শ্রমিক-আনসার, পুলিশ সংঘর্ষ : আহত ২০

সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডে শ্রমিক-আনসার, পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছে। বকেয়ার দাবিতে গতকাল সকাল ৭টা থেকে আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আদমজী ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার চাকরিচ্যূত শ্রমিকরা ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে অবস্থান নিলে আনসার ও পুলিশ তাদের সরে যেতে বললে বাগবিত-ার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, আদমজী ইপিজেডের কুনতুং অ্যাপারেলস লি. (ফ্যাশন সিটি) নামক পোশাক কারখানাটি প্রথমে গত বছরের সেপ্টেম্বরে লে-অফ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১-এর ৩১ জানুয়ারি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয় প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষ থেকে। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। মালিক পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় পাওনা পরিশোধের আশ^াস দেয়া হলেও অদ্যাবধি তা পরিশোধ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার পর থেকে পাওনা আদায়ের জন্য বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করেও কোন ফল পাচ্ছে না শ্রমিকরা। কারখানার শ্রমিকদের গতকাল বকেয়া পরিশোধের পূর্ব নির্ধার্রিত তারিখ ছিল। সে অনুযায়ী শ্রমিকরা বকেয়া বেতন নেয়ার জন্য সকাল ৭টায় আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে ডেমরা-আদমজী-নারায়ণগঞ্জ সড়কে জড়ো হতে থাকে। এ সময় ইপিজেডে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তারা শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পরে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কে আগুন জ¦ালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে দুই দফায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের জন্য আন্দোলনরত শ্রমিকদের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের কথা মেনে না নিয়ে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও আনসারদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকরা ইট-পাটকেল ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা টিয়ারশেল ও গুলি নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়। এরপর সকাল ১১টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, শ্রমিকরা জানিয়েছে, মালিকপক্ষ তাদের বারবার সময় দিয়েও পাওনা পরিশোধ করছে না। শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মো. মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে এবং ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশও গুলি ছোড়ে এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধে মালিকপক্ষ কিছুই জানায়নি। এ বিষয়ে বেপজার জিএম আহসান কবির জানান, কারখানা বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ। তবে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে কোন সময় বা তারিখ নির্ধারণ হয়নি।

আরও খবর
ঢাকায় আগাখান, সিলেটে হাবিবুর, কুমিল্লায় হাসেম আ’লীগের প্রার্থী
এবারও হজে যেতে পারছেন না বাংলাদেশিরা
বিএনপি ক্ষমতা ফিরে পেতে ষড়যন্ত্র করছে : কাদের
বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক দেনা ৬ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে
ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা এক সপ্তাহ
১২ দিনেও খুনি শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ বাতিলসহ ৫ দফা দাবিতে ছাত্র জোটের সমাবেশ
জিয়াই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম নায়ক, বললেন মির্জা ফখরুল
বিরোধীদের তোপের মুখে আসামের মুখ্যমন্ত্রী
মুমূর্ষু মাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে এসে ফি বেশি নেয়ার প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন
ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে চার শিশুর ভূমিকার জন্য সংবর্ধনা

রবিবার, ১৩ জুন ২০২১ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৩১ রজব ১৪৪২

আদমজী ইপিজেডে

শ্রমিক-আনসার, পুলিশ সংঘর্ষ : আহত ২০

প্রতিনিধি, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডে শ্রমিক-আনসার, পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছে। বকেয়ার দাবিতে গতকাল সকাল ৭টা থেকে আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আদমজী ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার চাকরিচ্যূত শ্রমিকরা ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে অবস্থান নিলে আনসার ও পুলিশ তাদের সরে যেতে বললে বাগবিত-ার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, আদমজী ইপিজেডের কুনতুং অ্যাপারেলস লি. (ফ্যাশন সিটি) নামক পোশাক কারখানাটি প্রথমে গত বছরের সেপ্টেম্বরে লে-অফ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১-এর ৩১ জানুয়ারি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয় প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষ থেকে। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। মালিক পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় পাওনা পরিশোধের আশ^াস দেয়া হলেও অদ্যাবধি তা পরিশোধ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার পর থেকে পাওনা আদায়ের জন্য বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করেও কোন ফল পাচ্ছে না শ্রমিকরা। কারখানার শ্রমিকদের গতকাল বকেয়া পরিশোধের পূর্ব নির্ধার্রিত তারিখ ছিল। সে অনুযায়ী শ্রমিকরা বকেয়া বেতন নেয়ার জন্য সকাল ৭টায় আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে ডেমরা-আদমজী-নারায়ণগঞ্জ সড়কে জড়ো হতে থাকে। এ সময় ইপিজেডে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তারা শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পরে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কে আগুন জ¦ালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে দুই দফায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের জন্য আন্দোলনরত শ্রমিকদের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের কথা মেনে না নিয়ে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও আনসারদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকরা ইট-পাটকেল ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা টিয়ারশেল ও গুলি নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়। এরপর সকাল ১১টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, শ্রমিকরা জানিয়েছে, মালিকপক্ষ তাদের বারবার সময় দিয়েও পাওনা পরিশোধ করছে না। শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মো. মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে এবং ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশও গুলি ছোড়ে এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধে মালিকপক্ষ কিছুই জানায়নি। এ বিষয়ে বেপজার জিএম আহসান কবির জানান, কারখানা বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ। তবে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে কোন সময় বা তারিখ নির্ধারণ হয়নি।