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে গ্রেপ্তার জঙ্গি সাখাওয়াত
করোনা রোগী বেড়েছে ২৭ শতাংশ
সাকিব তিন ম্যাচে নিষিদ্ধ, জরিমানা
অভয়াশ্রমের অতিথিরা ভালোবাসা পেয়ে ফিরে যায়নি নিজ দেশে

রবিবার, ১৩ জুন ২০২১ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৩১ রজব ১৪৪২

পাবনা গণপূর্ত অফিসে ঠিকাদার আ’লীগ নেতার অস্ত্রের মহড়া

গোটা অফিসজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা

image

পাবনা : গোলাপী পাঞ্জাবি ও টুপি পরা আ’লীগ নেতা হাজী ফারুক, পেছনে শটগান হাতে এআর খান মামুন ও যুবলীগ নেতা শেখ লালু। অস্ত্র হাতেই দপ্তরের কক্ষে কক্ষে ঘুরে ত্রাস সৃষ্টি করেন -ছবি সিসি ক্যামেরা থেকে সংগৃহিত

পাবনা গণপূর্ত ভবনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন সদস্য অস্ত্রের মহড়া দেয়। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান গণপূর্ত ভবনে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ সদস্যদের ওই অস্ত্রের মহড়া নিয়ে আলোচনা করে বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এভাবে সরকারি দপ্তরে অস্ত্রের মহড়া মোটেই সহ্য করা হবে না।’

এদিকে এ ঘটনায় গণপূর্ত কর্মরতদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। লিখিত অভিযোগ না পেলেও বিষয়টি তদন্ত করছে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানা গেছে, গত ৬ জুন পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাজী ফারুক, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এআর খান মামুন এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালুর নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গণপূর্ত ভবনে প্রবেশ করে। এ সময় হেলমেট পরিহিত অবস্থায় ছিলেন অনেকে। আগতরা বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমকে খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের কক্ষে গিয়ে তার টেবিলে আগ্নেয়াস্ত্র রেখে অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর তারা বের হয়ে যায়।

অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করার পর দেখা যায়, দুপুর ১২টা দুই মিনিটে গোলাপী পাঞ্জাবি ও টুপি পরিহিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ফারুক আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে জামার হাতা গুটিয়ে গণপূর্ত ভবনে প্রবেশ করেন। তার পেছনে হাফ শার্ট ও মাস্ক পরিহিত অবস্থায় শটগান হাতে ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এআর খান মামুন ও সাদা-কালো টি-শার্ট পরিহিত যুবলীগ নেতা শেখ লালু। অস্ত্র নিয়েই তারা অফিসের বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে। বাইরে সশস্ত্র সহযোগীরা অপেক্ষা করতে থাকে। ১২টা ১২ মিনিটে তারা অস্ত্র প্রদর্শন করেই বের হয়ে চলে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবনা গণপূর্ত বিভাগে কর্মরতরা জানান, বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রভাব বলয় তৈরি করে উন্নয়ন কাজের কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নিজেদের আয়ত্তে নিতে চেষ্টা করেন ক্ষমতাসীন দলের ঠিকাদাররা। এসব লোকজনের দাপটে অনেক পেশাদার ঠিকাদাররা গণপূর্ত বিভাগে টেন্ডার জমা দিতেই পারেন না। টেন্ডার নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যেই বিভিন্ন গ্রুপের দ্বন্দ্ব রয়েছে। পাশাপাশি অফিসের প্রকৌশলী ও কর্মরতদের নিজেদের পক্ষে নিতে তারা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। কিছুদিন ধরে এসবের জেরে প্রভাব ও ক্ষমতার দাপট দেখাতে তারা বিভিন্ন সময় শো-ডাউন, শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছেন। তবে অস্ত্র নিয়ে অফিসে মহড়ার ঘটনা নজিরবিহীন। আমরা চরম আতঙ্কে ভুগছি।

গণপূর্ত বিভাগ পাবনার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ঠিকাদাররা আমার কক্ষে এসেছিলেন। বিল কিংবা টেন্ডার নিয়ে ক্ষোভ থেকেই তাদের এমন শোডাউন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাবনায় নতুন যোগদান করেছি, এসব বিষয়ে আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। তবে সিসিটিভি ফুটেজে অস্ত্র হাতে অনেকে এসেছেন দেখেছি। তারা আমাকে সরাসরি বা ফোনে কোন হুমকি দেননি, কথাও হয়নি। তাই আমরা লিখিত অভিযোগ করিনি।’

অস্ত্র নিয়ে সদলবলে গণপূর্ত বিভাগে প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাজী ফারুক বলেন, আমি গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার নই। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে মামুন ও লালু আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। তবে এভাবে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।

পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এআর খান মামুন বলেন, নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে বৈধ লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি নিয়ে আমি ব্যবসায়িক কাজে ইটভাটায় যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের সঙ্গে কথা বলতে গণপূর্ত বিভাগে যাই। কিন্তু তিনি না থাকায় আমরা ফিরে আসি। তাকে ভয় দেখানোর উদ্দেশে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়নি। প্রতিপক্ষ ঠিকাদাররা বিষয়টিকে অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করছে। একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে যুবলীগ নেতা শেখ লালু বলেন, ভুলবশত আমরা অস্ত্র নিয়ে অফিসে ঢুকে পড়েছিলাম।

এদিকে গণপূর্ত ভবনে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রকৌশলী বলেন, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে পাবনায় চিহ্নিত কিছু ঠিকাদার সব দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। জোরপূর্বক কাজ নেয়া, নি¤œমানের কাজ করাসহ এমন কোন অনিয়ম নেই যে তারা করেন না। তাদের কথামতো না চললেই অকথ্য গালাগাল, মারধরের শিকার হন প্রকৌশলীরা। এর আগেও হাজী ফারুক প্রকৌশলীদের মারধর করেন, জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপারিনটেনডেন্টকে লাঞ্ছিত করেন। সেসব ঘটনার বিচার না করে তাদের বদলি করানো হয়েছে। এ কারণেই তাদের দুঃসাহস বেড়েছে।

ঘটনার পর এক সপ্তাহ চলে গেছে। কিন্তু এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। পাবনা পুলিশ সুপার মুহিবুল হক খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অস্ত্র আইনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি তদন্ত করছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’