নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৫৩

নাইজেরিয়ার জামফারা রাজ্যে কথিত বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে করে উত্তরাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড চালায়। আল জাজিরা

খবরে বলা হয়েছে, অস্ত্রধারীরা জুরমি জেলার কাদাওয়া, কাউয়াতা, মাদুবাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে তাণ্ডব চালায়। তারা ডাকাত দলের সদস্য বলে ধারণা করছে প্রশাসন। তারা সংখ্যায়ও অনেকে ছিল।

ফরাসি বার্তাসংস্থা এফপি জানিয়েছে, দলটি স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি জমিতে থাকা কৃষকদেরও গুলি করে হত্যা করে। হামলা থেকে বাঁচতে যারা পালিয়ে যাচ্ছিল তাদের ধাওয়া করতে থাকে।

স্থানীয়রা বলছে, জুরমি জেলার কদাওয়া, কাওয়াটা, মাদুবা, গন্ডা সামু, সোলাভা ও আসসওয়া গ্রামে হামলা চালায় মোটরসাইকেলে করে আসা বন্দুকধারীরা। তারা বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালায়। ডাকাত দলটি কৃষকদের জমিতে গিয়েও তাদের ওপর আক্রমণ করে।

তারা জানিয়েছেন, আরও ৩৯টি মরদেহ উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী শহর দৌরানে দাফন করা হয়েছে।

দৌরানের বাসিন্দা হারুনা আবদুল করিম বলেন, গতকাল আমরা গ্রাম থেকে ২৮টিসহ মোট ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে তাদের এখানে দাফন করেছি।

জামফারা পুলিশের মুখপাত্র বলেছেন, ১৪টি মরদেহ রাজ্যের রাজধানী গুসাউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হামলার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শেষকৃত্যে অংশ নিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মুসা আরজিকা বলেন, নিহতদের শেষকৃত্যে অংশ নেয়া বেশ বিপজ্জনক ছিল। কারণ দস্যুরা পাশের জুরমি বনে অবস্থান নেয়ায় যে কোন সময় আবারও তারা হামলা করতে পারত।

এ ঘটনায় জামফারার গভর্নর বেলো মাতোওয়ালে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি নিজেদের রক্ষা করার জন্য স্থানীয়দের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশন (আইওএম) তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ১০ বছরে সন্ত্রাসীদের হামলায় নাইজেরিয়ার উত্তরপশ্চিম ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৭ লাখ। এর মধ্যে শুধু জামফারা প্রদেশেই বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজারের বেশি।

নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম এবং সেন্ট্রাল নাইজেরিয়ায় সাম্প্রতিক বছরে এ ধরনের হামলার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। স্কুল শিক্ষার্থীদের অপহরণ, গবাদি পশু চুরি, লুটপাট, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে থাকে দুষ্কৃতকারীরা। গত এক দশকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদসদ্যসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ।

সোমবার, ১৪ জুন ২০২১ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২ জিলকদ ১৪৪২

নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৫৩

image

নাইজেরিয়ার জামফারা রাজ্যে কথিত বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে করে উত্তরাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড চালায়। আল জাজিরা

খবরে বলা হয়েছে, অস্ত্রধারীরা জুরমি জেলার কাদাওয়া, কাউয়াতা, মাদুবাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে তাণ্ডব চালায়। তারা ডাকাত দলের সদস্য বলে ধারণা করছে প্রশাসন। তারা সংখ্যায়ও অনেকে ছিল।

ফরাসি বার্তাসংস্থা এফপি জানিয়েছে, দলটি স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি জমিতে থাকা কৃষকদেরও গুলি করে হত্যা করে। হামলা থেকে বাঁচতে যারা পালিয়ে যাচ্ছিল তাদের ধাওয়া করতে থাকে।

স্থানীয়রা বলছে, জুরমি জেলার কদাওয়া, কাওয়াটা, মাদুবা, গন্ডা সামু, সোলাভা ও আসসওয়া গ্রামে হামলা চালায় মোটরসাইকেলে করে আসা বন্দুকধারীরা। তারা বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালায়। ডাকাত দলটি কৃষকদের জমিতে গিয়েও তাদের ওপর আক্রমণ করে।

তারা জানিয়েছেন, আরও ৩৯টি মরদেহ উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী শহর দৌরানে দাফন করা হয়েছে।

দৌরানের বাসিন্দা হারুনা আবদুল করিম বলেন, গতকাল আমরা গ্রাম থেকে ২৮টিসহ মোট ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে তাদের এখানে দাফন করেছি।

জামফারা পুলিশের মুখপাত্র বলেছেন, ১৪টি মরদেহ রাজ্যের রাজধানী গুসাউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হামলার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শেষকৃত্যে অংশ নিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মুসা আরজিকা বলেন, নিহতদের শেষকৃত্যে অংশ নেয়া বেশ বিপজ্জনক ছিল। কারণ দস্যুরা পাশের জুরমি বনে অবস্থান নেয়ায় যে কোন সময় আবারও তারা হামলা করতে পারত।

এ ঘটনায় জামফারার গভর্নর বেলো মাতোওয়ালে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি নিজেদের রক্ষা করার জন্য স্থানীয়দের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশন (আইওএম) তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ১০ বছরে সন্ত্রাসীদের হামলায় নাইজেরিয়ার উত্তরপশ্চিম ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৭ লাখ। এর মধ্যে শুধু জামফারা প্রদেশেই বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজারের বেশি।

নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম এবং সেন্ট্রাল নাইজেরিয়ায় সাম্প্রতিক বছরে এ ধরনের হামলার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। স্কুল শিক্ষার্থীদের অপহরণ, গবাদি পশু চুরি, লুটপাট, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে থাকে দুষ্কৃতকারীরা। গত এক দশকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদসদ্যসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ।