অপরিকল্পিত খাল খননে ধসে গেছে সড়ক, হুমকিতে শতাধিক বাড়ি

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে অপরিকল্পিতভাবে খাল খননেন ফলে দুইপাড়ে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শতাধিক পরিবার। এছাড়া এক কিলোমিটার জুড়ে একটি পাকা সড়ক বিলিনের পথে রয়েছে। ঠিকাদারের গাফলতির কারনে খাল খননে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। গত মঙ্গলবার সকালে এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

সরেজমিন ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার রমজানপুর এলাকার দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের একমাত্র খালটি চলতি বছরের শুরুর দিকে জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে খনন করেন ঠিকাদার মো. দুলাল বেপারী। খালটি খনন করার সময় স্থানীয়রা তাদের বাড়িঘর রক্ষার্থে বাধা দিলেও ঠিকাদার জানান কোদাল দিয়ে খালটি খনন করা হবে বাড়ি ঘরের কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু ঠিকাদার দুলাল বেপারী কোদালের পরিবর্তে ভেকু দিয়ে খাল খনন করার ফলে পরিকল্পনা মাফিক খাল খনন না করার কারনে পাড় ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে ওই এলাকার শতাধিক বাড়ি ঘর, সরকারি একটি পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। সরকারি পাকা রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে ভুক্তভোগীরা জানায় ঠিকাদার স্থানীয় ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেন বেপারী প্রভাবশালী হওয়ায় কোন কিছু তোয়াক্কা না করে ভেকু দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ভাল খনন করেছে। দুলাল বেপারীর প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়ি-ঘর ঘেঁষে খাল খনন করে গেছে। বাধা দিতে গেলে সরকারি কাজ বলে প্রতিবাদকারীদের থামিয়ে দেন দুলাল বেপারী। তারা আরও জানান ৫০০ ঘণ্টা সময়কাল নিয়ে খাল খনন করার কথা থাকলেও ১০০ ঘণ্টার মধ্যে তড়িঘড়ি করে খাল খননের কাজ শেষ করা হয়। বর্তমানে খালের পাড় ভাঙ্গতে শুরু করেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা, ব্রিজসহ সরকারি কয়েকটি প্রকল্প। বেশ কয়েকটি কবরস্থানে ভেঙ্গে খালে ভেতর চলে গেছে। তাছাড়া যাতায়াতের জন্য সম্প্রতি তৈরি করা পিচঢালা রাস্তার বেশ কিছু অংশ খালের মধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া ঝুকিতে রয়েছে ইসলামী ফাউন্ডেশনের মক্তবখানা,বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোফাজ্জল হোসেন,আবুল কালাম হাওলাদার ফজলু হাওলাদার,ফজলু হাওলাদা,নজরুল শিকদারের বাড়িসহ প্রায় শতাধিক বাড়িঘর। স্থানীয়দের দাবি ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাড়ি ঘরসহ সব ধরনের স্থাপনা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সরকার না নিলে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোফাজ্জল হক ও স্থানীয় আবুল কালাম হাওলাদার বলেন, খাল খননের ফলে আমাদের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ভাঙ্গতে শুরু করেছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। খাল খননে আমাদের যতটা না উপকারে হয়েছে তারচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাই ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

ঠিকাদার দুলাল হোসেন বেপারী বলেন, আমি নিয়ম মেনে খাল খনন করেছি। যতটুকু খালের জায়গা তার চেয়ে অনেক কম কাটা হয়েছে। খালের জায়গা এখনো অনেক আছে দুই পাড়ে। আমি কোন প্রকার অনিয়ম করেনি।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, এ বিষয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ , ৩ আষাড় ১৪২৮ ৫ জিলকদ ১৪৪২

অপরিকল্পিত খাল খননে ধসে গেছে সড়ক, হুমকিতে শতাধিক বাড়ি

আশরাফুল ইসলাম, কালকিনি (মাদারীপুর)

image

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে অপরিকল্পিতভাবে খাল খননেন ফলে দুইপাড়ে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শতাধিক পরিবার। এছাড়া এক কিলোমিটার জুড়ে একটি পাকা সড়ক বিলিনের পথে রয়েছে। ঠিকাদারের গাফলতির কারনে খাল খননে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। গত মঙ্গলবার সকালে এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

সরেজমিন ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার রমজানপুর এলাকার দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের একমাত্র খালটি চলতি বছরের শুরুর দিকে জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে খনন করেন ঠিকাদার মো. দুলাল বেপারী। খালটি খনন করার সময় স্থানীয়রা তাদের বাড়িঘর রক্ষার্থে বাধা দিলেও ঠিকাদার জানান কোদাল দিয়ে খালটি খনন করা হবে বাড়ি ঘরের কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু ঠিকাদার দুলাল বেপারী কোদালের পরিবর্তে ভেকু দিয়ে খাল খনন করার ফলে পরিকল্পনা মাফিক খাল খনন না করার কারনে পাড় ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে ওই এলাকার শতাধিক বাড়ি ঘর, সরকারি একটি পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। সরকারি পাকা রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে ভুক্তভোগীরা জানায় ঠিকাদার স্থানীয় ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেন বেপারী প্রভাবশালী হওয়ায় কোন কিছু তোয়াক্কা না করে ভেকু দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ভাল খনন করেছে। দুলাল বেপারীর প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়ি-ঘর ঘেঁষে খাল খনন করে গেছে। বাধা দিতে গেলে সরকারি কাজ বলে প্রতিবাদকারীদের থামিয়ে দেন দুলাল বেপারী। তারা আরও জানান ৫০০ ঘণ্টা সময়কাল নিয়ে খাল খনন করার কথা থাকলেও ১০০ ঘণ্টার মধ্যে তড়িঘড়ি করে খাল খননের কাজ শেষ করা হয়। বর্তমানে খালের পাড় ভাঙ্গতে শুরু করেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা, ব্রিজসহ সরকারি কয়েকটি প্রকল্প। বেশ কয়েকটি কবরস্থানে ভেঙ্গে খালে ভেতর চলে গেছে। তাছাড়া যাতায়াতের জন্য সম্প্রতি তৈরি করা পিচঢালা রাস্তার বেশ কিছু অংশ খালের মধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া ঝুকিতে রয়েছে ইসলামী ফাউন্ডেশনের মক্তবখানা,বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোফাজ্জল হোসেন,আবুল কালাম হাওলাদার ফজলু হাওলাদার,ফজলু হাওলাদা,নজরুল শিকদারের বাড়িসহ প্রায় শতাধিক বাড়িঘর। স্থানীয়দের দাবি ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাড়ি ঘরসহ সব ধরনের স্থাপনা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সরকার না নিলে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোফাজ্জল হক ও স্থানীয় আবুল কালাম হাওলাদার বলেন, খাল খননের ফলে আমাদের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ভাঙ্গতে শুরু করেছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। খাল খননে আমাদের যতটা না উপকারে হয়েছে তারচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাই ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

ঠিকাদার দুলাল হোসেন বেপারী বলেন, আমি নিয়ম মেনে খাল খনন করেছি। যতটুকু খালের জায়গা তার চেয়ে অনেক কম কাটা হয়েছে। খালের জায়গা এখনো অনেক আছে দুই পাড়ে। আমি কোন প্রকার অনিয়ম করেনি।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, এ বিষয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।