এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে অনিশ্চিত

চলতি বছরে করোনার কারণে আটকে থাকা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে কিনা, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এখনও চেষ্টা হচ্ছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী পরীক্ষা না নিতে পারলে বিকল্প কী মূল্যায়ন হতে পারে, সেসব নিয়েও কাজ চলছে। এসব কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শীঘ্রই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে না, এমনটা ইঙ্গিতও দিলেন মন্ত্রী।

গতকাল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন উপলক্ষে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে জানতে চাইলে দীপু মনি বলেন, ‘গত বছরের শেষে ও এ বছরের শুরুতে সংক্রমণের হার কমিয়ে আনতে পেরেছিলাম। করোনা সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বগামী। যেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫ শতাংশের নিচে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কিন্তু এখন তো অনেক বেশি। সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি আপনারাই বলেন এই পরিস্থিতিতে কীভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যায়।’ তিনি জানান, সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশের বেশি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কী করে বলবো বলেন। আমাদের কারো পক্ষে বলা সম্ভব না। আমরা আশা করেছিলাম, মার্চ মাসে খুলে দেবো। প্রতিদিন সিনারিও চেঞ্জ হচ্ছে। লকডাউন মানলে সংক্রমণ কমবে। আমরা তো মানছি না, আর মানছি না বলেই বার বার খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বলবো পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাবেন না। পরীক্ষা যদি না হয় তাহলে পরের ক্লাসে তো উঠতে হবে। তাই পড়া ছেড়ে দিলে হবে না।’

অভিভাবকেদর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভয়ংকর ভিডিও গেমস রয়েছে, মাদক সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং রয়েছে; বাবা-মায়েরা দেখবেন, এগুলোর সঙ্গে কিশোরা যেন না জড়ায়। বাবা-মা সব সময় দেখেন। এই সময় যেন একটু বেশি গুরুত্ব দেন।’

শিক্ষার্থীদের টিকা প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, ‘মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে। এবার তো উপহারের ৬ লাখ টিকা এসেছে। এর মধ্যে আরও আসছে। জুন থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা পাওয়ার কথা।’

সব শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে আবাসিক শিক্ষার্থীদের দিয়ে তারপর সবাইকে দেবো।’

উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর শুরুর দিকে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়মিত বিরতিতে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ বাড়ানোর খবর জানাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অপেক্ষায়, তারা আশাহত হচ্ছে। জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বে বেশি দিন স্কুল বন্ধ থাকা ১৪টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। করোনার কারণে এবারের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। সাধারণত, ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবং এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার, ১৬ জুন ২০২১ , ২ আষাড় ১৪২৮ ৪ জিলকদ ১৪৪২

এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে অনিশ্চিত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

চলতি বছরে করোনার কারণে আটকে থাকা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে কিনা, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এখনও চেষ্টা হচ্ছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী পরীক্ষা না নিতে পারলে বিকল্প কী মূল্যায়ন হতে পারে, সেসব নিয়েও কাজ চলছে। এসব কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শীঘ্রই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে না, এমনটা ইঙ্গিতও দিলেন মন্ত্রী।

গতকাল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন উপলক্ষে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে জানতে চাইলে দীপু মনি বলেন, ‘গত বছরের শেষে ও এ বছরের শুরুতে সংক্রমণের হার কমিয়ে আনতে পেরেছিলাম। করোনা সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বগামী। যেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫ শতাংশের নিচে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কিন্তু এখন তো অনেক বেশি। সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি আপনারাই বলেন এই পরিস্থিতিতে কীভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যায়।’ তিনি জানান, সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশের বেশি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কী করে বলবো বলেন। আমাদের কারো পক্ষে বলা সম্ভব না। আমরা আশা করেছিলাম, মার্চ মাসে খুলে দেবো। প্রতিদিন সিনারিও চেঞ্জ হচ্ছে। লকডাউন মানলে সংক্রমণ কমবে। আমরা তো মানছি না, আর মানছি না বলেই বার বার খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বলবো পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাবেন না। পরীক্ষা যদি না হয় তাহলে পরের ক্লাসে তো উঠতে হবে। তাই পড়া ছেড়ে দিলে হবে না।’

অভিভাবকেদর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভয়ংকর ভিডিও গেমস রয়েছে, মাদক সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং রয়েছে; বাবা-মায়েরা দেখবেন, এগুলোর সঙ্গে কিশোরা যেন না জড়ায়। বাবা-মা সব সময় দেখেন। এই সময় যেন একটু বেশি গুরুত্ব দেন।’

শিক্ষার্থীদের টিকা প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, ‘মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে। এবার তো উপহারের ৬ লাখ টিকা এসেছে। এর মধ্যে আরও আসছে। জুন থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা পাওয়ার কথা।’

সব শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে আবাসিক শিক্ষার্থীদের দিয়ে তারপর সবাইকে দেবো।’

উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর শুরুর দিকে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়মিত বিরতিতে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ বাড়ানোর খবর জানাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অপেক্ষায়, তারা আশাহত হচ্ছে। জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বে বেশি দিন স্কুল বন্ধ থাকা ১৪টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। করোনার কারণে এবারের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। সাধারণত, ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবং এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।